কন্যা সন্তান জন্ম নেয়ার ৪র্থ স্ত্রীকে তালাক দিয়ে ৫ম বিয়ের পায়তারা - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

শিরোনাম

Friday, January 20, 2023

কন্যা সন্তান জন্ম নেয়ার ৪র্থ স্ত্রীকে তালাক দিয়ে ৫ম বিয়ের পায়তারা

কন্যা সন্তান জন্ম নেয়ার ৪র্থ স্ত্রীকে তালাক দিয়ে ৫ম বিয়ের পায়তারা
কন্যা সন্তান জন্ম নেয়ার ৪র্থ স্ত্রীকে তালাক দিয়ে ৫ম বিয়ের পায়তারা


কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি:


কলাপাড়া পৌর শহরের ৬নং ওয়ার্ডের নতুন বাজার এলাকার মৃত সালাম মাষ্টারের কনিষ্ঠ পুত্র আমিরুল। বিয়ে পাগল আমিরুল নামে এলাকায় এখন বেশ সুপরিচিত তিনি। বারবার বিয়ের পিড়িতে বসে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন এলাকায়। পুত্র সন্তানের আশায় ও পরিবারের কচলাকচলিতেই তাকে বিয়েগুলো কবতে হচ্ছে বলে তিনি অজুহাত দেন। তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, এগুলো সব আমিরুল ও তার পরিবারের ভাওতাবাজি, মূলত: আমিরুল এখন বিয়ে পাগলা হিসেবে পরিনত হয়েছে আর এ সুযোগে তার পরিবার আমিরুলকে বারবার বিয়ে দিয়ে যৌতুকের নামে কামিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।


শুক্রবার সরিজমিনে গিয়ে ও স্থানীয় বিভিন্ন তথ্য সূত্রে জানা যায়, সুখে-শান্তিতে রাখবে মেয়েকে এ আশাতে ধানখালী ইউনিয়নের চর নিশানবাড়িয়া গ্রামের আনোয়ারুল ইসলাম ২০১৪ সালে পারিবারিক ভাবে ধুমধাম করে মেয়ে সাহিদাকে (ছদ্মনাম) বিয়ে দিয়েছিলেন আমিরুলের সাথে। নিশ্চিত করেছিলেন জামাতা আমিরুল ইসলাম ও তার পরিবার। কিন্তু বিয়ের ২ মাস না যেতেই মেয়ের উপর শুরু হয় স্বামী বাড়ির নির্যাতন। শাশুড়ি, ভাসুর এবং স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে বাধ্য হয়ে সংসার জীবনের স্বপ্ন ভেঙ্গে বাবার বাড়িতে ফিরতে হয় সাহিদাকে। আবারো আমিরুলকে বিয়ের পিরিতে বসাতে মরিয়া হয়ে ওঠে তার পরিবার। এবার প্রথম বিয়ে গোপন রেখে দ্বিতীয় বিয়ের জন্য কনে ঠিক করা হয় ধুলাসার ইউনিয়নের চাপলী এলাকার শাহজাহান মুন্সির কণ্যা নিশাকে (ছদ্মনাম)। মুসলিম শরিয়ানুযায়ী পারিবারিকভাবে বিয়েকার্য শেষ হলে কিশোরী এ নববধূকে গৃহে তুলে আনেন আমিরুল। সপ্তাহ না যেতেই ফের দ্বিতীয় স্ত্রীকেও নির্যাতন শুরু করে ওই পরিবারের সদস্যরা। ঠিকমত ভরন-পোষন না দেয়াসহ শীতবস্ত্র পরিধানেও ছিল স্বামীর বাড়ির অনিহা। এমনকি স্বামী-স্ত্রীকে কক্ষের দরজা খুলে ঘুমানোর নির্দেশ দিতেন শাশুড়ি মা। আর মায়ের বাধ্য ছেলে তা অমান্য করতেন না কখনোই। এভাবেই মুখ বুঝে সহ্য করে এক বছর কাটালেও শেষে ধকল কাটিয়ে উঠতে না পেরে বাধ্য হয়ে সংসার ছাড়ের নিশাও। এর পরে আবারও রোমন্টিক বয় আমিরুলের জন্য বধূ খুঁজতে শুরু করে পরিবার। আবারও দ্বিতীয় বিয়ে গোপন রেখে শুরু হয় তৃতীয় পরিকল্পনা। এবার তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে লালুয়া ইউনিয়নের ধনজুপাড়া গ্রামের মোস্তফা তালুকাদারের কণ্যা স্কুল শিক্ষার্থী নাজমাকে (ছদ্মনাম) ঘরে তুলে নেন আমিরুল ও তার পরিবার। ঠিক এখানেও বিয়ের ২০ দিন না যেতেই শুরু হয় পাশবিক নির্যাতন। হতভাগা নজমাাও নির্যাতন সইতে না পেরে বাধ্য হয়ে ফিরে যান বাবার বাড়িতে। তবে বিয়ের ধারাবাহিকতা বন্ধ করেনি আমিরুলের পরিবার। সবশেষে টার্গেট করে দশম শেনীতে পড়ুয়া রিপাকে (ছদ্মনাম)। চতুর্থ বারের মত এই কিশোবীর পরিবারকে মিষ্টি কথার জালে ফাঁসিয়ে তিন বিয়ের কথা গোপন রেখে তাকে বিয়ে করেন আমিরুল। রিপা বালিয়াতলী ইউনিয়নের বাবলাতলা গ্রামের রেজাউল মিয়ার মেয়ে। কিন্তু রিপাকেও ঘরে তুলে ফের শুরু হয় নির্যাতন। দরিদ্র ঘরের মেধাবী কন্যা রিপা মুখ বুজে সইছিলেন নির্যাতন। এরই মাঝে অন্ত:সত্ত¡া হয়ে পড়েন তিনি। আর এতেই বেড়ে যায় নির্যাতনের মাত্রা। সর্বশেষ শর্ত জুড়ে দেয়া হয় রিপাকে। পুত্র সন্তান না হলে ঘর ছাড়াতে হবে তাকে। অপর দিকে ভাগ্য সহায় না থাকায় কণ্যা সন্তানের জন্ম দেয় রিপা। এর পরেই বদলে যায় দৃশ্যপট। ভরন-পোষন বন্ধ করে শুরু হয় অমানবিক নির্যাতন।


No comments: