কানসাটে গাড়ল পালনে স্ববলম্বী মাসুদ রানা - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

মঙ্গলবার, ফেব্রুয়ারী ১১, ২০২০

কানসাটে গাড়ল পালনে স্ববলম্বী মাসুদ রানা


চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি:
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার উপজেলার কানসাট ইউনিয়নের শিবনারায়নপুর গ্রামের বাসিন্দা মো.মাসুদ রানা। ৩১ বছর বয়সেই তিনি এখন আদর্শ উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিত লাভ করেছেন। 

জানাগেছে,মো.মাসুদ রানা মার্কেটিং বিভাগ হতে বিবিএ ও এমবিএ সম্পন্ন করেন। এর পর নিজ বাড়ীর পাশে একটি উন্নত জাতের গাড়ল খামার গড়ে তুলেন। প্রথমে ৪৪ টি গাড়ল দিয়ে খামার শুরু করলেও এখন তার খামারে রয়েছে প্রায় শতাধীক গাড়ল। প্রতিনিয়তই তার খামারে বাড়ছে গাড়লের সঙ্খ্যা। গাড়লের মাংস ও চামড়ার ব্যাপক চাহিদা থাকায় খরচের চাইতে অধিকদামে বিক্রি করতে পারেন তার খামারে পালিত গাড়ল।

উদ্যোক্তা মো.মাসুদ রানা জানান,মার্কেটিং বিভাগ হতে বিবিএ ও এমবিএ সম্পন্ন করার পর চাকুরির জন্য বেশ কিছু দফতরে যোগাযোগ করেন। এরপরেও চাকুরি না হওয়ায় নিজেই গাড়ল খামার করার পরিকল্পনা করেন। তিনি স্থানীয় প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ে যোগাযোগ করে গাড়ল পালনের সিদ্ধান্ত নেন। 

তিনি জানান,গাড়ল পালনে তেমন খরচ হয়না। সঠিক নিয়মে পরিচর্যা ও দেখা শোনা করলেই বড় হয়। খামারের আশপাশে ব্যাপক চারণভূমি থাকায় সারাদিন বাইরের খাবারেই বড় হয়। এ ছাড়া গাড়লগুলো শৃঙ্খলাবদ্ধ হওয়ায় তাদের লালন পালনে তেমন বেগ পেতে হয়না। একেকটি গাড়লে ১৪ মাসে দুটি করে বাচ্চা দেয়। বাচ্চা ও বড় গাড়ল বিক্রি করে যে টাকা আয় হয় তা দিয়ে চলে খামার খরচ ও দুই কর্মচারীর বেতন। ওই সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মাসে মাসুদ রানার জমা হয় প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা।

তার জমানো টাকা দিয়ে শুরু করেছেন মধুমতি বিজনেস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড নামে একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্টান। সেখানে তিনি ব্যবস্থাপনা পরিচাল হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

সেখানে উৎপাদিত হয়,তেল,আটা,খাতা,টিশু ব্যাগ,বিশুদ্ধ পানি,ব্যাটারীর পানিসহ বিভিন্ন মসলার কারখানা। এ ছাড়াও তার রয়েছে মধুমতি হাট.কম নামে আরও একটি অনলাইন বাজার। যা চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় প্রথম। নিজেই গড়ে তুলেছেন বৃহত্ত আকারের ছাপাখানা। ওই সব প্রতিষ্টানে কাজ করছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার প্রায় সাড়ে ৪শ যুবক ও যুবতি। সীমান্তবর্তী এ জেলায় তার এমন কর্মকান্ডকে সাধুবাদ জানিয়েছে স্থানীয়রা। আবার তাকে তরুন প্রজন্মের আইকন হিসেবে দেখছে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

মধুমতি বিজনেস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের ম্যানেজার আবদুল মতিন জানান,ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ রানার সার্বিক সহযোগিতায় এবং সাড়ে ৪শ কর্মচারীর অক্লান্ত পরিশ্রমে তার এমন সফলতা। তিনি আরও জানান,মালিক এবং সকল কর্মচারী সবাই অত্যন্ত আন্তরিকতায় কাজ করছি।

এমন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার কারন জানতে চাইলে মো.মাসুদ রানা জানান,ধৈর্য,ইচ্ছে শক্তি সফলতার মূল কারন। সকল কাজ আমি পরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়ন করি।

সম্প্রতি তার গাড়ল খামার ও ফ্যাক্টরি পরির্দন করেছেন জাপানিজ জুজু ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানীর প্রতিনিধি ইয়ে চাংচিং, ইয়েন গুয়োজো ও মো.আসাদ। তারা মো.মাসুদ রানাকে তরুন সমাজের আয়কন হিসেবে উল্লেখ করে তার প্রতিষ্টানে বিনিয়োগ করার আশ্বাস দেন। 

গাড়ল পালন সম্পর্কে জানতে চাইলে শিবগঞ্জ উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা:রনজিৎ চন্দ্র সিংহ বলেন,গাড়ল পালন খুবই একটি লাভজনক পেশা। এখানে প্রচুর পরিমানে চরণভূমি থাকায় মাঠ হতেই খাবার পাওয়া যায়। একটু যতœ নিয়ে খামার তৈরি করলে অনেকেই লাভবান হবে। এছাড়া মাঠ পর্যায়ের কর্মী এবং আমি নিজেই খামারে গিয়ে স্বাস্থ্য পরিক্ষাসহ সঠিক পরামর্শ দিয়ে থাকি।

Post Top Ad

Responsive Ads Here