ভ্যাকসিনের জন্য চুক্তি করে ফেলল ইউরোপের চার দেশ - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

রবিবার, জুন ১৪, ২০২০

ভ্যাকসিনের জন্য চুক্তি করে ফেলল ইউরোপের চার দেশ



সময় সংবাদত ডেস্ক//
বর্তমানে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় থাকা সম্ভাব্য করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের ৩০ কোটি ডোজ আগেভাগেই পেতে ফরমাশ দিয়ে রাখছে ইউরোপের চার দেশ জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি ও নেদারল্যান্ডস। ব্রিটিশ-সুইডিশ ওষুধ কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে চার দেশের একটি জোটের পক্ষ থেকে চুক্তিও করা হয়েছে। ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপের অন্য দেশগুলোও এই কর্মসূচিতে যোগ দিতে পারবে।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি সম্ভাব্য ভ্যাকসিনটি এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে থাকলেও গতকাল শনিবার চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভ্যাকসিন প্রস্তুত হওয়ামাত্রই জনসংখ্যা অনুসারে তা বণ্টন করা হবে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ ওই ভ্যাকসিন উৎপাদন শেষ হতে পারে বলে আশা করা যাচ্ছে।


মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এ বছরের শেষ দিকে বা আগামী বছরের শুরুতে ভ্যাকসিনের সম্ভাব্য অনুমোদন পাওয়ার পর দ্রুত তা ব্যাপক পরিমাণে উৎপাদন ও প্রস্তুত রাখতে উৎপাদন সক্ষমতার বিষয়টি চুক্তির মাধ্যমে নিশ্চিত করা প্রয়োজন ছিল।

জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেনস স্প্যান বলেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশ ইতিমধ্যে ভ্যাকসিন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ফেলেছে। তবে ইউরোপ তা করেনি। এ সমস্যা মোকাবিলায় কয়েকটি সদস্যদেশের গ্রুপ একত্রে ব্যবস্থা নিলে বাড়তি গুরুত্ব পাবে। কমিশনের সঙ্গে একত্রে আমরা আরও দ্রুত ও শক্তিশালী হয়ে ভবিষ্যতে দর-কষাকষি চালাতে পারব।’

চুক্তির বিষয়ে ইতালির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফেসবুকে এক বিবৃতিতে বলেছেন, ইউরোপের মানুষের জন্য ৪০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে।

বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ইউরোপের জনসংখ্যা ৪৪ কোটি ৭০ লাখের মতো। ৪০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন পেতে কত খরচ হচ্ছে, সে বিষয় অবশ্য সামনে আনা হয়নি।

জার্মানির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ইউরোপের চারটি দেশ মিলে একটি জোট তৈরি করেছে। তারা অন্য ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির সঙ্গেও সম্ভাব্য ভ্যাকসিন নিয়ে আলোচনা করছে। গত শুক্রবার ইউরোপিয়ান কমিশন আগাম ভ্যাকসিন কেনার চুক্তির পক্ষে সায় দেয়।

করোনাভাইরাস নিয়ে কাজ চালানো বিশ্বের ল্যাবরেটরিগুলো দ্রুত ভ্যাকসিন খুঁজে পেতে মরিয়া প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ১২ থেকে ১৮ মাস সময়সীমার মধ্যে ভ্যাকসিন আনতে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় ব্যাপক বিনিয়োগে সাহায্য করবে আগাম অর্থ পরিশোধের চুক্তিগুলো।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি ভ্যাকসিনটি বিশ্বে যে কয়েকটি ভ্যাকসিন অগ্রগামী অবস্থায় আছে, তার মধ্যে অন্যতম।

অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রধান নির্বাহী প্যাসকল সারিওট বলেন, ‘ইউরোপের লাখো মানুষকে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের অনুমোদন পাওয়ার পর তা সরবরাহ করার নিশ্চয়তা দেবে এ চুক্তি। ইউরোপের সাপ্লাই চেন দ্রুত উৎপাদন শুরু করবে এবং দ্রুত তা পাওয়ার ব্যবস্থা করবে।’

অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে সম্প্রতি যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনস, জিএভিআই ও ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স ৭০ কোটি ডোজের জন্য চুক্তি করেছে। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে আলাদা ১০০ কোটি ডোজ তৈরির জন্যও চুক্তি করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

গত এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ১৮ থেকে ৫৫ বছর বয়সী এক হাজার সুস্থ মানুষের ওপর ভ্যাকসিনটি পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। এর পরের ধাপে গত মাসে ১০ হাজার মানুষকে ভ্যাকসিনটি দেওয়া হয়েছে।

অ্যাস্ট্রাজেনেকা ছাড়াও মডার্না ও সানোফি নতুন করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দেওয়া লকডাউন তুলে নিতে দ্রুত ভ্যাকসিন আনার বিষয়টি এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে ৪ লাখ ১৭ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে এবং ৭৫ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে।


১৪-০৬-২০২০ (AT)

Post Top Ad

Responsive Ads Here