রফিকুল ইসলাম, রাজিবপুর, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :আজ কুড়িগ্রাম হানাদার মুক্ত দিবস । ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাজিত করে কুড়িগ্রামকে হানাদার মুক্ত করে স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়িয়েছিল।
মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে কুড়িগ্রাম জেলা ছিল ৮টি থানা নিয়ে গঠিত একটি মহকুমা। কুড়িগ্রাম জেলার অর্ধেক অংশ ছিল ৬নং সেক্টরে যার সেক্টর কমান্ডার ছিলেন আব্দুল হাই সরকার। আর বাকি অংশ ছিল ১১নং সেক্টররের অধীনে সেক্টর কমান্ডার ছিলেন আবু তাহের। শুধু ব্রহহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিচ্ছিন্ন রাজিবপুর ও রৌমারী উপজেলা। রাজিবপুর উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নের কিছু অংশে যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল। রৌমারী উপজেলা ছিল মুক্তাঞ্চল। রৌমারীতেই চলতো মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ। এ সময় ১১নং সেক্টররের অধীনে রাজিবপুর উপজেলার কোদালকাটিতে বীর প্রতীক তারামন বিবি সম্মুখ যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছিলেন।
১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিবাহিনীর কোম্পানি কমান্ডার আব্দুল হাই সরকারের নেতৃত্বে ৩৩৫ জন মুক্তিযোদ্ধার একটি দল বিকাল ৪টায় কুড়িগ্রাম শহরে প্রবেশ করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে টিকতে না পেরে পাকবাহিনী গুলি করতে করতে ট্রেনযোগে কুড়িগ্রাম ত্যাগ করে। এরপর মুক্তিযোদ্ধারা নতুন শহরের ওভার হেড পানির ট্যাংকের উপরে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন।
কুড়িগ্রামের ২শ ৩০ দিনের মুক্তিযুদ্ধে হাতিয়া গণহত্যা, ঠাঁটমারী গণহত্যা, নিলেরকুটি গণহত্যাসহ অসংখ্য নৃশংস হত্যাযজ্ঞের ঘটনার কথা আজও স্মরণ করে শহীদের স্বজনেরা।
১৪ নভেম্বর থেকে মুক্তিযোদ্ধারা ভারতীয় সেনাবাহিনীর ষষ্ঠ মাউন টেন ডিভিশনের সহযোগিতায় ভুরুঙ্গামারী, ২৮ নভেম্বর নাগেশ্বরী, ৩০ নভেম্বর সমগ্র উত্তর ধরলা এবং ৬ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম জেলা হানাদার মুক্ত করে।
দিবসটি পালন উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সহ বিভিন্ন সংগঠন র্যালি, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বিজয় স্তম্ভে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোছা: সুলতানা পারভীন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম টুকু, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট’র শ্যামল ভ্যেমিক সহ অনেকে।

