
"ফের ডুবছে সিলেট নগর | সময় সংবাদ"
সিলেট প্রতিনিধি
সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। অতিবৃষ্টি ও উজানের ঢলের কারণে বাড়ছে নদ-নদীর পানি। ঢলের পানিতে এরই মধ্যে প্লাবিত হয়েছে বিভিন্ন এলাকা। সুরমা নদী উপচে পানি ঢুকে পড়ায় শহরের বিভিন্ন এলাকার ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেট কার্যালয়ের তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত সুরমা কুশিয়ারা ও সারি নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে পানি বেড়েছে। সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপদসীমার শূন্য দশমিক ৯৩ সেন্টিমিটার ও সিলেট পয়েন্টে পানি বিপদসীমার শূন্য দশমিক ৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার শূন্য দশমিক ৩৩ সেন্টিমিটার ও সারি নদের সারিঘাট পয়েন্টে পানি বিপদসীমার শূন্য দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে, সিলেট বিভাগের বেশিরভাগ স্থানে আগামী কয়েকদিন ভারীবৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চলতি মাসজুড়ে সিলেটে কমবেশি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনার রয়েছে।
সিলেটের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে সর্বোচ্চ ১৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহে কমবেশি বৃষ্টিপাত হবে। তবে ১৯ ও ২০ জুন বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। পরবর্তী দু-তিনদিন বৃষ্টির সম্ভাবনা কম থাকলেও আগামী ২৫ জুন বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, জেলার কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও সদর উপজেলার ৫০০ গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি কার্যালয়ের ভেতরে পানি ঢুকে পড়ায় স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়েছে। এর বাইরে সিলেট নগরের অন্তত ৮ থেকে ১০টি এলাকা পানিতে তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
স্থানীয়রা জানায়, দ্বিতীয় দফায় আবার বন্যা দেখা দেওয়ায় বাসিন্দারা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। অধিকাংশ এলাকায় বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে পড়ছে। রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় অনেকে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সিলেট নগরের তালতলা, জামতলা, সোবহানীঘাট, তেরোরতন, উপশহর, কালীঘাটসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় সুরমার পার উপচে পানি ঢুকে পড়ায় আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এসব এলাকার রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ভোগান্তি পোহাচ্ছেন লোকজন। অনেক ঘরবাড়ি ও দোকানে পানি উঠেছে। কোথাও কোথাও হাঁটুপানি দেখা গেছে। ঘরের ভেতরে পানি ওঠায় অনেকে আত্মীয়ে বাড়ি সরে যাচ্ছেন।
সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আনোয়ার সাদাত জানান, প্রয়োজনীয় স্থানে আশ্রয়কেন্দ্র চালুর জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।
