ফরিদপুর প্রতিনিধি :
অবৈধভাবে প্রাক্কলন ব্যতীত উচ্চমূল্যে ইকুইপমেন্ট ক্রয়ের মাধ্যমে সরকারের ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের চেষ্টার দায়ে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তিন ডাক্তার ও জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং তার দুই ঠিকাদার ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গত মঙ্গলবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে কমিশন থেকে এ বিষয়ে মামলার অনুমোদন দেয়া হয়। বুধবার দুপুর সাড়ে ১১টায় অনুসন্ধান কর্মকর্তা সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরি বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। দূর্নীতি দমন কমিশন ফরিদপুর কার্যালয়ে দায়েরকৃত মামলা নং - ০৪/১৯।
এতে আসামী করা হয়েছে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সাবেক প্যাথলজিস্ট ও বর্তমানে প্রভাষক ফরিদপুর মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের প্রভাষক ডা. এএইচএম নুরুল ইসলাম, জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনী) ডা. মিনাক্ষী চাকমা, সহযোগী অধ্যাপক (ডেন্টাল) ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডা. গণপাতি বিশ্বাস, জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুন্সী সাজ্জাদ, মুন্সী সাজ্জাদের দুই ভাই মেসার্স আহমেদ এন্টারপ্রাইজের মালিক মুন্সী ফররুখ হোসাইন এবং মেসার্স অনিক ট্রেডার্সের আবদুল্লাহ আল মামুন।
পরে সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরি মামলাটি নিয়ে ফরিদপুর জেলা জজ আদলতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল মান্নান জোয়ারদারের কাছে যান।
অনুসন্ধান প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১০ কোটি টাকার চিকিৎসার সরঞ্জামাদি ও মালামাল সরবরাহ করে মেসার্স অনিক ট্রেডার্স। ২০১৪ মোতাবেক কার্যাদেশ অনুযায়ী মেসার্স অনিক ট্রেডার্স ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর ১০ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি ও মালামাল সরবরাহ করে। যা বাজার মূল্যের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। অন্যদিকে প্রয়োজন না থাকা সত্তে¡ও ওই যন্ত্রপাতি ক্রয় করা হয়েছে। বিল দাখিল করা হলেও আদালতের হস্তক্ষেপে তা আটকে যায়।
ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজের যন্ত্রপাতি ক্রয় নিয়ে মিডিয়ায় বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশের পর আলোচিত উচ্চ আদালত থেকে চলতি বছরের ২০ আগস্ট অনুসন্ধান করার জন্য দুদককে নির্দেশনা দেয়া হয়। নির্দেশনা পাওয়ার পরপরই ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে জনসম্মুখ থেকে রোগীকে আড়াল রাখার জন্য যে পর্দা দরকার-আলোচিত সাড়ে ৩৭ লাখ টাকার সেই পর্দাসহ ১৬৬ চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনাকাটায় দুর্নীতির রহস্য উন্মোচনে মাঠে নামে দুর্নীতি বিরোধী সংস্থাটি। অভিযোগ অনুসন্ধানে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে সরোজমিনে ফরিদপুর যায় দুদকের বিশেষ টিম।
দুদকের উপ-পরিচালক শামছুল আলমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি টিম অভিযোগুলো অনুসন্ধান করছে। টিমের অপর সদস্যরা হলেন- দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. সহিদুর রহমান ও ফেরদৌস রহমান।
No comments:
Post a Comment