সময় সংবাদ ডেস্ক//
নিজের চোখে সুন্দর এই পৃথিবীকে দেখার আনন্দ যে কি, বিষয়টি যারা অন্ধ তারা তা খুব ভালো করেই বোঝেন। অন্ধ মানুষ কখনোই জীবনের সব সুখ উপভোগ করতে পারেন না। এক প্রকার বোজা হয়েই রয়ে যায় সবার মধ্যে।
তবে আমাদের আজকের প্রতিবেদনটি সাজানো হয়েছে এমন একজন নারীকে নিয়ে, যে অন্ধ না হয়েও অন্ধের অভিনয় করেছেন জীবনের অর্ধেকটা সময়। ঘটনাটি সত্যি অবাক করাক মতো।
এক বা দুই বছর নয়, অন্ধ না হয়েও অন্ধ সেজে এই নারী পার করে দিয়েছেন জীবনের ২৮টি বছর। এতগুলো বছর তার পরিবার বা সমাজের চোখে ধুলো দিয়ে সে অন্ধের অভিনয় করে গেছেন। আর এই বিষয়টি তার চারপাশের কেউ একবারের জন্যও বুঝতে পারেনি। অবশেষে তার অন্ধ সেজে থাকার কারণ জেনে তাজ্জব বনে গেছেন সবাই।
স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদ শহরে বাসিন্দা এই নারীর নাম কারমেন জিমেনেজ। ২৮ বছর আগে তিনি হঠাৎ করেই একদিন সবাইকে বলতে শুরু করেন যে, তার চোখে মারাত্মক আঘাত লেগেছে এবং তিনি কিছুই দেখতে পাচ্ছেন না।
চোখে আঘাতের চিহ্ন ফুটিয়ে তুলতে কারমেন মেকাপের সাহায্য নেন। তিনি চোখে এমনভাবে মেকআপ করেন যে সবাই সেটাকে আঘাতের চিহ্ন হিসেবেই ধরে নেয়। অন্ধ হওয়ার এই অভিনয় যখন তিনি শুরু করেন তখন তিনি ছিলেন ২৯ বছরের যুবতী। এখন তার বয়স সাতান্ন বছর। মাঝখানে কেটে গেছে অনেকদিন। এই পুরোটা সময় তিনি সমানভাবে অন্ধের অভিনয় করে গেছেন।
চলতি মাসেই কারমেন নিজে থেকেই সবাইকে জানিয়েছেন যে, তিনি অন্ধ নন। এতদিন অন্ধ সেজে অভিনয় করেছেন। এ কথা শোনার পর সবচেয়ে বেশি অবাক হয়েছেন তার পরিবারের লোকেরা।
অন্ধ না হয়েও কেন এই অভিনয়? স্থানীয় দৈনিক হে নোটিশিয়ার এই প্রশ্নের জবাবে কারমেন জানিয়েছেন, তিনি মানুষের সঙ্গে মিশতে খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। বিশেষ করে কারো সঙ্গে দেখা হলে তিনি ‘হ্যালো’ বলতে প্রচণ্ড বিরক্তবোধ করেন। নিজের এই অপছন্দের কাজগুলো থেকে বিরত থাকার জন্য তিনি অন্ধ সেজে ছিলেন।
তবে এতদিন পরে আসল সত্যটা জেনে কারমেনের পরিবার খুশি হলেও কারমেন মোটেও স্বস্তিতে নেই। কারণ অন্ধ না হয়েও তিনি প্রকৃত অন্ধদের জন্য রাষ্ট্র যেসব সুবিধা দেয় সেগুলো ভোগ করেছেন। ফলে স্পেনের আইন অনুযায়ী তিনি সাজা ও জরিমানার সম্মুখীন হতে পারেন।