প্রভাবশালীর শখে তাদের বসবাস এখন খোলা আকাশের নিচে - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

রবিবার, ডিসেম্বর ০১, ২০১৯

প্রভাবশালীর শখে তাদের বসবাস এখন খোলা আকাশের নিচে


ফরিদপুর প্রতিনিধি :
ধনাঢ্য প্রভাবশালীর শখের খায়েসের কারনে শাররীক প্রতিবন্ধি ভিক্ষুক পরিবার সন্তানসন্ততি নিয়ে বসবাস করছেন এখন খোলা আকাশের নিচে। শীতের কোয়াঁশা মাখানো রাতে তাদেরকে বসবাস করতে হচ্ছে ছোট্র ছোট্র শিশুসহ পরিবার পরিজন নিয়ে একটি খোলা মাঠের খোলা আকাশের নিচে। এক খন্ড ভূমিও যে নেই তাদের যে তারা সেখানে গিয়ে থাকতে পারে। এদিকে এমন খবর দেশের ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়াতে প্রচার হলেও প্রশাসনের তরফ থেকে তাদের দেখতে যাওয়া বা তাদের কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি এখন পর্যন্ত।   

রবিবার দুপুরে সরোজমিনে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার তালমা ইউনিয়নের শাকপালদিয়া এলাকায় গিয়ে তাদের বসে থাকতে দেখা যায় ভাঙ্গনকৃত বাড়ীর ভিটেতে। 

এদিকে প্রশাসনের ভাঙ্গনের পর পরই ওই প্রভাবশালী ব্যক্তি সেখানে কাজের লোক নিয়ে ফুলের বাগানের জন্য জমি চাষ করে ফেলেছে। হয়তো পাশের পাউবোর দখলকৃত জমির মতো দুদিন পরেই বোপন করবেন ফুলের পাতাবাহারি গাছ। যেটা তিনি প্রায় ২০ শতাংশ জমি জুড়ে করেছেন লোহার বেড়া দিয়ে। 


আর এমনই হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার তালমা ইউনিয়নের শাকপালদিয়া এলাকায়। পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কুমার নদীর খালের পাশে দীর্ঘ ৩৫ বছর যাবত বসবাসকারী এক শাররীক প্রতিবন্ধি ভিক্ষুক মোজাহার সরদারের পরিবারকে ঘড়বাড়ি ভেঙ্গে উচ্ছেদ করেছে উপজেলা প্রশাসন। এদিকে তার পাশেই রয়েছে ধনাঢ্য প্রভাবশালীর প্রায় ২০ শতাংশ জমির উপর ফুলের বাগান।    

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত এই উচ্ছেদ অভিযান চালায় তারা। এসময় কোন রকম নোটিশ ছাড়াই তারা এ অভিযান চালায় বলে জানান ক্ষতিগ্রস্থরা। তবে তাদেরকে নোটিশ প্রদান করা হয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা নির্বাহী অফিসের পক্ষ থেকে।   

শাররীক প্রতিবন্ধি মোজাহার সরদার জানান, লিখিত অনুমতি নিয়ে বাপাউবো শাকপালদিয়া ১৩৮ নং মৌজার ১৬২৪ নং খতিয়ানের এস এ ৩৬৭২ ও ৩৬৬৭ দাগের মোট ৬ শতাংশ জমি বাড়ীঘর নিয়ে রয়েছি। হঠাৎ করে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে এই ঘটনা ঘটালো তারা। এখন আমার স্ত্রী, দুই পুত্র, তাদের স্ত্রী, নাতি নাতনি নিয়ে কোথায় গিয়ে দাড়ঁবো। খোলা আকাশে দুদিন থেকে অবস্থান করছি পোলাপান নিয়ে এই শীতের রাতে। 

মোজাহারের সন্তান ফারুক বলেন, এক বড়লোকের শখের কাছে আমাদের বাড়িঘর ধংস করা হলো। এখন খোলা মাঠের আমাদের ঠাঁই। তিনি বলেন, আশফাক সাহেব ফুল বাগান করবেন আমাদের থাকার জমিতে যে কারনে আমাদের ষড়যন্ত্র করে উঠিয়ে দিলো।  

আশরাফ আলী মুন্সির মোবাইলে যোগযোগ করলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সরকার ব্যবস্থা গ্রহন করেছে এটা আমার কিছু করার নেই। সব কিছু করেছে উপজেলা প্রশাসন। এখানে আমার নাম আসছে কেন বুঝলাম না।    

এ ব্যাপারে নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী(ভারপ্রাপ্ত) মো: আহসান মাহমুদ রাসেল জানান, সরকারী নির্দেশে উচ্ছেদ অভিযান চলছে। আর ওই জমিটি নিয়ে সরকারী নির্দেশনা রয়েছে যার কারনে তাদের উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। তাছাড়া তাদের কেন খোলা আকাশে থাকতে হবে তারা তো একটি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে পারে। চেয়ারম্যানসহ সকলের সাথে কথা হয়েছে তাদের ঘড় তৈরি করে দেওয়ার ব্যাপারে অন্যত্র। তিনি বলেন পানি উন্নয়ন বোর্ড তাদের সরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছে সেই চিঠি আমার কাছে রয়েছে।   

ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মামমুদ বলেন, ওই স্থানটি আমাদের পাউবো এর জায়গা। আমাদের দপ্তর থেকে তাদের থাকার অনুমতিও দিয়েছি কয়েক বছর আগে। আমি নিজেও ওখানে পরিদর্শনে গিয়েছি। সেখানে থেকে এসে আমি নিজে জেলা প্রশাসনের কাছে শাররীক প্রতিবন্ধি ভিক্ষুক বসবাস করে এমন একটি প্রতিবেদন দিয়েছিলাম। কারন তারা অসহায় একটি পরিবার বলে লিখিত দিয়েছি। হঠাৎ করে আমাদের না জানিয়ে কি কারনে তাদের বাড়িঘর ভাংচুর করা হলো তা জানিনা। তিনি স্পষ্ট করে বলেন আমাদের কোন নির্দেশনা নেই এই শাররীক প্রতিবন্ধি ভিক্ষুকের বাড়ি ভাংচুরের ব্যাপারে।

Post Top Ad

Responsive Ads Here