ভাত একটু বেশি রান্না করায় অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

বৃহস্পতিবার, জুলাই ২৯, ২০২১

ভাত একটু বেশি রান্না করায় অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা


 

সময় সংবাদ ডেস্কঃ


পাবনায় রান্নার সময় ভাতের চাল কিছুটা বেশি নেয়ায় মাধবী বসাক শিমা নামে এক নারীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় স্বামী সুব্রত হালদারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি মাবোলা হালদার পাড়ার ঝাড়ু হালদারের ছেলে।

মঙ্গলবার (২৭) সন্ধ্যায় পাবনার ভাঙ্গুড়া পৌর সদরের ২নং ওয়ার্ডের মাবোলা হালদার পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।


নিহত মাধবী বসাক শিমা জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার পশ্চিম বালিঘাটা গ্রামের পরিমল বসাকের মেয়ে। তিনি চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।


স্থানীয়রা জানায়, তিন বছর আগে মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে সুব্রতর সঙ্গে মাধবীর প্রেম ও পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। দরিদ্র বলে পরিমল হালদার মেয়ের বিয়েতে কোনো যৌতুক দিতে পারেননি। এ কারণে বিয়ের কিছু দিন পর থেকেই স্বামী সুব্রত হালদার, শ্বশুর ঝাড়ু হালদার, শাশুড়ি অলোকা ও ননদ অষ্টমী তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিলেন। মাঝে মাঝেই ওই গৃহবধূর চিৎকার শুনতে পেতেন প্রতিবেশীরা। প্রতিবেশীরা ওই বাড়িতে গেলে তারা বাড়ির গেট বন্ধ করে রাখতেন।



মঙ্গলবার সকালে ওই গৃহবধূর শাশুড়ি বাড়ির পাশে বেড়াতে যান। মাধবী নিজেই হাড়ি থেকে চাল নিয়ে ভাত রান্না করেন। এর কিছুক্ষণ পর শাশুড়ি অলোকা বাড়িতে এসে জানতে পারেন গৃহবধূ মাধবী চাল কিছু বেশি নিয়ে রান্না করেছেন। এতে ক্ষুব্ধ শাশুড়ি মাধবীর সকালের খাবার বন্ধ করে দেন। পরে স্বামী সুব্রত বাড়ি আসলে পরিবারের লোকজন তাকে বিষয়টি জানান। তাদের কথা শুনে সুব্রত তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এরপর ওই গৃহবধূ পাশের এক বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন।


ঘটনাটি স্থানীয় কাউন্সিলর শহিদুল ইসলামের কানে যায়। তিনি মঙ্গলবার বিকেলে মাধবীকে পাশের বাড়ি থেকে নিয়ে স্বামীর বাড়ি দিয়ে আসেন। এ বিষয়ে আর কিছু না বলতে তিনি ওই পরিবারের সবাইকে অনুরোধ করেন। কিন্তু কাউন্সিলর চলে যাওয়ার পরপরই শুরু হয় নতুন করে নির্যাতন। পরিবারের সবাই মিলে মাধবীকে লাঠিপেটা করেন। একপর্যায়ে মাধবী অচেতন হয়ে যান। অবস্থা বেগতিক দেখে তারা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।


ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক বলেন, মাধবী ওরফে সীমা নামের এক গৃহবধূকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে এসেছিল তার স্বজনরা। তবে তার গলায় তেমন কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি।


শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দাবি, মাধবী আত্মহত্যা করেছেন।


এ বিষয়ে নিহত মাধবীর চাচি সান্তনা রানী বলেন, আমাদের মেয়েকে তারা খুন করেছেন। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।


নিহত মাধবীর বাবা পরিমল বসাক কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, যৌতুকের দাবিতে মেয়ের স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকেরা আমার মেয়ের ওপর নির্যাতন চালাতেন। আমরা টাকা দিতে না পারায় তারা তাকে হত্যা করেছেন। 


ভাঙ্গুড়া থানার ওসি ফয়সাল বিন আহসান বুধবার সন্ধ্যায় জানান, হাসপাতাল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের সদস্যদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।


তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় গৃহবধূর বাবা বাদী হয়ে বুধবার থানায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত চারজনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ মাধবীর স্বামীকে গ্রেফতার করেছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

Post Top Ad

Responsive Ads Here