দীর্ঘ সংসার জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন কৃষ্ণা তিওয়ারির।
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
৬৩ বছরের দীর্ঘ সংসার জীবনের সঙ্গী স্বামী স্ত্রী। সুখ-দুঃখের মধ্য দিয়ে কেটেছে প্রতিটি মুহূর্ত। তবে স্বামীর থেকে স্ত্রীর বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বারবার হয়েছেন শয্যাশায়ী। স্বামীর ভালোবাসা আর আত্মবিশ্বাসে সুস্থ হয়েছেন প্রতিবার। তবে এবারের শয্যাশায়ী যেনো রূপ নিলো চিরতরে। দীর্ঘ সংসার জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন স্ত্রী কৃষ্ণা তিওয়ারির।
নেত্রকোনার দুর্গাপুরের প্রবীণ ও বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ দুর্গাপ্রসাদ তিওয়ারির স্ত্রী কৃষ্ণা তিওয়ারির। ৮১ বছর বয়সে গতকাল শনিবার চিকিৎসাধীন ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান তিনি। এরপর দুপুরে পৌর শহরের স্থানীয় শ্বশান ঘাটে অন্তষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
তিনি দীর্ঘদিন হিপ জয়েন্ট রোগে আক্রান্ত ছিলেন। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর ঢাকার কমফোর্ট হাসপাতালে জয়েন্ট প্রতিস্থাপন সার্জারি করেন তিনি। পরবর্তীতে কিছুদিন সুস্থ থেকে পুনরায় শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি।
প্রবীণ রাজনীতিবিদ শ্রী দুর্গাপ্রসাদ তেওয়ারি কমরেড মণি সিংহ মেলা কমিটির আহ্বায়ক, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) উপজেলা সভাপতি। গত বছর পরপর দুই দফা করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন এই ৯০ ঊর্ধ্ব দম্পতি। মহামারি করোনাকে জয় করলেও মৃত্যুর কাছে হার মানতে হলো কৃষ্ণা তিওয়ারির। এদিকে স্ত্রীকে হারিয়ে এখন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন দুর্গাপ্রসাদ তিওয়ারির।
প্রবীণ এই দম্পতি ১৯৫৯ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর থেকেই দীর্ঘ ৬৩ বছর কাটিয়েছেন এক ছাদের নিচে। দীর্ঘ এই পথ চলায় নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছেন। তাদের ছোট সংসার বেড়ে উঠেছেন তাদের সন্তান থেকে শুরু ছেলের ঘরের সন্তানেরাও। দীর্ঘ পথ চলায় ছিলেন একজন আরেকজনের সহযোগী। ভালোবাসা আত্মবিশ্বাস আর দৃঢ় মনোবলে পার করেছেন নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি। যেগুলো বর্তমান সমাজে নেই বললেই চলে।
২০২০ সালে দেশে চলমান মহামারির আবির্ভাবে দীর্ঘদিন গৃহবন্দি থেকে মোকাবিলা করেছেন করোনা। শেষের দিকে সরকার সবাইকে টিকা প্রদান শুরু করলে অনেকেই অনাগ্রহ দেখেছিলেন। তবে করোনা জয়ে উপজেলায় প্রথম সারির সম্মুখযুদ্ধের মতো ভ্যাকসিন নিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে গিয়েছিলেন এই দম্পতি। তাদের দেখাদেখি অনুপ্রাণিত হয়ে ভ্যাকসিন নিয়েছেন অনেকেই।
২০২১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি ডোজের ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন তারা । দুই মাস পর দ্বিতীয়বারের মতো টিকা নিয়ে সম্পূর্ণ হয় করোনার ডোজ। চলমান বুস্টার ডোজ নেয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের। এর আগেই মৃত্যুর মিছিলে প্রিয়জনকে হারিয়ে শেষ হলো তাদের দীর্ঘ দাম্পত্য জীবন।
তিনি স্বামী, ২ ছেলে, ১ মেয়ে নাতি নাতনী সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। এ দিকে তার মৃত্যুতে স্থানীয় এমপি মানু মজুমদার, বিশিষ্ট সমাজসেবক ডা. দিবালোক সিংহ, উপজেলা আওয়ামী লীগ ও তার অংঙ্গসংগঠন, দুগার্পুর প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সামাজিক সংঘঠন শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন।
মোঃসাইফুল্লাহ/সময় সংবাদ