জাহাঙ্গীর আলম, টাঙ্গাইলভুঞাপুর মনোয়ারা মেডিকেল টেকনোলজি কলেজ এন্ড হাসপাতালের অধ্যক্ষের স্বাক্ষর জাল করে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অফিস সহকারি ও কথিত পরিচালকের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ। এ প্রতারণার ফাঁদে পরে প্রায় ৩’শতাধিক শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
জানা যায়, ২০০৪ সালে তৎকালিন শিক্ষা উপ-মন্ত্রী ২১ আগস্ট গ্রেনেট হামলার অন্যতম আসামী হিসেবে অভিযুক্ত আব্দুস সালাম পিন্টুর অনুরোধে মনোয়ারা মেডিকেল টেকনোলজি কলেজ এন্ড হাসপাতালের প্রিন্সিপাল হিসেবে নিয়োগ পান ডা. এম. এ. আওলাদ হোসেন। অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পেলেও কখনো ক্লাস বা দাপ্তরিক কাজে কলেজে আসেন না তিনি। ভ‚ঞাপুরে আব্বাস শিশু ক্লিনিক নামক তার নিজস্ব চেম্বার হতে কাজগপত্র স্বাক্ষর করে দেন। বিনিময়ে মাসিক সন্মানি দেওয়া হয় ৫’শ টাকা। আর এ সুযোগ কাজে লাগান প্রতিষ্ঠানটির অফিস সহকারি হালিমা খাতুন ও কথিত পরিচালক মিজানুর রহমান মাসুদ। কিছু কিছু কাগজপত্রে ডা. আওলাদ হোসেন স্বাক্ষর করলেও বোর্ডের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রে স্বাক্ষর জাল করে চালিয়ে দেন অফিস সহকারি হালিমা খাতুন ও শিক্ষার্থীদের নিকট অধ্যক্ষ হিসেবে পরিচিত মিজানুর রহমান মাসুদ। ২০০৮ সাল থেকে নার্সিং ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তির প্রলোভন দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করানো হয় কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পেসেন্ট কেয়ার টেকনোলজি কোর্সে। যে সনদ সরকারি বা বেসরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কাজে আসছে না। এতে যেমন ৩’শতাধিক শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তেমনি প্রতারণার ফাঁদে ফেলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রায় ৩কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
মনোয়ারা মেডিকেল টেকনোলজি কলেজ এন্ড হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. এম, এ, আওলাদ হোসেন অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি নিজেও মাসুদ এর প্রতারণার শিকার। কলেজটি প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই মাসুদ বিভিন্ন ভাবে প্রতারণা করে আসছে। পেসেন্ট কেয়ার টেকনোলজি শিক্ষার্থীদের নার্সিং বলে ভর্তি করিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বোর্ডসহ গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় মাসুদ নিজেই অধ্যক্ষ পরিচয় দিয়ে কাগজপত্রে জাল স্বাক্ষর করে। এর সহযোগী হিসেবে কাজ করে অফিস সহকারী হালিমা খাতুন।
মনোয়ারা মেডিকেল টেকনোলজি কলেজ এন্ড হাসপাতালের অফিস সহকারী হালিমা খাতুনের নিকট কলেজের বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন জবাব না দিয়ে বলেন, সবই মাসুদ স্যার জানেন।
এদিকে প্রতিষ্ঠানে একাধিকবার গিয়ে এবং মোবাইল ফোনে মিজানুর রহমান মাসুদকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. শরীফ হোসেন খান বলেন, আমার কাছে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।