সংবাদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় আবু নাছের নামে এক শিক্ষককে দুই বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। দাখিল পরীক্ষার্থীদের নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন-উত্তর পরিবর্তন করার অভিযোগে তাকে কারাদণ্ড দেয়া হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার বাঞ্ছারামপুর সোবহানিয়া ইসলামিয়া ফাযিল (ডিগ্রি) মাদরাসা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
দণ্ডপ্রাপ্ত আবু নাছের লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পূর্ব সৈয়দপুর এলাকার সামসু উদ্দিন মিয়া ছেলে। তিনি উপজেলার এই মাদরাসার খণ্ডকালীন শিক্ষক। এ ঘটনায় ওই কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিবের দায়িত্বে থাকা বাঞ্ছারামপুর সোবহানিয়া ইসলামিয়া ফাযিল (ডিগ্রি) মাদরসার অধ্যক্ষ মো. রুহুল আমিনকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার উপজেলার বাঞ্ছারামপুর সোবহানিয়া ইসলামিয়া ফাযিল (ডিগ্রি) মাদরাসা কেন্দ্রে দাখিল পরীক্ষার গণিত বিষয়ের পরীক্ষা হয়। দুপুরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাফিসা নাজ ওই কেন্দ্র পরিদর্শনে যান। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর কেন্দ্র সচিবের পাশের কক্ষে মাদরাসার খণ্ডকালীন শিক্ষক আবু নাছের গণিত পরীক্ষার নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন-উত্তরপত্র নিজে লিখে শিক্ষার্থীদের জমা দেয়া উত্তরপত্র সরিয়ে নতুন ১০টি উত্তরপত্র জমা দেয়ার চেষ্টা করেন। সে সময় কেন্দ্র পরিদর্শকের দায়িত্বে থাকা কাজী সোহেল হাতেনাতে আবু নাছেরকে আটক করেন। পরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাফিসা নাজ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অভিযুক্ত শিক্ষককে দুই বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
এ ব্যাপারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাফিসা নাজ জানান, খণ্ডকালীন ওই শিক্ষক আগেই নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের উত্তরপত্র লিখে তৈরি করে রেখেছিলেন। ওই উত্তরপত্র গুলোতে শিক্ষার্থীদের রোল ও রেজিঃ নম্বর তিনি নিজে লিখে রেখেছিলেন। পরীক্ষা শেষে সুযোগ বুঝে শিক্ষার্থীদের জমা দেয়া উত্তরপত্রগুলো পরিবর্তন করে নিজের লেখা উত্তরপত্রগুলো রাখার সময় তাকে হাতেনাতে আটক করেন আরেক শিক্ষক।
তিনি আরো বলেন, আমরা ১০টি উত্তরপত্র পেয়েছি যেগুলোর মধ্যে কক্ষ পরিদর্শকের কোনো স্বাক্ষর ছিল না। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর জড়িত অন্য কাউকে পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাঞ্ছারামপুর ইউএনও মো. নাসির উদ্দিন সরোয়ার জানান, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাফিসা নাজ সারাদিন ওই কেন্দ্রে ছিলেন। পরীক্ষা শেষ করে চলে আসার সময় অভিযুক্ত শিক্ষক এ ঘটনা ঘটান। এর তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
No comments:
Post a Comment