চেলা নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলনের মহোৎসব: সিন্ডিকেটের দাপটে বিলীন ঘরবাড়ি ও জমি - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ০৪, ২০২৫

চেলা নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলনের মহোৎসব: সিন্ডিকেটের দাপটে বিলীন ঘরবাড়ি ও জমি

 

চেলা নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলনের মহোৎসব: সিন্ডিকেটের দাপটে বিলীন ঘরবাড়ি ও জমি
চেলা নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলনের মহোৎসব: সিন্ডিকেটের দাপটে বিলীন ঘরবাড়ি ও জমি

দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের চেলা নদীর পাড় কেটে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। ইজারার সুযোগকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে দিন-রাত সমানতালে বালু লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে নদীর আশপাশের বসতবাড়ি, ফসলি জমি ও গ্রামীণ সড়ক ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছে। ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে অর্ধশতাধিক বসতঘর।


স্থানীয়দের অভিযোগ, ইজারাদার ও রাজনৈতিক প্রভাবশালী একটি মহল প্রশাসনের একাংশকে সঙ্গে নিয়ে নীতিমালা লঙ্ঘন করে নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলন করে আসছে। নিয়ম অনুযায়ী নদীর পাড় থেকে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে বালু তোলার কথা থাকলেও তা সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা হচ্ছে। সন্ধ্যা ৬টার পর বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ থাকলেও রাতভর চলছে অবাধ লুটপাট।


চেলা নদীর সারপিনপাড়া, পূর্বচাইরগাঁও, পূর্বসোনাপুর, নাছিমপুর ও রহিমের পাড়া এলাকায় পাড় কাটা এবং মাটি সরে যাওয়ায় শতাধিক বসতভিটা ও কয়েকশ একর ফসলি জমি নদীগর্ভে মিলিয়ে গেছে। কোথাও কোথাও নদীর মাঝখানে স্তূপের মতো চরও জেগে উঠেছে। গ্রামগুলোর শেষ সীমানায় পাকা ঘরবাড়ির অংশ নদীতে ঝুলে আছে, যেকোনো সময় ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।


স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, নদীর পাড় কেটে বালু তোলায় ইজারাদারসহ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি বছরের পর বছর কোটিপতি হয়েছেন। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষ বিচার তো দূরের কথা, উল্টো হামলা ও মামলার ভয়াবহতায় ভুগছেন।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা ও ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির (এনসিপি) এক নেতা বলেন, “একটি অসাধু চক্র প্রশাসনের কিছু ব্যক্তিকে হাত করে বালু উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে। এতে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হচ্ছে, বাড়ছে নদীভাঙন। দ্রুত বালু উত্তোলন বন্ধ না করলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠবে।”


দোয়ারাবাজার উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সামছুল হক নমু বলেন, “চেলা নদী একসময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর ছিল। সনাতন পদ্ধতিতে বেলচা দিয়ে বালু তুললে নদী ও পরিবেশ কোনো ক্ষতির সম্মুখীন হতো না। কিন্তু এখন নিয়মভঙ্গ করে লুটপাট চলছে। আমরা ইজারাদারের বিরোধী নই, তবে নিয়মবহির্ভূত বালু উত্তোলন করে যেনো এলাকার ক্ষতি না হয়—এটাই আমাদের দাবি।”


তিনি আরও জানান, কিছুদিন আগে একটি চক্র চেলা নদীতে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের চেষ্টা করলে এলাকাবাসী তা প্রতিরোধ করে। ড্রেজার জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটে।


এ বিষয়ে দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অরুপ রতন সিংহ বলেন, “সীমান্ত অতিক্রমকারী কয়েকটি নৌকা জব্দ করা হয়েছে। বিজিবিকে নদীপথে টহল জোরদারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”




Post Top Ad

Responsive Ads Here