ওবায়দুল ইসলাম রবি, রাজশাহী প্রতিনিধিঃ
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে আইরন খাতুনের অসুস্থ পিতাকে বাচাঁতে ৬০ হাজার টাকা দিলেন জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল। রামেক ডাক্তারের তথ্য মতে আইসিইউসহ প্রায় ৬০ হাজার টাকা মূল্যের ইঞ্জেকশন কিনতে হবে। উপায়ান্তর না দেখে হতাশ হয়ে পড়ে নিঃস্ব এই পরিবার। আইরিনের আবেদন পরিপেক্ষিতে তাৎক্ষণিক তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং চিকিৎসার ভার নিয়েছেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল।
এবিষয়ে আইরিনা খাতুন জানায়, দূর্গাপুর উপজেলার তেরকান্দিয়া কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে অধ্যায়নরত এবং তার ছোট ভাই এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র। গ্রামে বাড়ির সামনে তার বাবার ছোট্ট একটি মুদি দোকানের আয় দিয়ে বাবা আব্দুল মালেক পরিবারের ভরণপোষণ মিটিয়ে দুই ভাইবোনের পাড়াশুনার খরচ চালাচ্ছেন। তাদের আপন বলতে মা-বাবা ছাড়া আর কেউ নেই। পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম অভিভাবক তাদের বাবা আব্দুল মালেক ।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত মায়ের চিকিৎসার জন্য এক সপ্তাহের বেশি সময় পার করেছেন। তার বাবা আব্দুল মালেকের সঙ্গে মাকে বাঁচাতে মেয়ে আইরিনা খাতুন রামেক হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড এবং শহরের অনেক এলাকায় সাহায্যের জন্য ছুঁটা ছঁটি করেছে। কিন্ত তাদের পাশে কেউ সহয়াতার হাত বাড়িয়ে দেয়নি।
ওইসময় চিকিৎসক বলেছেন তার পিতাকে বাচাঁতে একটি ইঞ্জেকশন নিতে বলেছে যার দাম প্রায় ৬০ হাজার টাকা। কিন্তু মায়ের চিকিৎসায় বাবার সব সঞ্চয় শেষ হয়েছে। এছাড়া গ্রামের মানুষের সহায়তায় বাবার চিকিৎসাও চলছিলো। বর্তমান বাবাকে বাঁচাতে ভিক্ষা করা ছাড়া কোন উপায় নেই। পক্ষান্তরে এক সাংবাদিকের পরামর্শে আইরিন জেলা প্রশাসকের নিকট সাহায্যের একটি আবেদন করেছিল। মঙ্গলবার বিকেল ৫.৩০টার সময় জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আইরিনা খাতুন। জরুরি ভিত্তিতেই ৬০ হাজার টাকা দিয়ে সহয়াতা করেন এবং তার বাবার চিকিৎসার আশ্বাসও দিয়েছেন। জেলা প্রশাসকের মহানুভবিতার কারনে চিরকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে আইরিন।
করোনাকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা রয়েছে, বর্তমান সময়ে কোন মানুষ অভুক্ত না থাকে এবং চিকিৎসার অভাবে যেন অকাল মৃত না হয়। পিএম’র নির্দেশনায় জেলা প্রশাসন আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। সকল সেবা মানুষের দৌঁড়গোড়ায় পৌঁছে দিতে তারা সর্বদা প্রস্তুত আছেন প্রতিবেদক জানান, জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল। ওই সময় জেলা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শরিফুল হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) কল্যাণ চৌধুরী, সহকারী কমিশনার (এনডিসি) আব্দুল্লাহ আল রিফাত, পবা উপজেলা ইউএনও শিমুল আকতারসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

