ফরিদপুর প্রতিনিধি :
ফরিদপুরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার জেরে মাদ্রাসা শিক্ষকের উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই হামলায় তার ডান হাত, কাঁধ ও পিঠ গুরুত্বর জখম হয়েছে।
শনিবার (১৩ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা সদরের কানাইপুর বাজারে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
আহত শিক্ষক জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের পুরদিয়া আনসার আলী মিয়া দাখিল মাদ্রাসার বাংলা শিক্ষক ও অকোটেক্স গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান সাজিদ-সোবহান ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের সমাজকল্যাণ অফিসার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। সে ইউনিয়নের কাশিমাবাদ গ্রামের মোঃ শহিদুল্লাহর পুত্র ইনামুল হাসান মাসুম। এছাড়া তিনি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠণ ছায়ানীড়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।
বর্তমানে তিনি গুরুত্বর আহত অবস্থায় ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত শিক্ষক ইনামুল হাসান বলেন, দুপুরে ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সোবহান স্যারের উপস্থিতিতে মাদ্রাসার শিক্ষকদের নিয়ে মিটিং হওয়ার কথা ছিলো। মিটিং উপলক্ষে ১১টার দিকে আমি কানাইপুর বাজারে ফল আনতে যাই। এ সময় ফলপট্টির সামনে লিচু কেনার সময় বাজারের বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তুষার হোসেনের নেতৃত্বে শহিদ, মুন সহ কয়েকজন লাঠি নিয়ে আমার উপর হামলা চালায়। আমি কিছু উঠার আগেই আমাকে লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। আর বলে পাইছি আজকে, শেষ করে ফেল। এক পর্যায়ে স্থানীয়রা তাদের হাত থেকে আমাকে রক্ষা করে হাসপাতালে নিয়ে আসে।
আহত শিক্ষক আরো বলেন, কিছুদিন আগে কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে আমি সাবেক চেয়ারম্যান ফকির মোঃ বেলায়েত হোসেনের সমর্থক হিসেবে কাজ করেছি। চেয়ারম্যান নির্বাচনে হেরে যাওয়ায় প্রতিপক্ষরা আমাদের উপর চড়াও হয়ে উঠে। বিভিন্ন সময় চেয়ারম্যানের কর্মী সমর্থকদের উপর হামলার ঘটনা ঘটছে। সেই সুত্র ধরে তারা আমাকে একা পেয়ে মারধর করেছে। তাছাড়া তাদের সাথে আমার কোনো শত্রুতা নেই।
এ বিষয়ে কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফকির মোঃ বেলায়েত হোসেন বলেন- ইনামুল হাসান মাসুম একজন ভদ্র প্রকৃতির লোক। সে শিক্ষকতার পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করে থাকে। সে আমার একজন সমর্থক হিসেবে প্রায় সময় আমার সাথে থাকতো। তাই বলে তার উপর হামলার ঘটনা ন্যাক্কারজনক। আমি এই হামলার তীব্র নিন্দা জানাই এবং হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন- আমি নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর থেকে আমার কর্মী সমর্থকদের উপর বিভিন্ন সময় হামলার ঘটনা ঘটছে। কিছুদিন আগে রণকাইলের মাঝিবাড়িতে হামলা হয়েছে। আজ চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইফুল ইসলাম কামালের সমর্থক তুষার হোসেনের নেতৃত্বে একজন শিক্ষকের উপর হামলা চালানো হয়েছে।
এ বিষয়ে কানাইপুর বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তুষার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব না হওয়া বক্তব্য নেয়া যায়নি।
তবে, ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ওসি এম.এ জলিল বলেন- আমি ঘটনাটি শুনেছি, শহিদ নামে একটা লোক তাকে মারধর করেছে। তবে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে আমি তখনই সাব ইন্সপেক্টর মাহাবুবকে পাঠিয়েছি। শহিদকে গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে।#