ভাঙ্গায় সহিংসতার নেপথ্যে নিক্সনের উসকানি: পুলিশের দাবি
ফরিদপুর প্রতিনিধি:
ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরীর উসকানিমূলক বক্তব্যের কারণেই ভাঙ্গায় সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশ। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ফরিদপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) ও ফোকাল পয়েন্ট (মিডিয়া)।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে প্রকাশিত গেজেটে ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর-৪ থেকে বাদ দিয়ে ফরিদপুর-২ আসনের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করার পর থেকেই এলাকাবাসী আন্দোলনে নামে। এ আন্দোলনকে পুঁজি করে সাবেক এমপি নিক্সন চৌধুরী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একাধিক উসকানিমূলক বক্তব্য ও ভিডিও বার্তা দেন, যা ভাঙ্গার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে তোলে।
গত ৯ সেপ্টেম্বর নিক্সন চৌধুরী ভিডিও বার্তায় অন্তর্র্বতী সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের অবরোধ ও সহিংস আন্দোলনের নির্দেশ দেন বলে পুলিশের দাবি। তার ভিডিও বার্তাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে আন্দোলনকারীরা আরও উত্তেজিত হয়ে ওঠে।
পুলিশ জানায়, এরই ধারাবাহিকতায় ১৫ সেপ্টেম্বর নিক্সনের অনুসারীরা সাধারণ মানুষের আন্দোলনে অনুপ্রবেশ করে ভাঙ্গা থানা, হাইওয়ে থানা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, নির্বাচন অফিস ও কৃষি অফিসে ভাঙচুর চালায়। সরকারি গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে প্রায় ৪০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি করে।
পরে ১৯ সেপ্টেম্বর দেওয়া আরেকটি ভিডিও বার্তায় নিক্সন চৌধুরী পুনরায় সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে অবৈধ উল্লেখ করে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন এবং সাধারণ মানুষকে উসকে দেওয়ার চেষ্টা করেন বলে দাবি করে জেলা পুলিশ।
এ সময় পুলিশ জনগণের প্রতি আহ্বান জানায়, কেউ যেন উসকানিমূলক বক্তব্যে বিভ্রান্ত না হয়ে আইন মেনে চলে এবং শান্তি বজায় রাখতে সহযোগিতা করে। একইসঙ্গে আশ্বস্ত করা হয়, মামলা দিয়ে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে হয়রানি করা হবে না।
এদিকে ভাঙ্গা থানায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় সাবেক এমপি ও যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুজিবুর রহমান ওরফে নিক্সন চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে মামলা হয়েছে। গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আজাদুজ্জামান বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
মামলায় নিক্সনসহ মোট ২৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাত আরও অনেককে আসামি করা হয়েছে। মামলার ২ নম্বর আসামি হামিরদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সর্বদলীয় আন্দোলন সংগ্রাম পরিষদের প্রধান খোকন মিয়া।