জাহাঙ্গীল আলম, টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার চরাঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত এলেংজানী নদীতে বর্ষার শুরুতেই ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। প্রতিনিয়ত ভাঙ্গনের ফলে ২০ টি বসতবাড়ী নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া শতাধিক বসতবাড়ীর লোকজন পরিবার পরিজন নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে দিন যাপন করছে। যেকোন সময় তাদের বাড়ীঘর খরস্রোতা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। অসহায় শ্রমজীবি এই পরিবারগুলোকে বাঁচাতে সরকারী কোন উদ্যোগ নেই বলেই ভূক্তভোগীরা জানান।
নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়া পরিবারগুলোর মধ্যে উপজেলার কদিম হামজানী গ্রামের জিয়া (৩৫), রফিকুল (৪০), মুস্তাফিজুর (৫০), সমেশ উদ্দিন (৫৫), ইনছান আলী (৬০), জহির উদ্দিন (৬৫), শহিদুল (৪৫), ফজলুল হক (৪৮), মজনু মিয়া (৫০), আব্দুল মজিদ (৬০), আব্দুর রাজ্জাক (৪৫), আলামিন (৩৫), নুর মোহাম্মদ (৩০), আবু ছাইদ (৫৫), ওয়াজেদ (৭০), আবু হানিফ (৪০) ও হারান মিয়া (৩২) উল্লেখযোগ্য।
এছাড়া ইদ্রিস আলী (৬৫), নরুল ইসলাম (৭০), ক্বারী আব্দুল কদ্দুছ (৫৫), আঃ হাই (৫০), শফিকুল ইসলাম (৫৫), রাজু আহমেদ (২০), আলী হোসেন (৮৫), বেলায়েত (৪৫), বারেক (৪২), রফিকুল (৬০), নাজিম (৫৫), আবুবকর (৭০), এলিম (৩৫), আঃ আজিজ (৬৫), রুহুল আমিন (৫৫), আমিনুল (৩০), মুজাফফর (৭৫), হুমায়ুন (৫৫), শাহালম (৫৫), শাহিন আলম (৩৫), মজিবর (৭০), শাহাদৎ (৪০) ও ইসমাইল (৬০) সহ শতাধিক পরিবার আতংকের মধ্যে দিনযাপন করছেন।
ভাঙ্গন কবলিত পরিবারের সদস্য শহিদুল ইসলাম জানান, প্রায় সপ্তাহ খানেক ধরে আমাদের গ্রামে ব্যাপক ভাঙ্গন শুরু হলেও ভাঙ্গন রোধে সরকারের কোন পদক্ষেপ নেই। এমনকি সরকারী কোন কর্মকর্তা ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা এলাকা পরিদর্শনেও আসেননি। আমরা চরাঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষ, শুধু ভোটের সময় হলে নেতারা আমাদের কাছে আসে। ভূক্তভোগী অপর বৃদ্ধ আলী হোসেন জানান, এমনিতেই আমরা খেয়ে না খেয়ে দিনযাপন করি। তদুপরি রাক্ষুসি নদীর ভাঙ্গনে আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে খুব আতংকে আছি।
এ বিষয়ে কালিহাতী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোজহারুল ইসলাম তালুকদার বলেন, আমাদের কালিহাতী উপজেলাটি যমুনা ও ধলেশ^রী খর¯্রােতা নদী বেষ্টিত। প্রতিবছর চরাঞ্চলের নি¤œবিত্তের মানুষগুলি নদী ভাঙ্গনের ফলে দূর্ভোগের শিকার হয়। এ বছরও ভাঙ্গনের খবর পেয়েছি। আমরা ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে সাময়িক ভাঙ্গন রোধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থ গ্রহণ করব। আমাদের সরকার জনবান্ধব সরকার। ভাঙ্গন রোধে আমরা সরকারের উর্ধ্বতন মহলে বিষয়টি অবগত করে অতিদ্রæত অসহায় মানুষগুলোকে বাঁচাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের টাঙ্গাইলের নির্বাহী প্রকৌশলী শাজাহান সিরাজকে তার মুঠোফোনে বারবার ফোন করলেও কোন সাড়া মেলেনি।