![]() |
কলাপাড়ায় সার সরবরাহে দেখা দিয়েছে চরম সঙ্কট -shomoy sangbad |
দু:শ্চিন্তা-দিশেহারা প্রান্তিক কৃষক ও ডিলাররা
কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি:
কলাপাড়ায় চলতি আমন মৌসুমে কৃষকদের নিত্য প্রয়োজনীয় সার সরবরাহে দেখা দিয়েছে চরম সঙ্কট, দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগী ডিলার ও প্রান্তিক চাষীরা। ২৩ আগষ্ট বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাট্রিজ কর্পোরেশন বিসিআইসি ভবন থেকে স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে পটুয়াখালীর লাউকাঠিতে একমাত্র সার গুদাম স্থানান্তরের সিন্ধান্ত গ্রহন করে। ফলে গত ২৪ অক্টোবর সর্বশেষ সার সরবরাহ শেষে এ গুদামের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। আর এতেই বিপাকে পড়েছে উপজেলা পর্যায়ের সার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠনাসহ প্রান্তিক কৃষকরা।
নির্ভরযোগ্য তষ্য সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার এ্যাসেসিয়েশন বাফার পটুয়াখালী গুদাম থেকে সার সরবরাহ বন্ধের পর বরিশাল কেডিসি সার গুদাম থেকে এ এলাকায় সরবরাহে চরম প্রতিবন্ধকতা দেখা দিয়েছে। ভুক্তভোগী ডিলারদের অভিযোগ, দিনের পর দিন ঘাটে ট্রাক কিংবা ট্রলার রেখেও সার পাচ্ছেন না তারা। ফলে প্রতিদিন লোকশান গুনতে হচ্ছে হাজার হাজার টাকা। চলতি সেপ্টম্বর মাসে কলাপাড়া উপজেলায় সরকারীভাবে ১২’শ ২৪ মেট্রিক টন সার পাওয়ার কথা থাকলেও বুধবার ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডিলাররা সার বরাদ্দ পেয়েছেন মাত্র ৪০ টন। এছাড়া উপজেলা পর্যায়ে প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত সার পৌছাতে বস্তা প্রতি গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া ৩৫ টাকা। এমনকি গত কয়েকমাস মাস ধরে বরাদ্দ পেতে টাকা জমা দেয়ার পরেও সঠিক সময়ে সার পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ করেন অনেক বিসিআইসি ডিলাররা।
লতাচাপলী ইউপির আছালত খাঁ গ্রামের কৃষক মাসুম বিল্লাহ এ প্রতিনিধিকে জানায়, তিনি প্রায় নয় একর জমিতে আমনের চাষ করেছেন। কিন্তু গত একমাস ধরে তিনি সার কিনতে পারছেন না। ফলে তিনি দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
লতাচাপলী ইউপির বিসিআইসি ডিলার রুহুল আমিন এ প্রতিবেদককে জানান, গত ২ সেপ্টেম্বর টাকা জমা দিলেও বরিশাল থেকে আমরা এখনও সার পাইনি। কারণ হিসেবে তিনি জানান পটুয়াখালী থেকে সার গোডাউন বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলেই আমরা এমন বিপদে পরেছি।
বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার এ্যাসেসিয়োশন কলাপাড়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও পৌর শহরের বিসিআইসি ডিলার খাঁন ট্রেডার্সের সত্তাধিকারী মো: জাকির হোসেন এ প্রতিনিধিকে বলেন, পটুয়াখালীর গুদাম ঘর বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমাদের সার সরবরাহ পেতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এমনকি দিনের পর দিন বরিশাল ঘাটে এসে থাকতে হচ্ছে আমাদের। প্রতিদিন দুই হাজার টাকারও বেশি লোকশান দিয়েও সরবরাহ প্রতিবন্ধকতায় আমরা সার পাচ্ছি না। ফলে প্রান্তিক চাষিসহ সাব ডিলারদের মাঝেও এর প্রভাব পরেছে।
পটুয়াখালী শাখার বাফার ব্যবস্থাপক (বানিজ্যিক) মশিউর ইসলাম গনমাধ্যমকে বলেন, লাউকাঠি গুদাম ঘরটির ছাদ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় গুদাম ক্লোজ করা হয়েছে। তবে উর্ধতন মহলে সিন্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে নতুন করে গুদাম ঘর স্থাপন করা হবে। সেই লক্ষে জমি অধিগ্রহনের প্রক্রিয়া চলমান আছে। কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ আর এম সাইফুল্লাহ জানান, সেপ্টেম্বর মাসে কলাপাড়ায় ১২’শ ২৪ মেট্রিকটন সার পাওয়ার কথা থকালেও আমরা এখনও তা পাইনি। এ বিষয়ে আমরা উর্ধতন কতৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। দ্রুত সার সরবরাহে তাদের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বরিশাল বাফার গুদাম ইনচার্জ আবদুর রহিম খন্দকার সাংবাদিকদের জানায়, পটুয়াখালী গুদাম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বরিশাল থেকে সার সরবরাহ করা হচ্ছে। বৈরি আবহাওয়ায় লেবার ম্যানেজে আমাদের একটু প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছিলো। তারপরেও সবকিছু ঠিক থাকলে আমরা প্রতিদিন ৫’শ মেট্রিকটন সার সরবরাহ করছি। আশা করছি কলাপাড়ায় প্রতি মাসের সার পৌছে দিতে পারবো। আমরা সেই লক্ষে আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।