জাহিদ হাসান,সরিষাবাড়ী(জামালপুর)প্রতিনিধিঃ সকালে ঘাঁসের ডগায় শিঁশির ভেজা মুক্তকণা জানান দিচ্ছে শীতের আগমন বার্তা। শীতের আগমনী বার্তার সাথে সাথে জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে শীতের সম্ভল লেপ-তোষক প্রস্তুতকারী কারিগরদের মাঝে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। উপজেলার লেপ-তোষক তৈরির দোকানগুলোতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। তাদের পাশাপাশি ব্যাস্ততা থেমে নেই এসকল শীতের পোষাক তৈরীতে ব্যবহৃত কাচাঁমাল ব্যবসায়ীরাও।
দিন যতই গড়াচ্ছে শীতের প্রকোপ ততই বেশি বৃদ্ধির আশংকায় উপজেলা বিভিন্ন গ্রামের মানুষ নতুন নতুন লেপ তোষক তৈরি করছে। বছরের অন্যান্ন সময় বেচাকেনা কম হলেও শীত মৌসুমে বিক্রি কয়েক গুন বেড়ে গেছে। বাজারে কম্বলের তুলনায় লেপের দাম কম হওয়ায় চাহিদা বেশি। তুলা পিটিয়ে রঙ বেরঙের কাপড়ের তৈরি লেপ-তোষকের কাভারে মুড়িয়ে সুই-সুতার ফোড়ে তৈরি করা হয় লেপ। খুব দ্রæত শীত নিবারণে উপযোগী এটি। শীতের তীব্রতা বাড়লে লেপ-তোষক তৈরি ও বিক্রি হয় বেশি। মাত্র ২-৩ মাসের শীত মৌসুমে উপজেলার শতাধিক দক্ষ কারিগর লেপ-তোষক তৈরি করে পারিশ্রমিক সঞ্চয় দিয়ে সারা বছর সংসার চালান। জানা গেছে, অধিক মুনাফা ও বেশি বিক্রির আশায় দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন কারিগর এবং ব্যবসায়ীরা। ক্রেতারাও লেপ-তোষক তৈরির জন্য ভিড় করছেন। শীতের সাথে পালা দিয়ে বায়না নিলেও যথা সময়ে সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে কারিগররা। এবার তুলার দাম একটু বেশি। কালার তুলা প্রতিকেজি ৩৫ টাকা, মিশালী তুলা ২০ টাকা, সিম্পল তুলা ৭০ টাকা, শিমুল তুলা ২৭০ টাকা ও সাদা তুলা ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন একজন কারিগর ৬ থেকে ৮ টি লেপ তৈরি করেন। মাঝারি ধরনের একটি লেপ বানাতে খরচ হয় দেড় থেকে দুই হাজার টাকা। তোষক বানাতে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা খরচ হয়। তবে তুলার প্রকারভেদে লেপ-তোষকের দাম কম-বেশি হয়। এছাড়া দিন-দিন কাচাঁমালের দাম বেশি হওয়ায় তৈরিতে খরচ বেশি হওয়ায় বিক্রয় দাম বেড়ে গেছে। পিংনা ভেংগুলা মোড়ে একটি দোকানে এসেছেন ভোজন কুমার দাস। তাকে দেখা গেল এক সাথে দুইটি লেপের জন্য বায়না দিচ্ছেন। একসাথে দুইটি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন একটি লেপ বাবা- মার জন্য অন্য একটি নিজের বলে জানালেন তিনি। শুধু লেপ নয়, তোষক, জাজিমের দিকেও নজর রয়েছে ক্রেতাদের। দড়াটানা প্রধান মোকাম হলেও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকার দোকানগুলোতে এ সময়টায় লেপ তোষক বিক্রি হয়। তবে দোকানীরা জানালেন ভিন্ন কথা পিংনা শামীম এন্ড বেডি শপের স্বত্ত¡াধিকারী মোঃ শামিম জানালেন অন্যান্য বছর এ সময়ে বায়না বেশী থাকলেও এ বছর তেমন শীত না পড়ায় প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয়টি করে লেপের অর্ডার হচ্ছে। তবে, পৌষ-মাঘ মাসের দিকে এ বিক্রি বাড়বে এমনটি আশাবাদি বিভিন্ন দোকানীরা। ক্রেতারা লেপের দোকানে ভিড় না করে রেডিমেড থাকে বলে কম্বলের দিকে ঝুঁকেছেন। এদিকে, কারিগররা ক্রেতাদের চাহিদামত নির্দিষ্ট দিনে মাল সর্বরাহ দেয়ার জন্য দিন রাত কাজ করে যাচ্ছে।