![]() |
| নুরাল পাগল ইস্যুতে মামলা ঘিরে নতুন বিতর্ক: ইউএনও’র কাছে ইমান আকিদা কমিটির অভিযোগ |
রাজবাড়ী প্রতিনিধি:
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে ‘নুরাল পাগল’ দরবারে হামলা, লুটপাট এবং মরদেহ উত্তোলন ও পোড়ানোর ঘটনায় আড়াই মাস পর মামলা দায়েরের পর নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, মামলায় নিরপরাধ ব্যক্তিদের নাম জড়িয়ে চাঁদাবাজি ও হয়রানির অপচেষ্টা হচ্ছে। বেয়াই শহিদুলের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ এনে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাথী দাসের কাছে লিখিত অভিযোগ হস্তান্তর করেছে গোয়ালন্দ ইমান আকিদা রক্ষা কমিটি।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাজবাড়ী আদালতে নুরুল হকের শ্যালিকা শিরিনা (৫২) বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় নাম উল্লেখ করা হয়েছে ৯৬ জন এবং আরও ৫ শতাধিক অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। তদন্তভার দেওয়া হয়েছে পিবিআইকে।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ ইমান আকিদা রক্ষা কমিটির সভাপতি মাওলানা জালালুদ্দিন প্রামাণিক বলেন, “মিথ্যা ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে ইমাম, সাংবাদিক ও আইনজীবীদের নাম জড়িয়ে নুরাপাগলের বেয়াই শহিদুল মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবি করছে।”
এসময় ইউএনও সাথী দাস জানান, “অভিযোগ শুধু আমার কাছেই নয়, থানা ও জেলা প্রশাসকের কাছেও জমা পড়েছে। আইনানুগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ আগস্ট বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান নুরুল হক ওরফে ‘নুরাল পাগল’। তাকে দরবার শরীফের উঁচু স্থানে দাফন করলে ‘তৌহিদি জনতা’ ব্যানারে একটি চক্র কবর নিচু না করার অভিযোগে উত্তেজনা ছড়ায়। পরবর্তীতে ৫ সেপ্টেম্বর হাজারো মানুষ দরবারে হামলা চালিয়ে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ এবং নারীদের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকার ক্ষতি ও এক ভক্তের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় শরীর থেকে মরদেহ উত্তোলন করে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়—যা মানবিকতা ও ইসলামি মূল্যবোধের চরম লঙ্ঘন বলে দাবি করছেন ভক্তরা।
ভুক্তভোগীরা জানাচ্ছেন, নতুন করে করা মামলায় নাম এসেছে সাংবাদিক, আইনজীবী ও ইমামদের—যারা ঘটনাস্থলে উপস্থিতই ছিলেন না। ঢাকার আইনজীবী মকিম মন্ডল বলেন, “আমি ঢাকায় থাকি। গোয়ালন্দে যাইনি। তবুও আমার নাম এসেছে—এটি উদ্দেশ্যমূলক।”
সাভার ক্যান্টনমেন্ট মসজিদের ইমাম মাহমুদুল অভিযোগ করেন, “মামলায় আমার নাম দেখে আমি হতবাক। আমি গোয়ালন্দ যাইনি।”
গোয়ালন্দ প্রেস ক্লাবের সহ সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান আক্কাস বলেন, “আমার নামসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের নাম মামলা এসেছে যা সাংবাদিক সমাজে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। আমরা নিরপেক্ষ তদন্ত চাই।”
রাজবাড়ী জেলা পুলিশ সুপার কামরুল ইসলাম বলেন, “নিরপরাধ কাউকে গ্রেপ্তার করা হবে না। মামলা তদন্তে স্বচ্ছতা বজায় থাকবে।”

