সময় সংবাদ ডেস্কঃ
ছিল না ঘর বাড়ি কোনো কিছুই। তবে হঠাৎই যেন আশার পালে লেগেছে হাওয়া। বঙ্গবন্ধু জন্মশত বার্ষিকীতে পেলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া উপরহার হিসেবে একটি ঘরসহ মাথা গোঁজার ঠাঁই। স্বপ্ন ছিল অনেক কিছুরই কিন্তু সেই স্বপ্নই বা পূরণ হয় ক’জনার।
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছেও আশ্রয়ণ প্রকল্পের উপকারভোগী বৃদ্ধা জাহেরা খাতুন। স্বামী মারা যাওয়ায় ৮৩ বছর বয়সী বৃদ্ধা জাহেরা খাতুন নিজের সংসার নিজেই চালান। আর এজন্য তাকে এখনও করতে হচ্ছে ভারী কাজ। তবুও থেমে নেই অদম্য জীবন যাত্রা।
প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহারের ঘর পাওয়ার পর এবার তার আশা নিজ ঘরে জ্বলবে বিদ্যুতের আলো। আর তাইতো তিনি বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য ত্রাণ হিসেবে পাওয়া ৫টি শাড়ি বিক্রি করে ১ হাজার টাকা ও মাটি কেটে কাজ করে আরো ৩০০ টাকা, ঘরে থাকা কিছু জমানো টাকাসহ মোট ২ হাজার টাকা দেন। টাকা দেয়ার তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও মিলছে না সেই কাঙ্খিত বিদ্যুতের দেখা। শুধু তিনিই নন একই আশ্রয়ণ প্রকল্পের আরো ১৬টি পরিবারের একই দশা।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের এসব উপকারভোগীদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার নাম করে নেয়া হয়েছে অতিরিক্ত টাকা। কিন্তু মাসের পর মাস পেরিয়ে গেলেও অন্ধকারেই থাকতে হচ্ছে তাদেরকে। এমনই অভিযোগ করেছেন প্রকল্পের বাসিন্দারা।
তাদের অভিযোগ, প্রায় তিন মাস আগে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১৭টি পরিবার থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা করে নিয়েছেন স্থানীয় খোকন মিয়া নামে এক ব্যক্তি। কিন্তু টাকা দেওয়ার প্রায় তিন মাস হয়ে গেলেও বিদ্যুৎ সংযোগ পাচ্ছেন না তারা।
বৃদ্ধা জাহেরা খাতুন আক্ষেপ করে বলেন, ‘ঈদে পাওয়া নিজের শাড়িটাও বিক্রি করে দিলাম বিদ্যুতের আশায়। তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত বিদ্যুতের আলো দেখিনি। তবে কবে পাব বা আদৌ পাব কি না তাও জানি না।’
একই প্রকল্পের বাসিন্দা চন্দ্রবান বিবি বলেন, কাকাইলছেও আশ্রয়ণ প্রকল্পে আমরা ১৭টি পরিবার বসবাস করছি। বিদ্যুতের জন্য কারো কাছ থেকে ২ হাজার আবার কারো কাছ থেকে ১ হাজার ৭০০ করে টাকা নেয়া হয়েছে। কিন্ত এখনও বিদ্যুৎ পাইনি।
কাইয়ুম মিয়া জানান, আমাদের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে মিটার ও একটি করে বোর্ড বসানো বাবত এ টাকা দেয়া হয়েছে। টাকা দেয়ার পর থেকেই খোকন মিয়াকে আর পাওয়া যাচ্ছে না।
অভিযুক্ত খোকন মিয়া বলেন, আমি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির একজন ইলেক্ট্রশিয়ান। মিটার ফিসহ সকল খরচ মিলিয়ে পরিবারগুলোর কাছ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। সময় হলে তারা বিদ্যুৎ সংযোগ পাবেন। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে হলে কিছু নিয়ম কানুন মানতে হয় তাই কিছুটা দেরি হচ্ছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোহাম্মদ আলী বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারা বলেছেন, জামানত হিসেবে ৫০০ টাকা করে নেয়া হয়। এর থেকে বেশি টাকা নেয়ার কথা না। তবে তারা বিষয়টি দেখছেন বলেও জানান তিনি।
আজমিরীগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির সহকারী জেনারেল ম্যানেজার মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার কাজ চলমান রয়েছে। তবে এখানো জামানতের কোন টাকা আমরা পাইনি।’
No comments:
Post a Comment