জিসানকে ছাড়াতে দৌড়ঝাঁপ - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

শনিবার, অক্টোবর ০৫, ২০১৯

জিসানকে ছাড়াতে দৌড়ঝাঁপ

সময় সংবাদ ডেস্ক//
দুবাই পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানকে ছাড়াতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে তার সহযোগীরা। এতে সহযোগিতা করছে দুবাইয়ে থাকা আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী টিএনটি নাদিম। এরইমধ্যে সে এরাবিয়ান সিআইডির সাথে যোগাযোগ শুরু করেছে। টিএনটি নাদিম ছাড়াও, হত্যা মামলার আসামী শাকিলসহ বেশ কয়েকজন চেষ্টা করছে জিসানকে পুলিশের হাত থেকে ছাড়াতে।

বুধবার রাতে জিসানকে গ্রেফতারের পর শুক্রবার তা প্রকাশ পায়।
পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো) মহিবুল ইসলাম বলেন, ইন্টারপোলের মাধ্যমে দুবাই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশ যোগাযোগ করছে। তারা জিসানকে গ্রেফতার করার কথা জানিয়েছে।গ্রেফতারের পর দ্রুত তাকে দুবাই থেকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

এদিকে একটি সূত্র জানায়, মধ্যরাতে জিসানকে গ্রেফতারের পর বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দিনভর নাদিম-শাকিলরা বিভিন্ন জায়গায় লবিং শুরু করে। এরাবিয়ান সিআইডির সাথে অনেক আগে থেকেই ভালো সম্পর্ক থাকায় তাদের মাধ্যমেই জিসানকে ছাড়ানোর জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। এজন্য জিসানের ছোটভাই শামীম মালয়েশিয়া থেকে ৩ অক্টোবর বিকেলে দুবাইয়ে পৌঁছে। গত সপ্তাহেই শামীম দুবাই থেকে মালয়েশিয়ায় এসেছিল। ভাইয়ের গ্রেফতারের খবর জানতে পেরে আবার ছুটে গেছে সে।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দুবাইয়ের স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় নাদিম, শামীম ও শাকিল বৈঠক করে। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, জিসানকে ছাড়াতে যত টাকাই দরকার হোক বা যত বড় লবিস্ট নিয়োগের প্রয়োজন হোক না কেন তা করতে নাদিমকে অনুরোধ করে শামীম। জিসানকে যাতে কোনোভাবেই বাংলাদেশ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা না হয় সেজন্য বাংলাদেশেও যোগাযোগ করছে তারা। প্রয়োজনে জার্মানি থেকেও সহায়তা নেওয়ার কথা বলে নাদিম। পুলিশের কাছে যদি হস্তান্তর করতেই হয় তাহলে যেন জিসানকে ভারতে পাঠানো হয়। যুক্তি হিসেবে তাদের দাবি যেহেতু জিসানের বাংলাদেশি কোনো পাসপোর্ট নেই তাই তাকে ভারতেই পাঠানো হোক।

জিসানের কাছে ভারতীয় পাসপোর্ট রয়েছে। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা যায়, ভারতীয় পাসপোর্টে জিসানের নাম আলী আকবর চৌধুরী।

গ্রেফতারের আগে বুধবার (২ অক্টোবর) দুবাইয়ের স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় জিসান জার্মানি থেকে দুবাইয়ে আসে। দুবাই ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরের ৩ নম্বর টার্মিনালের গেট দিয়ে বের হয় জিসান। এ সময় বাইরে দাঁড়ানো ছিল টিএনটি নাদিম ও শাকিল। নিশান পেট্টোল গাড়িতে করে জিসানকে নিয়ে যায় তারা।

জিসানের গাড়ির শো রুমের ম্যানেজার শাকিল। তার বাড়ি ঢাকার ওয়ারীতে। এক সময় ছাত্রলীগ করতো সে। ওয়ারীর রাজিব হত্যা মামলার আসামী শাকিল। নাদিমের কাছের লোক হওয়ায় শাকিল দুবাইয়ে জিসানের গাড়ির শোরুম দেখা শোনার দায়িত্ব পায়।

দুবাইয়ের ডেরাতে জিসানের গাড়ির শোরুম আর বুর্জ খলিফা টাওয়ারে স্বর্ণের দোকান রয়েছে। ডেরাতে মস্কো নামের একটি নাইট ক্লাবও পরিচালনা করে জিসান।

সূত্রটি জানায়, বুধবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যায়ও গাড়ির শোরুমে বসে টিএনটি নাদিম ও জিসান একই সাথে বৈঠক করে। এরপর অনেক রাতে বাসায় ফেরে তারা।

দুবাইয়ের ডেরায় জিসানের অত্যাধুনিক ভিআইপি ফ্ল্যাট রয়েছে। সেই ফ্ল্যাট থেকেই জিসানকে গভীর রাতে দুবাই পুলিশ গ্রেফতার করে। তবে তাকে কোথায় রাখা হয়েছে তা আপাতত কেউ জানে না। জানা যায়, জিসান যখন জার্মানি থেকে ফ্লাইটে এসে দুবাই এয়ারপোর্টে নামে তখন থেকেই ইমিগ্রেশন পুলিশ ফলো করতে থাকে তাকে।

উল্লেখ্য, ২০০৩ সালে মালিবাগের একটি হোটেল দুইজন ডিবি পুলিশ সদস্যকে হত্যার ঘটনায় জিসান আহমেদের নাম আসে। এরপরে সে দেশ ত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যায়।

অপারেশন ক্লিনহার্ট চলাকালে ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হান্নান নিহত হলে জিসান ভারতে পালিয়ে যান। সেখান থেকে পরবর্তী সময়ে দুবাইয়ে পাড়ি জমান। 

Post Top Ad

Responsive Ads Here