ফরিদপুরে এখনও করোনা ভাইরাস হয়নি শনাক্ত, বাজার অস্থির - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

বৃহস্পতিবার, মার্চ ১৯, ২০২০

ফরিদপুরে এখনও করোনা ভাইরাস হয়নি শনাক্ত, বাজার অস্থির

সঞ্জিব দাস, ফরিদপুর থেকে :

ফরিদপুর জেলায় এখনও কোন করোনা ভাইরাস রোগি হয়নি শনাক্ত তারপরও বাজার ও হাটে ঘাটে চলছে জোর আলোচনা। বাজার গুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ্য করা গেছে অতিরিক্ত নিত্য পন্য কেনার জন্য। বৃহস্পতিবার হোম কোয়ারেন্টাইনের আইন লংঘন করায় দুজনকে জরিমানা করেছে  চরভদ্রাসন উপজেলা প্রশাসন।    

এর ভিতর ফরিদপুরে বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টাইনে ৪২ জনকে রাখা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে ২৩ জনকে। তবে তাদের শরীরে কোন করোনা ভাইরাস পাওয়া যায়নি। এরই ভিতর জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ সিভিল সার্জন অফিসে একটি কন্টোল রুম খুলেছে এ বিষয়ে। সেখান থেকে মনিটরিং করা হচ্ছে করোনা ভাইরাস বিষয়ে সব তথ্য।

এদিকে গত দুদিন ধরে ফরিদপুর জেলা শহরসহ সকল বাজার গুলোতে অতিরিক্ত নিত্য ভোজ্য পন্য কেনার হিরিক লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যা রীতিমতো হুমড়ি খেয়ে পড়ার মতো। তবে এক সাথে এতো পন্য কেনার কোন কেনার দরকার নেই বলে প্রশাসন থেকে বলা হলেও তারা শুনছেন না। জেলা প্রশাসন থেকে টিসিবি এর মাধ্যমে নিত্য ভোজ্য পন্য বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে।  

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শহরের তিতুমীর মার্কেটে গিয়ে দেখা যায় যে যার মতো পারছে অতিরিক্ত চাল, ডাল, তেল, চিনিসহ বিভিন্ন পন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এসময় প্রতিটি দোকান আগের যে কোন সময়ের থেকে ভীড়ে ঢাসা ছিলো। দোকান গুলোতে দুপুরে অভিযান চালালেও প্রতিটি পন্য বেশি দামে বিক্রি লক্ষ্য করা গেছে সন্ধ্যায়।

বাজারে এই বিষয়ে কয়েকজন ক্রেতার সাথে কথা হলে তারা বলেন ভয়ে আমরা বেশি বেশি করে জিনিষ কিনছি। কখন কি হয় সেই কারনে এতো বেশি বাজার করা। ফরিদপুরে এখনও করোনা শনাক্ত হয়নি বললেও তারা সেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা যেতে রাজি নয়। তারা বলেন গুজব উঠেছে বেশি বেশি করে পন্য কিনে রাখার জন্য তাই কিনছি।

এরই মধ্যে ফরিদপুরে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে চার হাজার ০৩ জন বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের নিজ উদ্যোগে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা থাকলেও তারা সেই নির্দেশনা মানছেন না। করোনা ভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা নিয়েও তারা বাহিরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। গত ১ মার্চ হতে ১৮ মার্চ পর্যন্ত এরা বিদেশ থেকে দেশে এসেছেন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় বিদেশে থেকে ১২৮ জন ফরিদপুরে এসেছে। হোম কোয়ারেন্টাইনে ৪২ জনের মধ্যে ৩০ জন ফরিদপুর সদরের, ০১জন আলফাডাঙ্গার এবং ১১ জন চরভদ্রাসনে তাদের বাড়ি। তবে এদেও মধ্যে করোনা ভাইরাস আছে এটা শনাক্ত হয়নি। তবে বেশিরভাগই ভারত থেকে দেশে এসেছেন। বিদেশ ফেরত লোকদের খুঁজে খুঁজে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখার কথা বলছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের সকল কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে এরই মধ্যে। পুলিশসহ সকল কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করেছে নিজ নিজ দপ্তর।

ফরিদপুরের ডেপুটি  সিভিল সার্জন  মো. খালেদুর রহমান মিয়া বলেন, বর্তমানে ফরিদপুরে ৪২জনকে হোম কোরাইনটাইন করা হয়েছে। এছাড়া তিন জনের মেয়াদ শেখ হওয়ার পর তাদের মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে গঠিত ইউনিয়ন কমিটি বৃস্পতিবার থেকে কাজ শুরু করেছে। আশা করা যাচ্ছে এ ব্যাপারে আগামী দুই এক দিনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবে। তিনি বলেন আমরা এখনও নিরাপদ এবং ভালো আছি।

এদিকে হোক কোয়ারেনটাইনের বিধিমালা লংঘন করায় চরভদ্রাসন উপজেলায় বিদেশ ফেরত দুই ব্যক্তিকে ১১ হাজার টাকা জরিমানা করে তাদের পুনরায় হোম করেনটাইনে পাটানো হয়েছে। এরা হলেন উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়নের গাজীরটেক গ্রামের শেখ মুন্নাফ (৪৪) ও ওই একই ইউনিয়নের চরসর্বান্দিয়া গ্রামের বাবুল খান (৩৫)। এর মধ্যে শেখ মুন্নাফকে ১০ হাজার এবং বাবুল খানকে এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বৃহস্পতিবার নিজ কার্যালয়ে এ আদালতের নেতৃত্ব দেন নির্বাহী হাকিম ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেসমিন সুলতানা।

এদিকে করোনা ভাইরাস বিষয়ে সতর্ক করে ফরিদপুরে গত বুধবার রাত থেকে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শুরু হয়েছে মাইকিং।

করোনা ভাইরাস বিষয়ে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, আমরা করোনা প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায়  স্থানীয় জন প্রতিনিধি, ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, ওয়ার্ড মেম্বার, স্বাস্থ্য বিভাগ সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ নিয়ে এই কার্যক্রমে শামিল রয়েছে। সকলকে সাথে নিয়ে কাজ করে চলছি। এখনও ফরিদপুরে সার্বিক পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি আরো বলেন সকলকে তাঁর নিজ নিজ অবস্থানে থেকে আরো বেশি বেশি সর্তক হতে হবে। এদিকে জেলা প্রশাসন জেলা জুরে মাইকিং এবং লিফলেট বিতরণ করছে জনগনের মাঝে সচেতনতা বিষয়ে।


Post Top Ad

Responsive Ads Here