গ্রামের লোকেরা স্বেচ্ছা শ্রমে নির্মাণ করছেন রাস্তা - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

শিরোনাম

Friday, September 13, 2019

গ্রামের লোকেরা স্বেচ্ছা শ্রমে নির্মাণ করছেন রাস্তা

DESK NEWS-
 সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার অজপাড়া ও অবহেলিত এক গ্রামের নাম চরকাদাই। জনসংখ্যা ও আয়তনের দিক থেকে উপজেলার অন্যতম বৃহত্তম গ্রাম এটি। গ্রামের উত্তরাংশ থেকে দক্ষিণ পূর্বাংশ পর্যন্ত এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৫ কিলোমিটার। চরকাদাই গ্রামটির সিংহভাগ বেলতৈল ইউনিয়ন আর কিছু অংশ পোরজনা ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। ছোট বড় মিলে এই গ্রামে প্রায় ১০ হাজার মানুষের বসবাস। এই গ্রামে ২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি কিন্ডারগার্টেন, একটি হাট/বাজার, একটি দুগ্ধ সমবায় সমিতি, ২টি হাফেজিয়া মাদ্রাসা আর ৫টি বড় মসজিদ রয়েছে। বিল আর নদীবেষ্টিত চরকাদাই গ্রামের নামের সঙ্গে আদর্শ এলাকার তকমা লেগেছে ২ যুগ আগে।

কিন্তু বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ উল্টো। এই আদর্শ গ্রামের নাগরিকরাই মৌলিক সেবা বঞ্চিত মানুষ। আধুনিকতার ছোঁয়া ও নগরায়ণের যুগেও যোগাযোগের জন্য কাচা-পাকা সড়ক নেই এই গ্রামে। ফলে পায়ে হেটে অন্যের বাড়ির উপর দিয়ে গ্রামের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত যেতে হয় মানুষকে। আর এভাবেই বিভিন্ন গ্রামের ২০ হাজার লোক চলাচল করে আসছে। কাদাইবাদলা বাজার থেকে চরকাদাই পূর্বপাড়া বরফ মিল পর্যন্ত দীর্ঘপথ পায়ে হেটে যেতে হচ্ছে। বর্ষার সময় মানুষের যোগাযোগের একমাত্র ভরসা নৌকা। বছরের পর বছর ধরে গ্রামের একপাশ বেয়ে ক্যানেলের মত একটি কাচা সড়ক চলে গেলেও সামান্য বৃষ্টিতেই তা ডুবে যায়। ফলে মানুষের বাড়ীর উপর দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এমন সড়ক যেখানে বাই সাইকেল ও রিকশাও চলতে পারে না। ভারি মালামাল নিয়ে চলাচল অসম্ভব হয়ে পরে। জনদূর্ভোগের যেন শেষ নেই গ্রামের মানুষদের। তবুও এলাকার নামের সঙ্গে আদর্শ তকমা নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের তুষ্টির অন্ত নেই।

সম্প্রতি গ্রামের সিংহভাগ বিদ্যুতের আলো পৌছালেও যোগাযোগের সড়ক না থাকায় বাতির নীচে অন্ধকার থেকেই যাচ্ছে। এছাড়াও এ গ্রামের স্বাস্থ্যসেবা অত্যন্ত করুণ। জরুরী ভিত্তিতে মুমূর্ষ রোগীকে হাসপাতালে নিতে গিয়ে মাঝ পথেই প্রাণ হারাতে হয় অনেককে। কেউ মারা গেলে লাশ নিয়ে কবরস্থান পর্যন্ত পৌছানো অনেক কষ্টকর হয়ে পড়ে। ফলে প্রাকৃতিক বৈরি আবহাওয়ার সাথে যুদ্ধ করে অনেকটা প্রকৃতির উপর নির্ভর করে বেঁচে আছেন এই গ্রামের বাসিন্দারা।

সরেজমিনে গিয়ে গত দেখা যায়, শাহজাদপুর উপজেলা সদর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত চরকাদাই গ্রামটি। ওই গ্রামেরই তরুন সমাজসেবক প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ এর নেতৃত্বে শতাধিক কিশোর, যুবক স্বেচ্ছা শ্রমের ভিত্তিতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ্য ৫ কিলোমিটার কাচা সড়ক সংস্কার করছেন। কারো হাতে টুকরী, কারো হাতে কোদাল, কেউ দাঁড়িয়ে উৎসাহ যোগাচ্ছেন। শ্রমিকের সামনের সাঁরিতে প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। কথা হলো তার সঙ্গে। তিনি হতাশা এবং ক্ষোভ নিয়ে জানান, স্বাধীনতার প্রায় অর্ধ শতাব্দী হলেও আদর্শ গ্রামের আদর্শ চেহারা দিতে নেই কোন উদ্যোগ। গ্রামের মানুষগুলো পায়নি আধুনিকতার ছোঁয়া। পায়ে হেটে চলার রাস্তাও পানির নিচে থাকে বছরের বেশিরভাগ সময়। তাই স্বেচ্ছা শ্রমের মাধ্যমে গ্রামের মানুষদের নিয়ে সড়ক সংস্কারের উদ্দ্যোগ নিয়েছি। ক্ষোভ ঝেরে তিনি আরো জানান, স্বাধীনতার পর থেকেই চির অবহেলিত গ্রামটির ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছেন, মেম্বর, চেয়ারম্যান, এম,পি সবাই। ভোটের সময় ভোট, কাছে গেলেই ফোট।

No comments: