![]() |
| ধর্ম বদলেছিলেন ২০ বছর আগে, মৃত্যুর পর লাশও নিল না পরিবার |
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
ধর্ম পরিবর্তনের কারণে জীবদ্দশায় পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিলেন ঝিনাইদহের এক ব্যক্তি। মৃত্যুর পরও তার প্রতি একই কঠোরতা দেখালেন আপনজনরা—লাশ গ্রহণ করতেও অস্বীকৃতি জানান তারা।
ঝিনাইদহ পৌর এলাকার ২ নম্বর ওয়ার্ডের যাটবাড়িয়া গ্রামের ওই ব্যক্তি প্রায় ২০ বছর আগে সনাতন ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। এরপর থেকেই পরিবার ও আত্মীয়দের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। একপর্যায়ে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়।
পরিবারের আশ্রয় হারিয়ে তিনি বিভিন্ন মসজিদ ও মাদ্রাসায় খাদেম হিসেবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। দীর্ঘদিন এভাবেই মানবেতর জীবন কাটান তিনি।
শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) তার মৃত্যু হলে বিষয়টি পরিবারকে জানানো হয়। তবে ধর্ম পরিবর্তনের কারণ দেখিয়ে ভাই-বোন ও আত্মীয়রা লাশ নিতে অস্বীকৃতি জানান এবং তার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়ে দেন।
পরবর্তীতে ঝিনাইদহ সদর থানা থেকে মরদেহটি ‘বেওয়ারিশ’ হিসেবে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সংগঠনটির তত্ত্বাবধানে শুক্রবার ঝিনাইদহ সদর কবরস্থানে জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়।
জানাজায় বিপুলসংখ্যক ধর্মপ্রাণ মুসল্লি অংশ নেন। এ সময় আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের ঝিনাইদহ জেলা সম্পাদক মো. আহসান হাবিব রনক বলেন, তিনি প্রায় দুই শতাধিক বেওয়ারিশ লাশের দাফন করেছেন, তবে এ দাফন ছিল অনুভূতির দিক থেকে ভিন্ন।
দাফন কার্যক্রমে সংগঠনের কার্যনির্বাহী সদস্য মো. দাউদ আলী, মো. খোরশেদ আলম দেওয়ানসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। জানাজা ও দোয়া পরিচালনা করেন মাওলানা আল মাহাদী লিপিআর।
দুনিয়ার আপনজনরা তাকে প্রত্যাখ্যান করলেও শেষ বিদায়ে হাজারো ধর্মপ্রাণ মানুষের অংশগ্রহণে নওমুসলিম ওই ব্যক্তিকে সম্মানের সঙ্গে সমাহিত করা হয়।

