মেহেরপুরের বারাদী ক্যাম্পের এস.আই এর বিরুদ্ধে মহিলাসহ ৭ জনকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

সোমবার, নভেম্বর ১১, ২০১৯

মেহেরপুরের বারাদী ক্যাম্পের এস.আই এর বিরুদ্ধে মহিলাসহ ৭ জনকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ


মেহের আমজাদ,মেহেরপুর//
মেহেরপুর সদর উপজেলা বারাদী ক্যাম্প ইনচার্জ এস.আই আব্বাসের বিরুদ্ধে মহিলাসহ ৭ জনকে পিটিয়ে আহত করা সহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল রবিবার সকালে সদর উপজেলার কলাইডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন , মুকুলের স্ত্রী ফেরদৌসী খাতুন , মুকুলের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে জ্যোতি ও প্রীতি, তার চাচি আরবীয়া খাতুন, সিমা খাতুন, বাবলু মিয়া। আহতরা মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি আছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলা কলাইডাঙ্গা গ্রামের কামরুজ্জামান মুকুল এবং আব্দুল হামিদ লিফন এই দুই পরিবারের মাঝে জমি জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। যে জমি নিয়ে বিরোধ চলছে সেই জমিতে প্রাচির দেওয়া ছিল। বিবাদী পক্ষ আব্দুল হামিদ লিফন প্রাচির টি ভেঙে দেয়। প্রাচিরটি ভেঙে দেওয়াই মুকুল দের বাড়ি ফাকা হয়ে যায়। এই দেখে মুকুলের পরিবার ভেঙ্গে যাওয়া প্রাচিরে উপর বেড়া দেওয়াই আব্দুল হামিদ বারাদি পুলিশ ক্যাম্পে খবর দেয়।

পরে ক্যাস্প ইনচার্জ আব্বাস আলী সহ কয়েকজন পুলিশ এসে মুকুলের স্ত্রী সহ সকলের উপরে লাঠিচার্জ করে। এ বিষয়ে আহত মুকুলের স্ত্রী ফেরদৌসী খাতুন জানান, হঠাৎ করে বারাদি ক্যাম্পের পুলিশ আমাদের বাড়িতে প্রবেশ করে এবং আমাদেরকে বিভিন্ন ভাষায় গালাগালি করে এ কথার প্রতিবাদ করলে আমার দুই মেয়ে সহ আমাকে লাঠিপেটা করে এবং আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। আমার জামাকাপড় ছিড়ে দেয়। তারপর আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ায় আমার বুকে লাগে। আমার এখন শ্বাস কষ্ট হচ্ছে। মনসুর আলীর স্ত্রী আরবীয়া খাতুন জানান, পুলিশ বাড়িতে ঢুকেই কোন কথা না বলেই লাঠিচার্জ শুরু করে দেয় আমাদের। এসময় বাড়িতে কোন পুরুষ লোক ছিল না সবাই মাঠে জমিতে গিয়েছিল। বাড়ির মহিলারা বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত ছিল। এসময় বাড়িতে কাজ করা তিন জনকে ধরে গাড়িতে তোলে। আমরা কথা বললে আমাকে মারতে শুরু করে। আমার মাজায় ও পিঠে কাঠ দিয়ে দুইটা আঘাত করে।

তারপর আমার ছেলের বউ কিছু বললে তাকে মারতে শুরু করে। এ সময় আমার ছেলের বউকে ঠেকাতে গেলে পুনরায় আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। এরপর নজির আলি, সাজিব আর সোহানকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। কামরুজ্জামান মুকুল বলেন, আমাদের পরিবারের সাথে আব্দুল হামিদ লিফনদের মাঝে জমি জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন বিরোধ চলছে।এ বিষয় নিয়ে বারাদি ক্যাম্পে লিফন প্রায়ই অভিযোগ করে। এ নিয়ে বারাদি ক্যাম্প ইনচার্জ এস.আই আব্বাস আমাকে বিভিন্ন হুমকি দেয়, বাড়িতে পুরুষ মানুষ না পেলে মহিলাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে।গত সপ্তাহে আমার মেজো ভাই ও আমার স্ত্রীকে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করছিল এ সময় অনেকে বাধা দিলে নিয়ে যেতে পারিনি। যে জমি নিয়ে সমস্যা হচ্ছে সেই জমিতে পাশের দেওয়াল ছিল ।

সেই দেওয়াল বিবাদী পক্ষ সেই পাশের দেওয়াল ভেঙে দেওয়াই আমাদের বাড়িটির সীমানা ফাঁকা হয়ে যায়। ওই প্রাচীরে ওপর দিয়ে আমরা বেড়া দিলে লিফন বারাদি ক্যাম্পে খবর দেয়।এ দিন বারাদী ক্যাম্পের এসআই আব্বাস আলী এসে বলে এই কে বেড়া দিয়েছে এই বলে আমার চাচা বাবলুকে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে দেয়। বাবলু চাচাকে টানা হেঁচড়া করে নিয়ে যাওয়ার সময় সে অজ্ঞান হারিয়ে ফেলে।

তিনি আরও বলেন, এই ঘটনায় আমাদের বাড়ির মহিলারা আব্বাস আলীর সাথে কথা বলতে গেলে সে এবং তার সাথে থাকা সঙ্গী পুলিশ আমার পরিবারের উপর লাঠিচার্জ করে এতে আহত হয়। সেই সাথে আমার বাড়িতে কাজ করছিল তিনজনকে আটক করে নিয়ে যায় ক্যাম্পে।

তিনি আরো জানান, জমিজমা বিষয় নিয়ে আমার বাপকে মাডার করা হয়েছিল। সে মামলায় আব্দুল হামিদ লিফোন ৩ নং আসামি।গত শনিবার এ বিষয়ে নিয়ে এস.আই আব্বাস আমাকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিয়ে বলে মামলা তুলে নিতে হবে ও জমি-জমা ফেরত দিতে হবে।

আপনি পুলিশের লোক হয়ে জনগণকে ধরনের কথা বলা ঠিক না একথার জবাবে এস.আই আব্বাস বলে তোর বাবা তো সন্ত্রাসী ছিল এমনিতে মাডার হয়েছে নাকি ? মুকুল আরও বলেন, এসআই আব্বাস আলী এক বছর বারাদি ক্যাম্পে আশায় প্রতিনিয়ত এই জমিজমা বিষয় নিয়ে আমাদেরকে হুমকি দিয়ে আসছে এবং বাড়িতে এসে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে।

১০০ বছর ধরে এই জমিতে আমরা বাড়ি করে আছি। এই জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। মামলা শেষ হলে যার জমি সে পাবে। এর আগে এস.আই আব্বাস আলী আমার ভাইকে ধরে নিয়ে যে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে ছেড়েছে।

আমাকে প্রতিনিয়ত এখন হুমকি দেয় যে তোকে ক্রসফায়ার দেবো। আমি সহ আমার পরিবারের সকলেই আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। মেহেরপুর পুলিশ সুপারের কাছে আমার একটি অনুরোধ আপনি এ বিষয়টি দেখবেন।

বারাদি ক্যাম্প ইনচার্জ এসআই আব্বাস আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বরেন, আমার কাছে অভিযোগ আসলে আমি ঘটনা স্থলে যায়। ঐ স্থানে গিয়ে দেখি প্রাচীরের উপর বেড়া দিচ্ছে মুকুলের পরিবার। আমি কয়েকটি কথা বলায় মহিলাদের সাথে কয়েকটি কথা হয়। তারপর আমি চলে আসি।
মহিলাদের পিটিয়ে আহত করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ উঠেছে সকল তথ্য মিথ্যা। এবিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি এবং সেখানে স্থানীয়দের সাথে কথা বলেছি। ঐ জমি নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে মামলা চলছে। সেখানে প্রাচীর দেওয়া ছিল। প্রাচীর ভেঙ্গে যাওয়া মকুলের পরিবার বেড়া দেওয়াতে এ ঘটনাটি ঘটে।এস.আই আব্বাসের বিষয়ে তিনি বলেন, কোন পুলিশ যদি মহিলাদের গায়ে হাত দেয় তাহলে ঘটনা তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Post Top Ad

Responsive Ads Here