দেশের মানুষ দানব হয়ে যাচ্ছে, তাদের ফেরাতে হবে: রাষ্ট্রপতি - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

রবিবার, ডিসেম্বর ০১, ২০১৯

দেশের মানুষ দানব হয়ে যাচ্ছে, তাদের ফেরাতে হবে: রাষ্ট্রপতি



সময় সংবাদ ডেস্ক//
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, কচু ছাড়া সব কিছুতেই ফরমালিন, নির্ভেজাল খাবার দুঃস্প্রাপ্য হয়ে গেছে। খাদ্য ভেজালের কারণে ক্যান্সারসহ জটিল রোগ হচ্ছে। দেশের মানুষই দানব হয়ে যাচ্ছে। এ পথ থেকে তাদের ফেরাতে হবে। নইলে জাতি হিসেবে আমরা পঙ্গু হয়ে যাবো। শুধু পকেট মারলেই গণপিটুনি হয়, এ ধরনের মানুষকেও গণপিটুনি দিতে হবে।

রবিবার দুপুরে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) পঞ্চম সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠে এ সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

রাষ্ট্রপতি বলেন, একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দক্ষ প্রকৌশলী সৃষ্টির কোন বিকল্প নেই। বিশ্বে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যে দেশ যত বেশি উন্নত, সে দেশ তত বেশি সমৃদ্ধি অর্জন করেছে। আমাদের বিপুল মানব সম্পদ থাকা সত্ত্বেও কারিগরী ও প্রযুক্তিগত শিক্ষা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় অর্জিত না হওয়ায় আমরা আশানুরূপভাবে এগোতে পারিনি। বর্তমানে সরকার কারিগরি ও প্রযুক্তিগত শিক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে। তাই বিশ্ববিদ্যালগুলোকে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যাওয়ার জন্য র্দীঘমেয়াদী পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। বিদ্যমান সুবিধা সমূহের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুণাগত উচ্চশিক্ষা প্রদানে ব্রতী হবে বলে আমার বিশ্বাস।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি বলেন, সার্টিফিকেট দেওয়া এবং শিক্ষার প্রসারই শেষ কথা নয়। অমাাদের প্রয়োজন যুগোপযোগী শিক্ষা। বর্তমানে প্রতিনিয়ত যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তিত হচ্ছে। কাজেই আমাদেরও বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। বাস্তবভিত্তিক এবং প্রায়োগিক শিক্ষার উপর জোর দিতে হবে। গুণাগত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার সঙ্গে ল্যাবরেটরির ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি গবেষণা ও হাতে-কলমে শিক্ষার মাধ্যমে প্রকৃত শিক্ষা অর্জিত হয়। এজন্য গবেষণা ও ল্যাবরেটরি কর্মের ওপর অধিক মনোনিবেশ করা জরুরি।

নিত্য নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে মাথায় রেখে ন্যানো টেকনোলোজি, রোবোটিক্স, ব্লক চেইন ম্যানেজমেন্ট, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মতো বিষয়গুলোকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। এই ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলে উদ্যোগী হবেন বলে আমার বিশ্বাস। প্রযুক্তি উন্নয়নের বাহন। তাই বলে প্রযুক্তির উদ্ভাবনই যথেষ্ট নয়। প্রযুক্তি উদ্ভাবনে সকলকে মনোনিবেশ করতে হবে। অন্যের অনুকরণ নয় বরং আমাদেরকে যাতে অন্যরা অনুকরণ করতে পারে সে লক্ষ্যে উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে।

গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য বলেন, আমি তোমাদের গুরুজন হিসেবে বলতে চাই, উচ্চশিক্ষা শেষে শুধু একটা ভালো চাকরি পাওয়াই জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য হতে পারে না। শিক্ষার উদ্দেশ্য হচ্ছে নিজে শিক্ষিত হওয়া ও অন্যকে শিক্ষিত করা এবং বৃহৎ মানবতার কল্যাণ করা। তাই ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে মানবসত্তা দিয়ে দেশকে আলোকিত করবে, বিশ্বকেও সে আলোর আভায় রাঙিয়ে তুলবে।

এর আগে, দুপুর আড়াইটায় সমাবর্তন শোভাযাত্রা সহকারে রাষ্ট্রপতি সমাবর্তনের অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করেন। সেখানে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও পবিত্র ধর্মগ্রন্থসমূহ থেকে পাঠের পর রাষ্ট্রপতি সমাবর্তন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এরপরে ডিগ্রি উপস্থাপন ও প্রদান পর্ব, রাষ্ট্রপতি কর্তৃক পিএইচডি ডিগ্রি প্রাপ্তদের সনদপত্র প্রদান, বিশেষ অতিথির বক্তব্য, সমাবর্তন বক্তার বক্তব্য, সমাবর্তন স্মারক প্রদান ও রাষ্ট্রপতির ভাষণ প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রফিকুল আলম সেখ। এবারের সমাবর্তন বক্তা ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াটেক এডভান্সড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. সাইফুর রহমান। এ সময় আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ছাদেকুল আরেফিন মাতিন উপস্থিত ছিলেন।

পঞ্চম সমাবর্তনে অংশ নিতে ২ হাজার ৫৮৬ জন গ্র্যাজুয়েট নিবন্ধন করেন। এর মধ্যে ২ হাজার ৫১৬ জন স্নাতক ডিগ্রিধারী এবং ৭০ জন পিএইচডি গবেষকসহ স্নাতকোত্তর সমাপ্ত করা ইঞ্জিনিয়ার।

Post Top Ad

Responsive Ads Here