কৃষকের সন্তানের হাত ধরে তৈরি হচ্ছে যে করোনা ভ্যাকসিন! - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

শুক্রবার, জুলাই ০৩, ২০২০

কৃষকের সন্তানের হাত ধরে তৈরি হচ্ছে যে করোনা ভ্যাকসিন!


সময় সংবাদ ডেস্ক//
গোটা বিশ্বের ত্রাস করোনাভাইরাসের টিকা আবিষ্কারে নয়া ইতিহাস গড়ার পথে ভারত। যার ফলে বিশ্বজুড়ে করোনার প্রতিষেধক আবিষ্কারের দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে গেলেন দেশটির বিজ্ঞানীরা।

চলতি জুলাই মাসেই ‘ভারত বায়োটেকের’ তৈরি ‘কোভ্যাক্সিন’ টিকা মানবদেহে ট্রায়াল শুরু হচ্ছে। মোট দু দফায় চলবে এই পরীক্ষা। ছাড়পত্র মিলেছে দেশটির ডিসিজিআই এবং কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের।

হায়দরাবাদের ওষুধ প্রস্তুকারক সংস্থা ভারত বায়োটেককে এই কাজে যৌথভাবে সহায়তা করেছে আইসিএমআর। গত সোমবার করোনার টিকা আবিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন ভারত বায়োটেকের চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড. কৃষ্ণ ইল্লা।

কিন্তু কে এই ড. কৃষ্ণ ইল্লা? যার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল হিসেবে করোনার প্রতিষেধক আবিষ্কারে আশার আলো দেখছে ভারত। তিনি আর কেউ নন তামিলনাড়ুর তিরুথানির বাসিন্দা এক মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারের সন্তান তিনি। ছোটোবেলা থেকেই পড়াশুনোর প্রতি আগ্রহী এবং মেধাবী ছিলেন তিনি। ফলে অভাব অনটনের সংসারে জন্মেও নিজের ইচ্ছায় আজ তিনি এতদূর পৌঁছতে পেরেছেন। তার সাফল্যে আজ গর্বিত গোটা ভারত।

তিনি জানিয়েছেন, পড়াশোনা শেষ করে আর পাঁচটা সন্তানের মতো তারও ইচ্ছা ছিল বাবার কাজে সহযোগিতা করার। কীভাবে জমিতে ফলন আরও বাড়ানো যায়, ফসলের যতœ নেওয়া প্রভৃতি বিষয়েই তার ছোটো থেকেই আগ্রহ ছিল। পড়াশোনাও করেছিলেন কৃষিবিদ্যা নিয়ে। তবে বিধাতা হয়তো চাননি তিনি কৃষিবিদ হোন। ফলে সংসারে চাপে কলেজ শেষের পর একটি ওষুধ প্রস্তুকারক সংস্থায় সহকারী কর্মী হিসেবে নিযুক্ত হন। সেখানে অবশ্য তাকে কৃষি বিষয়ক জিনিস দেখভাল করতে হতো।

তিনি আরও জানিয়েছেন, ওই কোম্পানিতে কাজ করতে করতে স্কলারশিপ পান তিনি। এরপর উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি বিদেশে চলে যান।

আমেরিকা গিয়ে সেখানকার হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি প্রথমে মাস্টার্স এবং ইউনিভার্সিটি অফ উইসকন-ম্যাডিসন থেকে পিএচইডি শেষ করেন। এরপর ১৯৯৫ সালে তিনি নিজের দেশে ফিরে আসেন। যদিও সেভাবে ভারতে আসার কোনও ইচ্ছায় ছিল না তার।

এই বিষয়ে তিনি আরও বলেন, “দেশে ফেরার আগে মা আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিল যে এরপর আমি কী করব? আমার কী ইচ্ছা।”

তিনি জানান, শেষ পর্যন্ত মায়ের ইচ্ছাতেই দেশে ফেরা তার। দেশে ফিরে নতুন কিছু আবিষ্কারের নেশায় মত্ত হয়ে যান তিনি।জানা গেছে, সেই সময় দেশে হেপাটাইটিস ভাইরাস ঘটিত রোগের টিকার খুব চাহিদা ছিল।

ঠিক সেই সময় তিনি হায়দরাবাদে একটি ল্যাব তৈরি করে সেখানেই মেডিকেলের কাজকর্ম নিয়ে আলোচনা গবেষণা চলত। আর সেখান থেকেই পথচলা শুরু ‘ভারত বায়োটেক’ কোম্পানির। এরপর তাদের কোম্পানি হেপাটাইটিস রোগের টিকা আবিষ্কারের প্রস্তাব দেয় সরকারকে। ভ্যাকসিন আবিষ্কারের খরচ হিসেবে ধরা হয়েছিল ১২.৫ কোটি, যা পরে বাজারজাত করার সময় ৩৫ থেকে ৪০ ডলারে বিক্রি করা হয়েছিল।



যদিও সেইসময় এতগুলো টাকা একসঙ্গে জোগার করা খুব একটা সহজ কাজ ছিল না। কোনও ব্যাংক ঋণ দিতেও চাইছিল না। এই অবস্থায় ভারত বায়োটেকের পাশে এসে দাঁড়ায় আইডিবিআই ব্যাংক। তারা ২ কোটি রুপি দিয়ে ভারত বায়োটেককে হেপাটাইটিস এর টিকা আবিষ্কারে সাহায্য করে।

আর এর প্রায় চার বছর পর হেপাটাইটিসের টিকা আবিষ্কারে সফলতা লাভ করে ভারত বায়োটেক কোম্পানি, যা ১৯৯৯ সালে দেশটির তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এপিজে আবদুল কালামের হাত ধরে প্রথম বাজারে আসে।

এরপর সারাদেশে প্রায় ৩৫মিলিয়ন ওষুধ সরবরাহ করা হয় এবং ধীরে-ধীরে পৃথিবীর প্রায় ৬৫টি দেশে হেপাটাইটিস রোগের টিকা রফতানি করা হয়। যার পরিমাণ ছিল প্রায় ৩৫০ থেকে ৪০০মিলিয়ন ডোজ। সূত্র: কলকাতা২৪

Post Top Ad

Responsive Ads Here