![]() |
| উখিয়া থানায় ‘ইয়াবাকাণ্ড’: জেলা পুলিশের তদন্ত কমিটি গঠন |
নিজস্ব প্রতিবেদক:
কক্সবাজারের উখিয়া থানায় পুলিশি অভিযানের নামে অর্থ লেনদেন, মাদক কারবারিকে ছেড়ে দেওয়া এবং নিরীহ দোকান কর্মচারিকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ তদন্তে জেলা পুলিশ একটি কমিটি গঠন করেছে। অভিযোগে আরও বলা হয়েছে—জব্দ করা ইয়াবার প্রকৃত সংখ্যা ইচ্ছাকৃতভাবে কম দেখানো হয়েছে। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশের পর জেলায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম হয়।
জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) অলক বিশ্বাস নিশ্চিত করে বলেন, “গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর ঘটনাটিকে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে দ্রুত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিভাগীয় মামলা সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তদন্ত কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) রাকিবুল হাসান জানান, “সিসিটিভি ফুটেজসহ অভিযোগ সংশ্লিষ্ট সব তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। খুব দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।”
গত ৭ ডিসেম্বর দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত ‘কক্সবাজারে ইয়াবাকাণ্ডে জড়িত ৫ পুলিশ’ শিরোনামের প্রতিবেদন প্রকাশের পর ঘটনাটি ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি করে। প্রতিবেদনে বলা হয়—
৩০ নভেম্বর উত্তম কুমার বিশ্বাস নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেও অর্থের বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর দোকান কর্মচারী হারুনুর রশীদকে ৬০০ পিস ইয়াবা দিয়ে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
অভিযুক্ত ৫ পুলিশ সদস্য:এসআই সঞ্জিত কুমার মণ্ডল (বাদী),এসআই ফরহাদ রাব্বী ঈশান,কনস্টেবল লিমন,কনস্টেবল মাহবুব,কনস্টেবল শরীফ।
ছায়া তদন্ত সংশ্লিষ্ট অনানুষ্ঠানিক সূত্র জানায়—এসআই ঈশানের প্ররোচনায় অন্য সদস্যরা সহযোগিতা করেন এবং অবৈধ লেনদেনের ভাগ নেন। একই সূত্রের দাবি, ইয়াবা বিক্রি ও অর্থ ভাগে ঈশানকে সহায়তা করেন কনস্টেবল লিমন এবং অভিযানে অংশ না নেওয়া আরেক পুলিশ সদস্য।
এসআই ঈশান এর আগেও চকরিয়া থানায় ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে প্রত্যাহার হয়ে উখিয়া থানায় এসেছিলেন। উখিয়ায় যোগদানের কিছুদিনের মধ্যেই আচরণগত কারণে তাকে কুতুবদিয়ায় বদলি করা হয়। তবে সাবেক ওসি জিয়াউল হকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে বদলি আদেশ থাকা সত্ত্বেও উখিয়াতেই থেকে যান এবং সেই সময়ই অভিযানে অংশ নিয়ে আলোচিত ইয়াবাকাণ্ড ঘটান বলে অভিযোগ রয়েছে।
তার মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। তবে থানা সূত্র জানায়, আলোচিত অভিযানের পরদিনই তিনি ছুটিতে চলে যান।
বাদী এসআই সঞ্জিত বলেন, “মামলার এজাহারের বাইরে কোনো মন্তব্য করতে পারব না। নিষেধ রয়েছে।”
এর আগেও কক্সবাজারে ইয়াবা সংশ্লিষ্ট ঘটনায় তৎকালীন পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ বদলি হয়েছিলেন—যা নতুন করে আলোচনায় এসেছে।শেষ প্রশ্ন—শাস্তি নাকি শুধু বদলি?
অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে, নাকি আগের মতো কেবল বদলি করেই ঘটনা ‘মিমাংসার’ পথ বেছে নেবে পুলিশ প্রশাসন?

