![]() |
ভাঙ্গায় আন্দোলনকারীরা শনিবার পর্যন্ত অবরোধ স্থগিত করলেন |
নাজমুল হাসান, ফরিদপুর:
ফরিদপুরে সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে ও পুরোনো সীমানা বহালের দাবিতে চলমান মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করেছেন আন্দোলনকারীরা। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসকের আশ্বাস ও দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে জনভোগান্তি এড়াতে এ সিদ্ধান্ত নেন তারা।
আন্দোলনকারী সমন্বয়ক কর্তৃপক্ষ জানায়, আগামী বুধবার থেকে শনিবার পর্যন্ত কোনো অবরোধ থাকবে না। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাউকে হয়রানি করলে তাৎক্ষণিক কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা। একই সঙ্গে আগামী রোববারের মধ্যে তাদের ৫ দফা দাবি মানা না হলে লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দেন নেতারা।
আন্দোলনকারী নেতা পলাশ মিয়া বলেন, “যদি রবিবারের মধ্যে আমাদের পাঁচ দফা দাবি মেনে নেওয়া না হয়, তবে আমরা আবারও লাগাতার আন্দোলনে নামব। আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাউকে হয়রানি করলে তাৎক্ষণিকভাবে নতুন কর্মসূচি দেওয়া হবে।”
সোমবারের সহিংসতার পর মঙ্গলবার সকাল থেকেই ভাঙ্গায় পরিস্থিতি ছিল থমথমে। পুকুরিয়া ও হামিরদী বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন পয়েন্টে আন্দোলনকারীরা অবস্থান নিলেও মহাসড়ক অবরোধ করেননি। ফলে ঢাকা-খুলনা ও ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মোতায়েন আছে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য।
জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান মোল্লা বলেন,“এ দাবিতে ঢাকা-খুলনা এবং ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করা যাবে না। কেউ অবরোধের চেষ্টা করলে আমরা তা প্রতিহত করব।”
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেস আলী বলেন, “শুরু থেকেই ভাঙ্গার আন্দোলনে বিএনপি যুক্ত ছিল। তবে বিষয়টি উচ্চ আদালতে যাওয়ার পর আমরা আন্দোলনে ছিলাম না। কিন্তু ফ্যাসিস্টদের দোসররা ঢুকে গতকাল ভাঙচুর চালিয়ে আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা করেছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।”
গত ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন ৩০০ আসনের সীমানা পুনর্র্নিধারণের গেজেট প্রকাশ করে। এতে ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর-৪ থেকে কেটে ফরিদপুর-২ আসনে যুক্ত করা হয়। এই সিদ্ধান্তের পর থেকেই ভাঙ্গায় অব্যাহত রয়েছে আন্দোলন।
এরই অংশ হিসেবে স্থানীয় জনতা তিন দিনের সকাল-সন্ধ্যা সড়ক ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। দ্বিতীয় দিনে আন্দোলন সহিংস রূপ নেয়। বেলা ১১টার দিকে ভাঙ্গায় ঢাকা-খুলনা ও ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কের অন্তত ছয়টি পয়েন্ট অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরা। এ সময় মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে আগুন জ্বালিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেন তারা। ফলে ঢাকার সঙ্গে ২১ জেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, দুর্ভোগে পড়েন যাত্রী, চালক ও ব্যবসায়ীরা।
পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে উত্তেজিত জনতা ভাঙ্গা থানা, উপজেলা পরিষদ, নির্বাচন অফিসসহ সরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চালান। স্থানীয়দের ভাষ্য, সংঘর্ষে কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে এলাকায় মোতায়েন করা হয় অন্তত ১২শ সদস্য।