![]() |
| আলফাডাঙ্গা ভূমি অফিসে সংঘর্ষের প্রকৃত কারণ সিসিটিভি ফুটেজে প্রকাশ |
আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি:
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের শুনানির দিন সৃষ্ট সংঘর্ষের ‘প্রকৃত’ কারণ উদঘাটিত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে পাওয়া সিসিটিভি ফুটেজ ও একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় ঘটনাটির আসল চিত্র পরিষ্কার হয়েছে।
ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা কলেজছাত্র মেহেদী শেখের (১৭) পরিবারের দাবি, এটি কোনো পূর্বপরিকল্পিত হামলা নয়; বরং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে গিয়ে ঘটে যাওয়া একটি আত্মরক্ষামূলক সংঘাতের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিণতি। প্রতিপক্ষের ‘হামলার’ অভিযোগটি সম্পূর্ণ অতিরঞ্জিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
গত রোববার (২ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আলফাডাঙ্গা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে গোলাম রাব্বানী ও ফজর শেখের মধ্যে জমি নিয়ে শুনানির দিন নির্ধারিত ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সিসিটিভি ভিডিও বিশ্লেষণে দেখা যায়, শুনানি শুরুর আগেই অফিসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আহত গোলাম রাব্বানী নিজেই প্রথমে বিবাদী পক্ষের বুলবুলকে চড় মারতে উদ্যত হন, যা ছিল সংঘাতের প্রথম প্রকাশ্য উসকানি।
পরিস্থিতি শান্ত করতে বুলবুলের ভাই শিমুল এগিয়ে এসে রাব্বানীকে বলেন— “এটা মারামারির জায়গা না, এখানে আইনি আলোচনা চলছে।” কিন্তু রাব্বানী উল্টো শিমুলকে বকাঝকা করেন এবং অফিসের পরিবেশ উত্তপ্ত করে তোলেন।
এই সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে শিমুলের ভাতিজা মেহেদী শেখ এগিয়ে এসে উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা করেন। তিনি রাব্বানীর আক্রমণাত্মক আচরণ ঠেকাতে খালি হাতে একটি ধাক্কা দেন— যা ভিডিওতে স্পষ্টভাবে দেখা যায়।
ঘটনার পর আহত গোলাম রাব্বানী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবি করেন, তাকে ‘হাতুড়ি দিয়ে মারা হয়েছে’ এবং ‘তিনটি দাঁত ভেঙে গেছে’। তবে মেহেদীর পরিবার সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছে।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, মেহেদী কেবল খালি হাতে ধাক্কা দিয়েছিলেন, কোনো হাতুড়ি বা অস্ত্র ব্যবহার করেননি। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, রাব্বানীর বয়সজনিত কারণে কিছু দাঁত নড়বড়ে ছিল, আবার কিছু বাঁধানো দাঁত ছিল— ধাক্কা খেয়ে পড়ে যাওয়ার সময় তার একটি দাঁত পড়ে যায়।
মেহেদীর পরিবারের অভিযোগ, প্রতিপক্ষ এখন ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের উদ্দেশ্য হলো কলেজছাত্র মেহেদীকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করা ও মিথ্যা মামলায় জড়ানো।
পরিবারটি দ্রুত সিসিটিভি ফুটেজটি প্রকাশ করে প্রকৃত সত্য জনসমক্ষে আনার দাবি জানিয়েছে, যাতে ভুল ব্যাখ্যা বা অপপ্রচার বন্ধ হয় এবং নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে ঘটনাটির সঠিক বিচার হয়।

