ফরিদপুরে করোনায় মৃত মুক্তিযোদ্ধার দাহ্য করতে কেউ এগিয়ে না আসলেও এগিয়ে আসলো পুলিশ প্রশাসন - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

শিরোনাম

Sunday, May 31, 2020

ফরিদপুরে করোনায় মৃত মুক্তিযোদ্ধার দাহ্য করতে কেউ এগিয়ে না আসলেও এগিয়ে আসলো পুলিশ প্রশাসন


সঞ্জিব দাস, ফরিদপুর :
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা আইসলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শহরের পুরাতন কালিবাড়ির সেবাইত কমলেশ চক্রবর্তী ভানু নামে এক মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু হয় রবিবার সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে। মৃত্যুর পর শহরের অম্বিকাপুর শশ্মানে করোনায় মৃত ব্যক্তির লাশ দাহ্য করতে বাধা প্রদান করে এলাকাবাসী। পরে ফরিদপুর জেলা পুলিশ গিয়ে স্থানীয়দের অবরোধ সড়িয়ে লাশ দাহ্য করতে ব্যবস্থা গ্রহন করেন নিজেরাই।  


এসময় তার লাশটি হিন্দু নিয়মে দাহ্য করার জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি। এমনকি হিন্দু ধর্মের কোন সদস্য বা পরিবারের কেউ এগিয়ে আসেনি। পরে জেলা পুলিশ সুপার মোঃ আলিমুজ্জামান এর নির্দেশে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রাশেদুল ইসলাম এর নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা ও সদর উপজেলা ইউএনও মোঃ মাসুম রেজা লাশ দাহ্য করতে এগিয়ে আসে। তাদের তত্বাবধানে মৃতের পুত্র আগুন দিয়ে মুখাগ্নি করার পর পুলিশ সদস্যরা লাশ দাহ্য করার পুরো নিয়ম মেনে লাশটি দাহ্য কার্য শুরু করে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত লাশটি শশ্মানে দাহ্য কার্য চলছিলো।  


এ বিষয়ে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রাশেদুল ইসলাম জানান, আমরা খবর পায় বীর মুক্তিযোদ্ধা কমলেশ চক্রবর্তী ভানুর লাশ দাফনে শশ্মানের সামনে বাধা প্রদান করছে স্থানীয় এলাকাবাসী। এসময় এসপি স্যারের নির্দেশে পুলিশ সদস্যদের নিয়ে গিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর করা অবরোধ সড়ানো হয়। এরপর পুলিশের সদস্যরা তার লাশটি হাসপাতাল থেকে গাড়ীতে করে নিয়ে গিয়ে লাশ দাফন শুরু করার ব্যবস্থা করা হয়। এর আগে তার রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সদর উপজেলা ইউএনও মোঃ মাসুম রেজা তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন। তিনি বলেন আমরা পুলিশ প্রশাসন থাকতে করোনায় মৃত কোন ব্যক্তির লাশ পড়ে থাকতে হবে না।   

এ বিষয়ে কোতয়ালী থানার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কর্মকর্তা মোঃ বেলাল হোসেন সত্যতা স্বীকার করে বলেন, দুঃখজনক আমরা আমাদের পুলিশ সুপার আলীমুজ্জামান বিপিএম-এর নির্দেশে এই বীর মুক্তিযোদ্ধার মরদেহ যথাযথ সম্মান জানিয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন করেছে পুলিশ।

এ বিষয়ে অম্বিকাপুর শশ্মান কমিটির সভাপতি ল²ণ দত্তের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন আমি বিষয়টি শুনেছি কিন্তু যায়নি। করোনা ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে এলাকার স্থানীয়রা লাশটি দাহ বাঁধা দিয়েছিল।  

উল্লেখ্য, শহরের পুরাতন কালিবাড়ির সেবাইত মুক্তিযোদ্ধা কমলেশ চক্রবর্তী ভানু গত ২৪ মে করোনা নিয়ে হাসপাতালে এসে ভর্তি হন। এরপর তার শ্বাসকষ্ট বেশি হলে তাকে করোনা আইসলেশন ওয়ার্ডে নিয়ে রাখা হয়। পরে তার অবস্থার উন্নত হলে তিনি নিজ থেকে ওয়ার্ডে ফিরে আসেন। গত শুক্রবার ২৯ মে সকালে তার অবস্থার আবার অবনতি হলে তাকে করোনা আইসলেশন ওর্য়াডে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিলো। আর এ চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে রবিবার সকালে তার মৃত্যু হয় বলে তিনি।

No comments: