সিরামিক শিল্পে রপ্তানি সম্ভাবনা কাজে লাগাতে ব্যবসায়ীদের প্রতি বাণিজ্য উপদেষ্টার আহ্বান

 

সিরামিক শিল্পে রপ্তানি সম্ভাবনা কাজে লাগাতে ব্যবসায়ীদের প্রতি বাণিজ্য উপদেষ্টার আহ্বান

মো: নাজমুল হোসেন ইমন, স্টাফ রিপোর্টার:

রপ্তানি খাতে সিরামিক শিল্পের বিপুল সম্ভাবনা কাজে লাগাতে ব্যবসায়ীদের যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত প্রস্তাব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। 

জাকবৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় অনুষ্ঠিত ‘চতুর্থ সিরামিক এক্সপো বাংলাদেশ-২০২৫’–এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “শুধু অভিযোগ নয়; গ্রহণযোগ্য ও যুক্তিসঙ্গত প্রস্তাব নিয়ে আসুন। সরকার শিল্প খাতের উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। তবে প্রস্তাব হতে হবে ন্যায়সঙ্গত ও মানসম্পন্ন শিল্প-আচরণের ভিত্তিতে।”

তিনি আরও বলেন, দেশের পরিবর্তিত রাজনীতি প্রমাণ করেছে—অতীতের মতো ‘সংযোগ-নির্ভর ব্যবসা’ আর চলবে না। এখন সময় দক্ষতা, যোগ্যতা ও আধুনিক প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করার।

পোশাক খাত মাত্র এক দশকে বড় রপ্তানি খাতে পরিণত হলেও সিরামিক শিল্প তা করতে পারছে না—এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, সিরামিক খাতে এখনও টেকসই খরচ–প্রতিযোগিতা, ডিজাইন নবায়ন, লজিস্টিক দক্ষতা, উৎপাদনশীলতা ও জ্বালানি ব্যবস্থাপনা–সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এসব চিহ্নিত করে বাস্তবসম্মত সমাধান বের করতে হবে।

২৭ নভেম্বর শুরু হওয়া তিনদিনের এই প্রদর্শনী চলবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। মেলার আয়োজক বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমইএ)।

বিসিএমইএ সভাপতি মইনুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত অ্যান্তোনিও আলেসান্দ্রো এবং ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মেলা কমিটির চেয়ারম্যান ও বিসিএমইএ সাধারণ সম্পাদক ইরফান উদ্দীন।

মেলায় বাংলাদেশসহ ২৫টি দেশ থেকে ১৩৫টি প্রতিষ্ঠান ও ৩০০ ব্র্যান্ড অংশ নিচ্ছে। এতে উপস্থিত রয়েছেন প্রায় ৫০০ আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি ও ক্রেতা। এক্সপোতে তিনটি সেমিনার, চাকরি মেলা, বিটুবি ও বিটুসি মিটিং, লাইভ ডেমোনস্ট্রেশন, স্পট অর্ডার, র‍্যাফেল ড্র এবং নতুন পণ্যের উদ্বোধনের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত।

দেশে টেবিলওয়্যার, টাইলস ও স্যানিটারিওয়্যারসহ বিভিন্ন উপখাতে ৭০টির বেশি কারখানা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। স্থানীয় বাজারের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা। গত এক দশকে এ খাতে উৎপাদন ও বিনিয়োগ বেড়েছে প্রায় ১৫০ শতাংশ। বর্তমানে ৫০টির বেশি দেশে বাংলাদেশের সিরামিক পণ্য রপ্তানি হচ্ছে, যার বার্ষিক আয় প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। শিল্পখাতে মোট বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকার বেশি এবং এ খাতে কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের।