এমপি নিক্সন মহোদয়ের ছড়িয়ে পড়া বক্তব্যই শতভাগ সত্য- ইউএনও জেসমিন সুলতানা - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

বুধবার, অক্টোবর ১৪, ২০২০

এমপি নিক্সন মহোদয়ের ছড়িয়ে পড়া বক্তব্যই শতভাগ সত্য- ইউএনও জেসমিন সুলতানা



 
ফরিদপুর প্রতিনিধি :
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরীর (নিক্সন) যে কল রেকর্ডটি শোনা যাচ্ছে তা শতভাগ সত্য বলে জানিয়েছেন চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন সুলতানা। এদিকে সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরী তা অস্বীকার করে সংবাদ সম্মেলন করে ছিলেন এর আগে। তিনি সেখানে বলে ছিলেন এটি সুপার এডিট করা আমার বক্তব্য নয়। 


সংবাদ সম্মেলনে নিক্সন চৌধুরী দাবি করে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমার যে বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়েছে তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমার কথাগুলো সুপার এডিট করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। প্রকাশিত কল রেকর্ডের ভয়েস আমার না।


এ সময় তিনি প্রশাসনের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, পারলে প্রশাসন এটি প্রমাণ করুক যে প্রকাশিত কল রেকর্ডটি সুপার এডিট করা না। তিনি এ সময় বলেন ইইউএনও নিজেও  স্বীকার করবেন যে এই কথা আমি তাকে বলিনি। তার সাথে এমন কোনো কথাই আমার হয়নি। ভালো এবং সুন্দর ভাবে তার সাথে কথা হয়েছে বলেও তিনি তখন দাবি করেন। তিনি আরো বলেন ইউএনও এর সাথে আপনার কথা বলে জেনে নিন যে কথা গুলো আমি এরকম ভাবে বলেছি কিনা।
যদিও কিছুক্ষণ পরেই এ প্রসঙ্গে জানতে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন সুলতানার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনারা এমপি নিক্সন মহোদয়ের যে কল রেকর্ডটি শুনছেন তা শতভাগ সত্য। এমনকি প্রকাশিত কল রেকর্ডের দাঁড়ি-কমা পর্যন্ত সঠিক। এখানে এডিট করার কোনো প্রশ্নই নেই। আপনারা যা শুনেছেন তিনি ওভাবেই আমার সঙ্গে কথা বলেছেন।


এ সময় ইউএনও আরও বলেন, তিনি যখন (এমপি মহোদয়) এসিল্যান্ডকে হুমকি দেন, তখন আমি তার নিরাপত্তার স্বার্থে বিষয়টি তাৎক্ষণিক লিখিত ভাবে ডিসি স্যারকে অবগত করি এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজের অডিও ক্লিপটি প্রেরণ করি।


ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) অতুল সরকারকে হুমকি দিয়েছিলেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মুজিবর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন। চরভদ্রাসনের ইউএনওর ফোনে ফোন করে গালিগালাজ করেছেন ভাঙা উপজেলার এসিল্যান্ডকে। চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত শনিবার (১০ অক্টোবর) এই দুটি ঘটনা ঘটে। 


এই দুটি ঘটনার ভিডিও এবং অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে। বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের ফরিদপুর জেলা শাখা গত রোববার সভা করে এ ঘটনার প্রতিকার চেয়েছে। জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এই ঘটনায় নিন্দা প্রস্তাব আনা হয়। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।


এদিকে মঙ্গলবার সকালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী (নিক্সন) আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা। প্রয়োজনে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হবেও বলে জানান তিনি।

এর আগে সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে নিক্সন চৌধুরীর আশোভন আচরণের বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দেওয়া হয়। 


উল্লেখ্য ফরিদপুর চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনে একতরফাভাবে ভোটারবিহীন ভাবে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। যদিও পরবর্তীতে দিনের ভোটের লাইনের সাথে কয়েকটি কেন্দ্রের রেজাল্টের কোন মিল চোখে পড়েনি। 

কেন্দ্রগুলোতে বিজয়ী প্রার্থীর এজেন্ডরা কক্ষের ভেতর ভোট দিয়ে বাক্স ভরে দেন বলে অভিযোগ করেছেন ঘোড়া মার্কা প্রতীকের প্রার্থী কে এম ওবায়দুল বারী দিপু। তিনি এই নির্বাচনের রেজাল্ট বয়কট করেন। 


নির্বাচনে পরাজিত অপর প্রার্থী ফয়সাল হাসান শাওন বলেন, নির্বাচনে অর্ধেকের বেশি ভোট কেন্দ্রে আমাদের দেয়া এজেন্ট বের করে দেয়া হয়। এরপর ইচ্ছা মতো তাদের এজেন্ট ও কক্ষের ভিতর থাকা দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তারা মিলে ভোট দিয়ে বাক্স ভরে দেন। তিনি বলেন এসব ভোট কেন্দ্রে ভীতি ছড়িয়ে ভোটারদের আসতে বাধা দেয়া হয়। এ সব কেন্দ্রে সর্বোচ্চ দুই থেকে তিনশত ভোটার ভোট দিতে সুযোগ পেলেও তাদের সকলের সামনে ভোট দিয়ে কেন্দ্র থেকে বের হয়ে আসেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।

Post Top Ad

Responsive Ads Here