১৫ বছরেও বন্ধ হয়নি শাহ আমানত সেতুর টোল আদায়, অবসান চান এলাকাবাসী - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

শনিবার, অক্টোবর ২৫, ২০২৫

১৫ বছরেও বন্ধ হয়নি শাহ আমানত সেতুর টোল আদায়, অবসান চান এলাকাবাসী

১৫ বছরেও বন্ধ হয়নি শাহ আমানত সেতুর টোল আদায়, অবসান চান এলাকাবাসী
১৫ বছরেও বন্ধ হয়নি শাহ আমানত সেতুর টোল আদায়, অবসান চান এলাকাবাসী


মো: নাজমুল হোসেন ইমন, স্টাফ রিপোর্টার:

যানজট, হর্নের শব্দ আর দীর্ঘ গাড়ির সারি—চট্টগ্রামের শাহ আমানত সেতুর টোলপ্লাজায় এমন দৃশ্য এখন নিত্যদিনের। বৃহস্পতিবার বিকেলে সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, টোল দেওয়ার অপেক্ষায় সারি সারি যানবাহন। চালক ও যাত্রীদের মুখে বিরক্তি স্পষ্ট।


২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে কর্ণফুলী নদীর ওপর নির্মিত শাহ আমানত সেতুটি সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। শুরু থেকেই সেখানে টোল আদায় চলছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘ ১৫ বছরেও সেতুর নির্মাণব্যয় উঠে যাওয়ার পরও টোল আদায় বন্ধ হয়নি। বরং যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় টোল প্লাজায় নিয়মিত যানজট সৃষ্টি হচ্ছে, এতে ভোগান্তি বাড়ছে যাত্রী ও চালকদের।


শাহ আমানত সেতু কর্ণফুলী নদীর ওপর নির্মিত তৃতীয় সেতু। ২০০৬ সালের ৮ আগস্ট শুরু হয়ে ৫৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ শেষ হয়। প্রায় ৯৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতু দিয়ে চট্টগ্রাম নগর থেকে জেলার দক্ষিণাঞ্চল, কক্সবাজার ও বান্দরবানগামী যানবাহন চলাচল করে।


সেতু কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, চালুর পর থেকে কয়েক দফায় টোলের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে তিন চাকার গাড়ি ৩০ টাকা, মিনিবাস ৫০ টাকা, প্রাইভেট কার ৭৫ টাকা, মাইক্রোবাস ১০০ টাকা, বড় বাস ১৫৫ টাকা, মিনিট্রাক ১৩০ টাকা, মাঝারি ট্রাক ২০০ টাকা, বড় ট্রাক ৩০০ টাকা এবং লম্বা লরি ৭৫০ টাকা করে টোল পরিশোধ করে।


টোল আদায়কারীদের সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত সেতুটি দিয়ে সবচেয়ে বেশি যানবাহন চলাচল করে—গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৩০ হাজার গাড়ি। অন্যান্য দিনে এই সংখ্যা ২৪ থেকে ২৬ হাজারের মতো। ফলে সপ্তাহের শেষভাগে টোলপ্লাজা এলাকায় তীব্র যানজট দেখা দেয়।


স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, শাহ আমানত সেতুর টোলের কারণে কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ের সাধারণ মানুষ দীর্ঘদিন ধরে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। প্রতিদিন চট্টগ্রাম শহরে যাতায়াতে তাঁদের অতিরিক্ত টাকা খরচ হচ্ছে। তাই তাঁরা সেতুটি দুই পাড়ের মানুষের জন্য সম্পূর্ণ টোলমুক্ত করার দাবি জানাচ্ছেন।


কর্ণফুলী নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক এস. এম. ফোরকান বলেন, “টোল প্রত্যাহারের দাবিতে আমরা ইতিমধ্যে আন্দোলন শুরু করেছি। আগামী ১ থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত গণস্বাক্ষর কর্মসূচি চলবে। এরপরও যদি দাবি পূরণ না হয়, আমরা চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধসহ বড় কর্মসূচি ঘোষণা করব।”


এ বিষয়ে টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠান সেল–ভ্যান জেভি–এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক পল্লব বিশ্বাস বলেন, “সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ, পরিচালন ব্যয় ও সরকারের রাজস্ব আদায়ের অংশ হিসেবেই টোল নেওয়া হয়। এটি মন্ত্রণালয়ের নীতিগত সিদ্ধান্ত, আমাদের এখতিয়ারের বাইরে।”


সড়ক ও জনপথ বিভাগের চট্টগ্রাম উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. নিজাম জানান, “স্থানীয়দের টোল প্রত্যাহারের দাবির কথা আমরা শুনেছি। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।”


Post Top Ad

Responsive Ads Here