
"লক্ষ্মীপুরে সরকারি কোয়ার্টাতে অবসরের সাত বছর পরও | সময় সংবাদ"
সোহেল হোসেন লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুর রায়পুর উপজেলাতে মৎস্য প্রজনন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অবসরপ্রাপ্ত এক কর্মচারী। একজনের নামের বরাদ্ধ করা বাসায় পরিবার নিয়ে বসবাসসহ সব সুবিধা ভোগ করছেন তিনি।
শুধু বাসাই নয়, কর্মচারী মফিজ মজুমদার মাছের ব্যবসাসহ সব কিছুতে অনিয়ম করে যাচ্ছেন তিনি। কোয়ার্টার সরকারি খাতায় শূন্য দেখানো হলেও ভাড়া না দিয়ে কোয়ার্টারে থাকছেন এই কর্মচারী।
মৎস্য প্রজনন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কোয়ার্টার ঘুরে দেখা গেছে, কেন্দ্রে দশ টি ভবন ও ৪২টি আবাসন কক্ষ রয়েছে। মাত্র দশ কর্মকর্তা-কর্মচারী বসবাস করেন। অন্যগুলো পরিত্যক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে।
গার্ড মফিজ মজুমদার ২০১৫ইং সালে অবসর নেন। নিয়ম রয়েছে অবসরে যাওয়ার পর ছয় মাস কোয়ার্টারে থাকতে পারবেন। কিন্তু তিনি সাত বছর নিয়মবহির্ভূতভাবে অপর গার্ড সুমন হোসেনকে ধোঁকা দিয়ে পরিবার নিয়ে বসবাস ও মাছের খাদ্য এবং ভারতীয় ওষুধের ব্যবসা করে আসছেন। এই ছাড়া তিনি নিজে, স্ত্রী ও ছেলের নামে অবৈধ রসিদ করে হ্যাচারির রেণু পোনা ও ওষুধের রমরমা ব্যবসা করছেন।
অন্যের নামে কোয়ার্টারে থাকা অবসরপ্রাপ্ত গার্ড মফিজ মজুমদার এই বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমার বাড়ি রায়পুর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে ফরিদগঞ্জ উপজেলায়। স্যারকে (ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা) বলে বিশেষ সুবিধায় কোয়ার্টারে সাত বছর ধরে আছি। তবে কোনো ভাড়া কাটা হয় না। তিনি বললেই আমি চলে যাব। বাসায় কোনো ব্যবসা করি না। রায়পুর শহরে মাছের খাদ্যের দোকান দিয়ে ব্যবসা করছি। প্রয়োজনের তাগিদেই তিনজনের নামে প্যাড করা হয়েছে।
কোয়ার্টার বরাদ্দ নেওয়া গার্ড সুমন হোসেন বলেন, হ্যাচারির পেছনেই আমার বাড়ি। আমি নিজ বাড়ি থেকেই অফিস করি। কিন্তু আমার নামে বরাদ্দ নেওয়া কোয়ার্টারে কীভাবে পরিবার নিয়ে থাকেন অবসরপ্রাপ্ত গার্ড মফিজ মজুমদার তা বলতে পারছি না। তিনি এ জন্য প্রতি মাসে বেতনের কর্তনকৃত ৫ হাজার টাকা আমাকে দেন। বাসার যাবতীয় দায়িত্ব তার। আমি বাসা ছেড়ে দিতে আবেদনও করেছি। কিন্তু বড় স্যার কোনো কথাই শুনেন না।
রায়পুর মৎস্য প্রজনন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা লুৎফুর রহমান বলেন, অবসরপ্রাপ্ত গার্ড মফিজ মজুমদার অনেক আগেই কোয়াটারের বাসা ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু সে বাসা ছাড়ছে না। এই বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।
স্থানীয় পৌরসভার বর্তমান কাউন্সিলর জাকির হোসেন নোমান বরেন, নিয়ম রয়েছে সরকারি কর্মচারীরা অবসরে যাওয়ার ছয় মাস পরে বাড়ি চলে যান। কিন্তু ব্যতিক্রম দেখলাম মফিজ মজুমদারের বেলায়। গত সাত বছর কীভাবে অন্যের নামের বরাদ্দকৃত বাসায় বসবাস এবং অবৈধ ব্যবসাও করছেন।
