আবু মুসা বড়াইগ্রাম প্রতিনিধি -
নাটোরের বড়াইগ্রামে অগ্নিদগ্ধে কামরুন্নাহার শেলী (৪৫) নামে এক আওয়ামীলীগ নেত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।
অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকালে তিনি মারা যান। নিহত শেলী উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ,ও জোয়াড়ী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক সরকারের তৃতীয় স্ত্রী। গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে শেলীর মৃত্যু হয়েছে বলে নিহতের স্বামী দাবী করলেও পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কেরোসিনের গন্ধযুক্ত আধপোড়া কাপড় জব্দ করেছে বলে জানা গেছে। এদিকে, খবর পেয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস এমপি নিহতের বাড়িতে যান এবং তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন।
নিহতের স্বামী আব্দুর রাজ্জাক সরকার জানান, প্রায় এক বছর আগে তিনি শেলীকে বিয়ে করেন। এরপর থেকে তারা জোয়াড়ী গ্রামে শেলীর বাবার বাড়িতে বসবাস করে আসতেছিলেন। গত রবিবার ভোর রাতে শেলী সেহেরী ভাত রান্না করার সময় ঘরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হন। পরে তাকে প্রথমে নিজ গাড়ীতে করে বনপাড়া স্বদেশ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চিকিৎসক রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তির পরামর্শ দেন। কিন্তু তার স্বামী আব্দুর রাজ্জাক সরকার ঢাকায় না নিয়ে তাকে এলাকার বনপাড়া পাটোয়ারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকালে তিনি মারা যান।
তবে শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে সিলিন্ডারসহ গ্যাসের চুলা অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়।এ সময় নিহতের পুত্রবধু সোনিয়া খাতুন সিলিন্ডার বিস্ফোরণের দাবী করলেও তার দাবীর স্বপক্ষে কোন প্রমাণ দিতে পারেননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিহতের একাধিক স্বজন জানান, রান্নাঘরে নয়, শোবার ঘরে শেলী অগ্নিদগ্ধ হন। এ সময় ঘরে তার স্বামী ছাড়াও পাশের ঘরে তার ছোট ছেলে শিমুল এবং একমাত্র বৃদ্ধ মা ছিলেন। পরে সকালে তার শরীরের আধ পোড়া কাপড় চোপড় বাড়ির বাইরে পাশের জঙ্গলে ফেলে দেয়া হয়। সেসব কাপড়ে কেরোসিনের গন্ধ রয়েছে এবং অগ্নিদগ্ধের বিষয়টি গোপন রেখে মারা যাবার পর নিকটতম আতœীয়-স্বজনকে জানানো হয়েছে বলে তারা জানান।
এদিকে, খবর পেয়ে পুলিশ জানাজার নামাজ শেষে শুক্রবার বিকালে ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে লাশ দাফনে বাধা দেয়। পরে তারা নিহতের টিনশেড শোবার ঘর থেকে পোড়া বিছানার চাদরসহ ফেলে দেয়া পোড়া কাপড় জব্দ করেন। একই সঙ্গে নিহতের লাশ পোষ্টমর্টেমের জন্য নাটোর হাসপাতাল মর্গে পাঠান।
এ ব্যাপারে বড়াইগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক লিটন কুমার জানান, এ ব্যাপারে আমরা উভয়মুখী বক্তব্য ও তথ্য পেয়েছি। সে কারণে নিহতের লাশ পোষ্টমর্টেমের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিলীপ কুমার দাস বলেন, লাশ উদ্ধার করে নাটোর হাসপাতাল মর্গে পাঠান হয়েছে। পোষ্ট মর্টেম রিপোর্ট প্রাপ্তির পর সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
No comments:
Post a Comment