অনলাইন ডেস্ক:
রাজনীতিতে যোগ দিয়েই অতি কমসময়ে আলোচিত হন এহসানুল হক মিলন। হেলিকপ্টারে চড়ে নকল প্রতিরোধ করতে গিয়ে তিনি সমালোচিত হয়েছিলেন , পরে দুর্নীতির মামলার ভার সইতে না পেরে দেশ ছাড়েন।
চার বারের এমপি হিসেবে তিনি প্রত্যাশা করেছিলেন তিনি পাচ্ছেন ধানের শীষের মনোনয়ন। কিন্তু তাকে বঞ্চিত করে মালয়েশিয়া বিএনপির ধনকুবের এক নেতা মোশারফ হোসেনকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি , যাতে হতবাক বিএনপির নেতাকর্মীরা।
মনোনয়ন ঘোষণার পর বিএনপি কার্যালয় ভাংচুরে যারা ছিলেন তাদের অধিকাংশই এহসানুল হক মিলনের অনুসারী। অন্যদিকে মোশারফকে মনোনয়ন দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে মালয়েশিয়া বিএনপির নেতাকর্মীরাও। কিন্তু তাদের কাছে এ বিষয়টি ছিল ওপেন সিক্রেট। বিএনপির নেতৃত্বের এতটা অধঃপতন হতে পারে তা বুঝতে পেরে নেতাকর্মীরাই এ সংগঠনটিকে অভিশপ্ত বলে আক্ষেপ করছেন।
কে এই মোশারফ হোসেনঃ
প্রায় ত্রিশ বছর আগে চাঁদপুর থেকে শ্রমিক হিসেবে মালয়েশিয়া পাড়ি দিয়েছিলেন মোশারফ হোসেন। ২০০৮ সালে আরাফাত রহমান কোকো মালয়েশিয়া পালিয়ে গেলে তার সন্তানদের ফুটফরমায়েশ খাটার মাধ্যমে ঘনিষ্ঠ হন মোশারফ। কোকোর দুই মেয়ে জাহিয়া রহমান ও জাফিয়া রহমানকে স্কুলে আনা নেয়ার কাজ করা ছাড়াও কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমানের কেনাকাটায় সহযোগী হতেন তিনি। এভাবে ক্রমে শর্মিলা ও মোশারফের সম্পর্ক অনৈতিক সম্পর্কে পরিণত হয়। কোকোর মালিকানাধীন একটি মার্কেটসহ যাবতীয় আর্থিক নিয়ন্ত্রণ চলে যায় শর্মিলা ও মোশারফের কাছে। যার দরুণ প্রথমবারের মত কোনো প্রবাসীকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য মনোনীত করে দলের গঠনতন্ত্রও ভঙ্গ করে বিএনপি।
সূত্র জানায়, পরকিয়া প্রেমে মত্ত কোকোর স্ত্রী কোকোকে দাফনের পরদিনই মালয়েশিয়া ফিরে যায়। আর্থিক কারণে লন্ডন যাওয়া ছাড়া মালয়েশিয়াতেই স্থায়ী ভাবে থাকে। এনিয়ে খালেদা জিয়া বিরাগভাজন হলেও পারিবারিক সম্মানের কথা ভেবে উচ্চবাচ্চ করেননি। আবার মালয়েশিয়া বিএনপির একাংশের মতে শর্মিলা ও মোশারফের অনৈতিক সম্পর্কের অসংখ্য ভিডিওচিত্র ধারণ করে রাখা হয়েছে। তাদের মতে শর্মিলা মালয়েশিয়া থাকতে না চাইলেও মোশারফ ব্ল্যাকমেইল করে তাকে থাকতে বাধ্য করছে। এই ব্ল্যাকমেইলের কারণেই মোশারফকে মনোনয়ন দিতে বাধ্য হয়েছে তারেক রহমান। তবে আরেকটি সূত্রের মতে, শর্মিলার সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করবে এই অঙ্গিকারের বদলে মোশারফকে সংসদ সদস্য প্রার্থী হওয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, সম্প্রতি মোশারফের নাম চূড়ান্ত ঘোষণার পর থেকে সকল মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বার বার উঠে আসছে শর্মীলার নাম। যাকে কেউ চেনে না, যার সাথে এলাকার কোনো সম্পর্ক নেই, যার দেশে রাজনীতি করার কোনো অভিজ্ঞতা নেই, তেমন অর্ধশিক্ষিত একজনকে এহসানুল হক মিলনের বিপরীতে কিভাবে মনোনয়ন দেয়া হল তা যেন বিএনপির নেতাকর্মীদের কাছে কল্পনার অতীত।
এহসানুল হক মিলনের স্ত্রী নাজমুন নাহার দুঃখ করে বলেন , আমার স্বামী সবসময় বিএনপিকে নিজের সন্তানের মতো আগলে রেখেছিল আর নিজেদের অনৈতিক অরুচিকর কাজের স্বার্থে তারা আমার স্বামীর দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডকে অবমূল্যায়ন করলো। তিনি প্রশ্ন করেন ,যদি চারিত্রিক দৃঢ়তা ও নৈতিকতা না থাকে তাহলে তাদের নেতৃত্ব দেশকে কি দিতে পারবে? এদের কাছে কি দেশ নিরাপদ?
সুত্র:ভোরের পাতা
No comments:
Post a Comment