পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন বেড়িবাঁধ রক্ষা প্রকল্পের প্রকৌশলী মনিরুল ইসলামের হাত পা ধরেও ফেরাতে না পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন কৃষক দেলোয়ার। |
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পাউবোর প্রকৌশলী এক কৃষকের সাড়ে তিন হাজার তরমুজ গাছ উপড়ে ফেলেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ৬ কৃষকের মাঠ পরিদর্শন করেন ইউএনও ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা।
বুধবার দুপুরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ধুলাসার উপজেলার পশ্চিম চাপলী গ্রামের মাঠ পরিদর্শন করেন তারা। পরিদর্শন শেষে ঘটনার সত্যতা পেয়ে আগামী তিন দিনের মধ্যে ডিসির কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে বলে জানান ইউএনও আবুহাসনাত। শহীদুল হক। তবে পানি উন্নয়ন দফতর বলছে, গাছটি ফেলে দেওয়ায় কোনো ভুল হয়নি।
প্রায় দুই মাস আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বন বিভাগের কর্মকর্তাদের মৌখিক অনুমতি নিয়ে ওই গ্রামের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ঢালে সাড়ে তিন হাজার তরমুজ গাছ রোপণ করেন কৃষক দেলোয়ার হোসেন। কিন্তু গত ১৭ জানুয়ারি হঠাৎ করেই সব তরমুজের চারা উপড়ে ফেলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন বাঁধ রক্ষা প্রকল্পের প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম। দিন শেষে অফিসারের হাত ধরতে না পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন দেলোয়ার। এতে তার প্রায় ৫ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এমআরএম সাইফুল্লাহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। |
কৃষক দেলোয়ার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, "আমি মনির স্যারের হাত-পা ধরে অনেক কেঁদেছি। বললাম, প্রয়োজনে আমার নামে মামলা করবেন। কিন্তু এই ক্ষতি করবেন না। তবুও তিনি আমার কথা শোনেননি। আমি শুরু করলাম। ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিয়ে এই ব্যবসা। আগেও তাদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছি। তারপর ওরা থামেনি। বড় পরাজয় হয়েছে।'
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এমআরএম সাইফুল্লাহ জানান, কৃষক দেলোয়ারের প্রায় সাড়ে তিন হাজার তরমুজ গাছ ছিল। আর এক মাস পর এসব গাছে ফল ধরবে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। আশা করছি, খুব শিগগিরই ডিসির কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
কলাপাড়ার ইউএনও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক জানান, কলাপাড়া উপজেলায় ব্যাপকভাবে তরমুজের চাষ হয়। এটি একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। এতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এই কৃষকের। আমরা তার পক্ষে প্রতিবেদন দাখিল করব। তার ব্যাংক ঋণ মওকুফের সুপারিশও করা হবে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ সময় টাট্টু উন্নয়ন অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফ হোসেন বলেন, বেড়িবাঁধের ওপর কৃষকদের গাছ লাগাতে দেওয়া হচ্ছে না। প্রকৌশলী মনির হোসেন গাছটি ওপরে ছুড়ে মারলে তিনি ঠিক কাজ করেছেন, তিনি ভুল করেননি।
মোঃসাইফুল্লাহ /সময় সংবাদ