জেলা প্রতিনিধিঃ
টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে ট্রিপল মার্ডারের ঘটনাটি পরকীয়া সম্পর্কের জেরে ঘটেছে বলে ধারণা করছে পরিবারের লোকজন, প্রতিবেশী ও পুলিশ। লাশ উদ্ধার হওয়া বসতঘরের দেয়ালে দেখা যায় রক্ত দিয়ে লেখা কিছু কথা।
সেখানে লেখা রয়েছে- ‘এমনটা হতো না যদি আমার সুমী আমার কাছে থাকতো, এই সবকিছুর জন্য সুমীর বাবা দায়ী’।
শনিবার সকালে ঐ উপজেলার দিগড় ইউনিয়নের কাশতলা গ্রামের প্রবাসী জয়েন উদ্দীনের বাড়ি থেকে তালাবন্ধ অবস্থায় তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় গুরুতর আহত তিন বছরের এক শিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহতরা হলেন- প্রবাসী জয়েন উদ্দীনের মা জামেলা বেগম, স্ত্রী সুমী আক্তার, ও কালিহাতীর সাতুটিয়া গ্রামের ভাঙারি ব্যবসায়ী শাহজালাল।
জয়েন উদ্দীনের ভাইয়ের স্ত্রী শাহনাজ বলেন, আমার শাশুড়ি সকালে নামাজ পড়ার পর হাঁটতে বের হন। আজ অনেক বেলা হয়ে গেলেও তার ও সুমীদের খোঁজ নিতে যাই। ঘরের মূল দরজায় তালাবন্ধ থাকায় বাইর থেকে তাদের অনেক ডাকাডাকি করলেও কারও সাড়াশব্দ না পেয়ে সাড়ে সাতটার দিকে অন্যদের খবর দেই। পরে অন্যরা শাবল এনে তালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করলে তিনজনের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখি। আর শিশুটিকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘটনাস্থল থেকে চাকু ও ছোরা উদ্ধার করা হয়েছে।
জয়েন উদ্দীনের চাচা মোখলেছ বলেন, শাহজালালের সঙ্গে সুমী এক বছর আগে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। পরে ভাগনে তার শিশু সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে কয়েক মাস আগে সুমীকে ফিরিয়ে এনে আবার ঘরসংসার করে জয়েন উদ্দীন। এরপর সে সৌদিআরব চলে গেছে।
প্রতিবেশীরা বলেন, জয়েন বিদেশ চলে যাওয়ার পরও সুমীর সঙ্গে শাহজালালের যোগাযোগ ছিল। সেই যোগাযোগ থেকে রাতের কোনো এক সময় হয়তো শাহজালাল সুমীদের ঘরে প্রবেশ করে থাকতে পারে।
দিগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ মামুন বলেন, শাহজালালের সঙ্গে সুমীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। প্রায় ৬ মাস আগে শাহজালালের সঙ্গে সুমী পালিয়ে গিয়েছিল। শুনেছি তারা বিয়েও করেছিল। পরে সুমীর স্বামী বিদেশ থেকে ফিরে আবার তাকে বাড়িতে নিয়ে এসেছিল। বিষয়টি নিয়ে আগে একাধিকবার সালিস হয়েছে। সম্পর্কের ফাটল থেকেই এমন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
ঘাটাইল থানার ওসি আজহারুল ইসলাম সরকার জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে প্রেমঘটিত কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। পুরো বিষয় খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।