![]() |
বোয়ালমারীতে এইচএসসি পরীক্ষায় মেয়েদের সাফল্য, কমেছে জিপিএ-৫ ও পাশের হার |
আব্দুল্লাহ আল মামুন রনি, বোয়ালমারী (ফরিদপুর):
২০২৫ সালের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় মেয়েরা এগিয়ে থাকলেও সার্বিকভাবে পাশের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, এবার খাতা মূল্যায়নে অতিরঞ্জিত মার্কিং পদ্ধতি বাতিল, কেন্দ্রসংখ্যা হ্রাস এবং নিজ কলেজে পরীক্ষা দিতে না পারা— এসব কারণেই ফলাফল নিম্নমুখী হয়েছে। সারাদেশের মতোই বোয়ালমারীতেও ফলাফল হতাশাজনক, বিশেষ করে বোয়ালমারী সরকারি কলেজ, খরসুতি সরকারি কলেজ ও কাদিরদি ডিগ্রি কলেজে ফলাফল প্রত্যাশার নিচে নেমে গেছে।
বোয়ালমারী সরকারি কলেজে এবছর মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১২৮ জন, যার মধ্যে ৭৬ জন ছেলে ও ৫২ জন মেয়ে। পাশ করেছে ৩৩ জন— এর মধ্যে ১৮ জন ছেলে ও ১৫ জন মেয়ে। পাশের হার ২৫.৭৮ শতাংশ, যা ২০২৪ সালে ছিল ৩৯.৭ শতাংশ। গত বছরের মতো এবছরও এই কলেজ থেকে কেউ জিপিএ-৫ অর্জন করতে পারেনি।
খরসুতি সরকারি কলেজে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৮৩ জন— ছেলে ৫৭ এবং মেয়ে ২৬। পাশ করেছে ৩২ জন, যার মধ্যে ২০ জন ছেলে ও ১২ জন মেয়ে। এবছর পাশের হার ৩৮.৫৫ শতাংশ, যা গত বছর ছিল ৭৯.১৭ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ১ জন, যেখানে ২০২৪ সালে সংখ্যা ছিল ৫ জন।
কাজি সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২৮৭ জন, পাশ করেছে ১৭৯ জন। পাশের হার ৬২.৩৭ শতাংশ, যা গত বছর ছিল ৮০.১৪ শতাংশ। এবছর জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ জন শিক্ষার্থী, যা গত বছর ছিল ১১ জন। বিএম শাখায় পাশের হার ছিল ৮৪ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৬ জন, ফলে উপজেলায় সেরা অবস্থানে রয়েছে এই কলেজ।
কাদিরদি ডিগ্রি কলেজে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৩৯৬ জন— এর মধ্যে ২৪৪ জন ছেলে ও ১৪৬ জন মেয়ে। পাশ করেছে ১৭১ জন শিক্ষার্থী, যার মধ্যে ৯২ জন ছেলে ও ৭৯ জন মেয়ে। এবছর পাশের হার ৪৩.৮৫ শতাংশ, যা গত বছর ছিল ৯০.২ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ১ জন শিক্ষার্থী, যা ২০২৪ সালে ছিল ৮ জন।
এবারের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, উপজেলাজুড়ে মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় ভালো ফলাফল করেছে। বিশেষ করে কাজি সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা পাশের হার ও জিপিএ-৫ উভয় ক্ষেত্রেই এগিয়ে রয়েছে।
বোয়ালমারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, “এবার শতভাগ নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষার মান উন্নয়নে প্রশাসন আপসহীন। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ভবিষ্যতে পাশের হার বৃদ্ধি পাবে এবং মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।”