কোরআন ও হাদিসের আলোকে ইসলামী দাওয়াতের গুরুত্ব - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ০২, ২০২৫

কোরআন ও হাদিসের আলোকে ইসলামী দাওয়াতের গুরুত্ব

কোরআন ও হাদিসের আলোকে ইসলামী দাওয়াতের গুরুত্ব
কোরআন ও হাদিসের আলোকে ইসলামী দাওয়াতের গুরুত্ব


হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী :

ইসলামী দাওয়াত মানবজাতির হেদায়েত, কল্যাণ ও চরিত্র পরিবর্তনের অন্যতম মূল মাধ্যম। মানবতার মুক্তির জন্য আল্লাহ তায়ালা যুগে যুগে অসংখ্য নবী-রাসুল প্রেরণ করেছেন, যারা মানুষের মাঝে গিয়ে মহান স্রষ্টার পরিচয় তুলে ধরে সৎ পথে আহ্বান করেছেন এবং অসৎকাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।


তিনি বলেন, সকল নবীই তাদের উম্মতকে তাওহীদ ও ইবাদতের দিকে ডেকেছেন এবং শিরকসহ সকল পাপকার্য থেকে দূরে থাকার শিক্ষা দিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন— “যারা অনুসরণ করে সেই বার্তাবাহক উম্মি নবীকে, যিনি তাদেরকে সৎকাজের নির্দেশ দেন এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করেন।” (সূরা আরাফ: ১৫৭)


দাওয়াত দেওয়া প্রতিটি মুসলমানের দায়িত্ব:

ইসলামী দাওয়াত শুধু আলেম, ইমাম, খতিব বা কোনো বিশেষ গোষ্ঠীর দায়িত্ব নয়—বরং প্রতিটি মুসলমান তার নিজস্ব আওতাধীন মানুষের প্রতি এই দায়িত্ব পালন করবে। স্ত্রী-সন্তান, শিক্ষার্থী, অধীনস্থ কর্মচারী থেকে শুরু করে সমাজের সদস্যদের নসিহত করা সকলের দায়িত্ব।


তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন— “তোমরা প্রত্যেকেই নেতা, এবং তোমাদের প্রত্যেককেই তার অধীনস্থদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হবে।” (বুখারি)


দাওয়াত শুধু মসজিদ-মাদ্রাসায় সীমাবদ্ধ নয়:

বর্তমান সময়ে অনেকেই মনে করেন দাওয়াত শুধুমাত্র ওয়াজ, মসজিদ, খানকা, সংগঠন বা লেখালেখির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। অথচ ইসলামী দাওয়াতের ক্ষেত্র আরও বিশাল। পীর-মাশায়েখ, আলেম, শিক্ষক, মুআজ্জিন, ওয়ায়েজ, লেখক—সকলেই ইসলামের বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছেন, তবে দাওয়াতের কাজকে অন্যের মাঝে সীমিত ভাবা সঠিক নয়।


হাদিসে এসেছে— “মানুষের সাথে নম্র ব্যবহার কর, রুঢ় আচরণ করো না; সুসংবাদ দাও, ভয় সৃষ্টি করো না।” (বুখারি ও মুসলিম)


ডিজিটাল যুগে দাওয়াত পৌঁছাতে হবে বিশ্বব্যাপী:

তিনি বলেন, বর্তমান ডিজিটাল যুগে অন্য ধর্মাবলম্বীরা তাদের বার্তা প্রচারে যেভাবে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করছে, মুসলমানরা সেই তুলনায় অনেক পিছিয়ে। ইহুদিদের সাড়ে আট লাখের বেশি, খ্রিস্টানদের পাঁচ লাখের বেশি এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের প্রায় চার লাখ ওয়েবসাইট রয়েছে—যেখানে তারা দাওয়াত, প্রচার ও প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে।


এ কারণে মুসলমানদের দাওয়াত শুধুমাত্র মুসলিম সমাজে সীমাবদ্ধ না রেখে বিশ্বব্যাপী অমুসলিম সমাজেও পৌঁছে দিতে হবে।


দাওয়াত গ্রহণ করুক বা না করুক—দাওয়াতদাতারই লাভ:

তিনি বলেন, মানুষ দাওয়াত গ্রহণ করুক বা না করুক, দাওয়াত প্রদানকারীর জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে পুরস্কার রয়েছে। অন্যের ঈমান ও আমল ঠিক করতে সহায়তা করলে আল্লাহ তায়ালা বান্দার নিজের আমলকে ঠিক করে দেন—এমন হাদিস রয়েছে। (মুসলিম)


অন্তিতে তিনি বলেন, “মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে দ্বীনি দাওয়াতের এ গুরুত্বপূর্ণ কাজ আন্তরিকভাবে পালনের তাওফিক দান করুন। আমিন।”


লেখক পরিচিতি:

হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী — বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, লেখক ও কলামিস্ট।

সাবেক ইমাম ও খতিব, কদমতলী মাজার জামে মসজিদ, সিলেট।

প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, জকিগঞ্জ উপজেলা সচেতন নাগরিক ফোরাম, সিলেট।



Post Top Ad

Responsive Ads Here