ফরিদপুর প্রতিনিধি :
ফরিদপুরে দলের মাঝে বিভেদ সৃষ্টিকারী ও বিদ্বেষ ছড়ানো নেতাদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সদস্য বিপুল ঘোষ। ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে পৌরসভার ছয়টি ওয়ার্ড কমিটির নতুন নেতৃত্বের পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
ফরিদপুর শহরের সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে শনিবার বিকেলে শহর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মনিরুল হাসান মিঠুর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এ. কে. আজাদ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের আরেক উপদেষ্টা খলিফা কামাল উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফারুক হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদিকা আইভি মাসুদ, ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট বদিউজ্জামান বাবুল ও মনিরুজ্জামান মনির, সদস্য নুরুল আমিন বাপ্পি; জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি আক্কাস হোসেন, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুসরাত তানিয়া, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ সুলতান মো. খান রাহাত, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশীদ চৌধুরী রিয়ান ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমেদ। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন হা-মীম গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. মোতালেব হোসেন ও পরিচালক বেলাল হোসেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিপুল ঘোষ বলেন, সামনে নির্বাচন, জাতীয় নির্বাচনে ফরিদপুরের সব আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য প্রয়োজন সংঘবন্ধ ও সুসংহত আওয়ামী লীগ। তিনি ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং ফরিদপুরের পৌর মেয়রের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, দলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে এবং বিদ্বেষ ছড়িয়ে বিএনপি-জামাত শিবিরের হাতকে শক্তিশালী করছেন যারা, তারা হুঁশিয়ার হয়ে যান। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আমি বিশ্বাস করি, খুব শিগগিরই ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিএনপি- জামায়াতের বিরুদ্ধে অংশ নিতে সকলকে সাথে নিবেন সেই শুভ বুদ্ধির উদয় হবে তাদের। তিনি আরো বলেন বড় পদ পেয়েছেন সেই পদের ভার বহন করতে পারছেন না। আপনাদেরকে অনুরোধ করবো আসুন ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ গঠন করি। এমপি পদে আমাদের নেত্রী যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষেই আমরা সকলে কাজ করব। সুতরাং ভেদাভেদ ফুলে একযোগে কাজ করি দলের জন্য।
সভার প্রধান বক্তা এ. কে. আজাদ বলেন, ফরিদপুরে আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করতে এবং নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়াতে আমি ফরিদপুরে সময় দিচ্ছি। এতে ঈর্ষান্বিত হয়ে অনেকেই নানা কটূক্তি করছেন। আমাকে রাতের বেলা ফোনে হুমকি দেয়া হয় এই শহর থেকে চলে যাওয়ার জন্য। দলে আমার অবদান নিয়ে প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করছেন, তারা অর্বাচীন ও বালক।
এ. কে. আজাদ আরও বলেন, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ কেন্দ্রীয় নেতারা জানেন, দুঃসময়ে কিভাবে আমি দলের নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছি। ২১ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার পরসহ বিভিন্ন দু:সময়ে দলের নেতাকর্মীদের পাশে থেকেছি। তিনি ভেদাভেদ ভুলে, হিংসা বিদ্বেষ ছেড়ে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
ফরিদপুর পৌর আওয়ামী লীগের ২, ১৮, ১৯, ২২, ২৩ ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত কমিটি ঘোষণা ও পরিচিতি সভা উপলক্ষে ওই আলোচনা সভা শেষে সন্ধ্যায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয় শহরে। শোভাযাত্রা টি শহরে প্রদক্ষিণ করে প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত নেতাদের মিষ্টি মুখ করানো হয়।