![]() |
| দোয়ারাবাজারে ব্যবসায়ীর ৯৭ লাখ টাকার গরু-মহিষ লুটের অভিযোগ |
দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় সংঘবদ্ধ একটি চক্রের বিরুদ্ধে প্রায় ৯৭ লাখ টাকা মূল্যের ৯৩টি গরু ও মহিষ লুট করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার প্রায় দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনো কার্যকর কোনো অগ্রগতি না থাকায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ভুক্তভোগী পরিবার।
ঘটনাটি ঘটে গত ১৫ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামে। এ ঘটনায় পরদিন (১৬ ডিসেম্বর) শ্রীপুর গ্রামের মৃত মমশর আলীর ছেলে মো. মদরিছ আলী দোয়ারাবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মদরিছ আলী ও তার পাঁচ ভাই দীর্ঘদিন ধরে গরু-মহিষ পালন ও কৃষিকাজের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। ঘটনার দিন বিকেলে গ্রামের পশ্চিম মাঠে পশুগুলো চারণ শেষে বাড়িতে ফেরার পথে আগে থেকেই ওঁৎ পেতে থাকা একদল সশস্ত্র ব্যক্তি তাদের পথরোধ করে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্তরা রামদা, দা, সুলফি ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেয় এবং জোরপূর্বক ৯৩টি গরু ও মহিষ ছিনিয়ে নেয়। স্থানীয়রা এগিয়ে এসে বাধা দিতে চাইলে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে সবাইকে সরে যেতে বাধ্য করা হয়। লুট হওয়া পশুগুলোর আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৯৭ লাখ টাকা বলে দাবি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগীর দাবি, লুট করা গরু ও মহিষগুলো বর্তমানে একটি গোপন স্থানে রাখা হয়েছে। লিখিত অভিযোগে শ্রীপুর ও সানিয়া গ্রামের কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে তাদের একটি সংঘবদ্ধ লুটচক্রের সদস্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও ৪০–৫০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি জড়িত বলে অভিযোগে বলা হয়।
ভুক্তভোগী মদরিছ আলী অভিযোগ করে বলেন, থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরও এখন পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে নানা ধরনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। পরিবার নিয়ে চরম আতঙ্কে দিন কাটছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত আবদুল কাইয়ুম বলেন, তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সীমান্ত এলাকায় তার শ্যালক হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার জেরে প্রতিপক্ষ পক্ষ থেকে এই পাল্টা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
এ বিষয়ে দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে এখন পর্যন্ত গরু-মহিষ বা সংশ্লিষ্ট কাউকে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।
এদিকে ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর এলাকায় ব্যবসায়ী ও খামারিদের মধ্যে উদ্বেগ ও নিরাপত্তাহীনতা বেড়েছে। দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

