উদ্ধার হওয়ার পর মাদ্রাসা ছাত্র রিফাত (১০) |
নাজমুল হাসান নিরব,স্টাফ রিপোর্টার-ফরিদপুর জেলার চরভদ্রাসন উপজেলার সদর ইউনিয়নের বালিয়া ডাংগি গ্রামের শেষ মাথায়(পদ্মার পাড়ে) সন্ধা ৬ টার দিকে রিফাত(১০) নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রকে হাত পা বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়।
পদ্মা নদীর তীরবর্তী বসবাসরত সোনা মেল্যা(৫৫) জানায়, সন্ধার সময় আমার ঘড়ের মধ্যে পাশের বাড়ির আলী খার(৫০) সাথে আলাপচারিতার সময় বাচ্চা শিশুর কান্না ও উহঃ আহঃ শব্দ শুনতে পাই।সাথে সাথে ঘড় থেকে বের হয়ে আশেপাশে খোজাখুজি করার পর নদীর পাড়ে হাত-পা ও মুখ পাগড়ি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় দেখতে পাই রিফাতকে।শুরুতে পানিতে পড়ে থাকতে দেখে পাগল মনে করলেও পরবর্তীতে আশেপাশের লোকজন ও রিফাতের নানা বাড়ির লোকজন এসে রিফাতকে উদ্ধার করা হয়।রিফাতের নানা বাড়ি ঐ এলাকায় অবস্থিত।এরপর রিফাতকে ওর মামা থানায় নিয়ে যায়।
মা ও বোনের সাথে রিফাত |
এ ব্যাপারে রিফাত জানায়,“ আসরের নামাজের পর আমি নানা বাড়ি ঘুড়তে আসি।পড়ে মাগরিবের আগে আমার খালা সুমি(১৮) আমাকে মাদ্রাসায় দিয়ে আসে।আমি সাথে সাথে মাদ্রাসার পাশে ইমরানের দোকানে বিস্কুট কেনার জন্য যাওয়ার সময় দুইজন লোক মটরসাইকেল নিয়ে এসে আমাকে উঠিয়ে নিয়ে যায়।এরপর আমার জ্ঞান ফিরলে দেখি আমি পানির মধ্যে আর আমার হাত-পা ও মুখ বান্দা” ।
এম কে ডাংগি মাদ্রাসার নুরানী বিভাগের শিক্ষক দেলোয়ার হোসাইন জানান,রিফাত আমার কাছেই পড়ে।বিকেলে ও ওর নানা বাড়ি যায় কিন্তু তারপর ওকে আমরা আর মাদ্রাসায় দেখিনি।রিফাতের সহপাঠি জুনায়েদ ও সামির একই কথা বলে।
রিফাতের খালা সুমি জানায়,আমি মেয়ে মানুষ তাই মাদ্রাসার মধ্যে ঢুকি না।রিফাতকে আমি সন্ধার আগে মাদ্রাসার সামনে দিয়ে চলে আসছি।
রিফাত পাশ্ববর্তী সদরপুর থানার চর বিষ্নপুর ইউনিয়নের চরচাঁদপুর ইসমাইল সেকের ডাংগি গ্রামের ওমান প্রবাসী সিকান্দার খাঁ ও রুমা আক্তারের বড় ছেলে।দুই-ভাইবোনের মধ্যে রিফাত বড়।রিফাতের নানা বাড়ি চরভদ্রাসন উপজেলার সদর ইউনিয়নের বালিয়া ডাংগি গ্রামের শেষ মাথায়।
রিফাতের মা রুমা আক্তার জানান,প্রায় দেড় বছর যাবৎ রিফাতকে এম কে ডাংগি মদ্রাসায় পড়তে দিয়েছি।ও মদ্রাসায় থেকেই পড়াশোনা করে।মাঝেমধ্যে আমাদের বাড়ি আবার ওর নানা বাড়ি বেড়াতে যায়।গত শনিবার ও বাড়িতে বেড়াতে আসলে রাস্তায় খেলাধুলা করতে গেলে অটো গাড়িতে করে মুখে কালো কাপড় পেচিয়ে ওকে কে বা কারা তুলে নিয়ে যায় এবং পাশ্ববর্তী কানাইরটেক বাবলা তলা এলাকায় ফেলে যায়।সেখানে অবস্থিত এক মাদ্রাসা ছাত্র ওকে রাস্তার পাশ থেকে উদ্ধার করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।তখন আমরা কেউ বিশ্বাস করিনি।মনে করেছি ও হয়তো মাদ্রাসায় না যাওয়ার জন্য মিথ্যা বলছে।কিন্তু এখন মনে হচ্ছে ঘটনা সত্যি।কিন্তু আমাদের তো কারো সাথে কোন শত্রুতা নেই।
চরভদ্রাসন থানা ইনচার্জ জানান ওর শরীরে বাধ এর দাগ পাওয়া গেছে।এবং একটি সাধারন ডায়েরী করা হয়েছে।তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।