জেলা প্রতিনিধিঃ
হেফাজতে ইসলাম নেতা মামুনুল হককে খুলনায় বিস্ফোরক মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ১০ অক্টোবর চার্জ গঠনের দিন ধার্য করেছে আদালত।
রোববার বেলা ১১টার দিকে খুলনার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারক এসএম আশিকুর রহমান চার্জ গঠনের দিন ধার্য করেন। পরে তাকে খুলনা জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট কেএম ইকবাল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে সকালে খুলনা জেলা কারাগার হতে মামুনুল হককে আদালতে আনা হয়। এ সময় আদালত পাড়ায় কঠোর নিরাপত্তা বেস্টনি গড়ে তোলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
এর আগে শুক্রবার বিকেল ৪টায় মামুনুল হককে পুলিশি হেফাজতে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে খুলনা কারাগারে আনা হয়।
আদালতে দাখিলকৃত মামলার চার্জশিট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বিকেল সোয়া ৪টার দিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাতিল, গ্রেফতারকৃত যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি ও সরকারবিরোধী স্লোগান দিয়ে জামায়েতে ইসলামী, বিএনপি ও হেফাজতে ইসলামীসহ ১২ দলের প্রায় ৩ হাজার মানুষ মিছিল বের করে। মিছিলটি নগরীর ডাকবাংলা ও ময়লাপোতা মোড় হয়ে শিববাড়ি মোড়ে গণজাগরণ মঞ্চের দিকে যাচ্ছিল।
ফুজি কালার ল্যাবের সামনে পৌঁছালে পুলিশি বাঁধার সম্মুখীন হয়। এ সময় অংশগ্রহণকারীরা মিছিলের মধ্য থেকে পুলিশের ওপর ককটেল বোমা ও গুলি নিক্ষেপ করতে থাকে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে। নিক্ষিপ্ত বোমার আঘাতে কিছু পুলিশ সদস্য আহত হন। সে সময় তাদের চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে সেখান থেকে ২৬ জনকে গ্রেফতার করে থানায় আনা হয়।
এ ব্যাপারে সোনাডাঙ্গা থানায় খুলনা মহানগর ইমাম পরিষদের কয়েকজন নেতা ও হেফাজত ইসলামীর নেতা মাওলানা মামুনুল হকসহ ২৬ জনের নামে ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে সোনাডাঙ্গা থানার এসআই আলমগীর কবীর বাদী মামলা দায়ের করেন, যার নম্বর ২৩।
চার্জশিটে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, উক্ত ঘটনার আগের দিন ময়লাপোতা মসজিদ মোড়ে ওয়াজ করার সময় হাফেজ মামুনুল হকসহ অন্যান্যরা সংগঠিত হয়ে পুলিশের ওপর হামলা ও গণজাগরণ মঞ্চ ভাঙচুরসহ পুড়িয়ে দেওয়ার জন্য অনুসারীদের নির্দেশ প্রদান করেন।
২০১৫ সালের ২১ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. মোক্তার হোসেন মোট ১০৭ জনের নামে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
এর আগে গত ১১ মে রাতে মামুনুল হককে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কাশিমপুর কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধ নারী ও শিশু নির্যাতন, পুলিশি কাজে বাধা, ভাঙচুর ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমসহ ২৭টি মামলা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৮ এপ্রিল দুপুর ১২টার দিকে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসা থেকে হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগ।

