রাসেল কবির মুরাদ , কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি :
কলাপাড়ার ম্যারাডোনা খ্যাত রাখাইন স¤প্রদায়ের প্রাক্তন ফুটবলার লাভা মং। খ্যাতিমান এ ফুটবলারকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ড কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২১ সন্মাননা স্মারক ক্রেস্ট প্রদান করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার শেষ বিকেলে কলাপাড়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ সন্মাননা পুরস্কার প্রদান করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসানাত মো: শহীদুল হক। এসময় উপস্থিত ছিলেন ছিলেন লালুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস, কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এ এম মিজানুর রহমান বুলেট, প্রাক্তন ফুটবলার এবং ধারাভাষ্যকার বিশ্বাস রাশেদ মোশাররফ কল্লোল, ফুটবল সংগঠক রহিমুল হক হিরু প্রমুখ।
খ্যাতিমান এ ফুটবলার লাভামং-এর বাড়ি কলাপাড়া পৌর শহরের বর্তমান গোডাউন সংলগ্ন ৬ নং ওয়ার্ডে। ফুটবল ছিল তার ধ্যান। এই প্রজন্মের অনেকেই জানেন তার ফুটবল কীর্তির কাহিনী। এক সময় কলাপাড়ার ফুটবল মানেই ছিল লাভা, মোসা, মোসিও, ধলুসে। এরা সবাই একই পরিবারের সদস্য। পরিবার থেকেই ফুটবল খেলার অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন তিনি। অর্থের প্রতি কখনো লোভ ছিলনা তার। লাভা ও তার প্রায়াত ছোট ভাই মোসা যেদিন কলাপাড়া স্কুলের হয়ে কলেজের বিরুদ্ধে টুর্নামেন্ট খেলত সেদিন স্কুল মাঠে খেলা দেখতে দর্শকদের উপচে পড়া ভীড় থাকতো। লাভামং এস এস সি দিয়ে ঢাকায় ওয়ান্ডার্স ক্লাবে এ টীমে যোগ দেন। সেখানে কৃতিত্বের সাথে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে সেই সময়ে ক্লাব থেকে তার সম্মানী ছিল বারো হাজার টাকা। হঠাৎ সে দেশের মায়ায় কলাপাড়া চলে আসে কিছুদিন খেলে তারপর জুনিয়র প্লেয়ারদের প্রশিক্ষন দেয়। এখন বয়স হয়েছে তার দাদার ভিটা রাংগাবালিতে থাকেন। বিয়ে সংসার করেনি। আর্থিক টানা-পোড়ন চলছে। কিন্তু ফুটবল তার মন থেকে কিছুতেই মুছে ফেলতে পারেননি।
নীলগঞ্জ ইউপির নবীপুর গ্রামের সাবেক ফুটবলার আবুল বাশার সাংবাদিকদের জানায়, লাভা দাকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। তিনি একজন কোমল মনের মানুষ ছিলেন। একসাথে খেলেছি, অনেক ব্যাপারে তার পরামর্শ নিতাম। তিনি আরও জানান, সাবেক এই সুপারস্টার কলাপাড়া বাসীর মনে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকবেন।
কলাপাড়া প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহসিন পারভেজ এ প্রতিবেদককে বলেন, লাভা মং আমার স্কুল জীবনের সহপাঠী। কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসন প্রাক্তন খ্যাতিমান ফুলবলার হিসেবে তাকে বঙ্গবন্ধু জাতীয় গোল্ড কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট স্মারক সন্মাননা ক্রেস্ট দেয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এই আদিবাসী তুখোড় খেলোয়াড়ের জন্য আর্থিক অনুদানের ব্যবস্থা করে যাতে পরবর্তী জীবনে একটু সচ্ছল জীবন-যাপন করতে পারে তার দাবি জানান তিনি।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসানাত মো: শহীদুল হক গনমাধ্যমকে বলেন, ঢাকা আরামবাগের সাবেক এই কৃতি খেলোয়াড় এবং কলাপাড়ার ফুটবল অঙ্গনের গৌরব লাভামং কে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্মাননা প্রদান করার সুযোগ পেয়ে নিজেকে গৌরবান্বিত বোধ করছি।