ফরিদপুরের আওয়ামীলীগে তৃনমূলের চাওয়া - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

বুধবার, জুলাই ০৮, ২০২০

ফরিদপুরের আওয়ামীলীগে তৃনমূলের চাওয়া


ফরিদপুর প্রতিনিধি :

ফরিদপুর জেলা আওয়ামীলীগ গঠিত হওয়ার পর থেকেই দেশের স্বাধীনতা আন্দোলন সহ বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে রেখেছে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা। সেই থেকে আওয়ামীলীগ সংগঠনটি জেলার রাজনীতি হয়ে উঠে এক ইতিহাসের নাম। যার নেতৃত্বে ছিলেন প্রয়াত ইমাম উদ্দিন আহমেদ, কে এম নরুনবী, এ্যাড. মোশারফ হোসেন প্রমূখ। তারা জীবিত থাকতেই দলের হাল ধরেন তাদের উত্তরসূরি বিপুল ঘোষ, প্রয়াত হাসিবুল হাসান লাবলু ও প্রয়াত আশরাফুজ্জামান মজনু। এই ত্রিমুখির নেতৃত্বে জেলা আওয়ামীলীগ চলতে থাকে ইস্পাত কঠিন ঐক্যে একত্রিত হয়ে। তবে তাদের ভিতর দলগত মতানৈক্য থাকলেও রাজনীতিতে বাইরের বিপদ মোকাবেলায় নেতাকর্মিদের ব্যাপারে তারা ছিলেন এক সত্ত্বা। 

আর সেই আওয়ামীলীগ বিগত ২০০৮ সালের নির্বাচনে আসার পর থেকে তৃনমূলের সেই নেতাদের দল থেকে দূর করে দেয়া হয়। শুরু হয় এক এইসব নেতাদের যুদ্ধ করে বেচেঁ থাকার লড়াই। সেই যুদ্ধ করতে গিয়ে আওয়ামীলীগকে হারাতে হয়েছে দূদিনের পরীক্ষিত দুই নেতা হাসিবুল হাসান লাভলু ও আশরাফুজ্জামান মজনুকে। তারা বিদায় নিলে একা হয়ে পড়েন দীর্ঘদিনের দূদিনের পরীক্ষিত নেতা বিপুল ঘোষ। তাকেও বিভিন্ন ভাবে হেনস্তা করে ঘরবন্দি করে রাখা হয়। জেলার রাজনীতি হয়ে উঠে এক অর্থবিত্ত ও বিভিন্ন দল থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীদের দখলে। পাল্টে যেতে থাকে রাজনীতির ধারা। শুরু হয় পদ দখল, অফিস দখল, টেন্ডারবাজি সহ নানা র্কীতি ঘটনা। আর এইসব কারনে দল থেকে সড়ে যেতে থাকে দূদিনের পরীক্ষিত মাঠের সেই সব পরীক্ষিত নেতা ও কর্মিরা। এর ভিতর অনেকে হয়ে যায় গৃহবন্দি ও ফরিদপুর ছাড়া। এসময় যারাই একটু প্রতিবাদ করতে গেছেন তারাই হয়েছেন হামলা, মামলা ও নিার্যতনের স্বীকার।

এসব বিষয়ে কথা হয় অম্বিকাপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি মোঃ কুদ্দুসুর রহমানের সাথে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর যারা প্রকৃত আওয়ামীলীগ তাদের নেতৃত্বে চলুক জেলা আওয়ামীলীগ। এতদিন ফরিদপুরের আওয়ামীলীগ প্রকৃত পরীক্ষিতদের হাতে ছিলোনা। যে কারনে আমাদের মতো দূদিনের নেতাদের বের করে দেয়া হয়েছিলো দল থেকে। আওয়ামীলীগ হয়ে পড়েছিলো অনুপবেশকারী, হাইব্রীড ও অর্থলোভিদের হাতে বন্দি। সেই দূর অবস্থা থেকে মানবতার নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফরিদপুর জেলা আওয়ামীলীগকে গোছানোর কাজে হাত দিয়েছেন। এই জন্য আমরা ফরিদপুরের আওয়ামীলীগের নেতাকর্মিরা ধন্যবাদ জানাই। তিনি দলের আগামী দিনের প্রত্যাশা জানিয়ে বলেন, অতিদ্রæত জেলা থেকে তৃনমূল পর্যন্ত সকল কমিটি ভেঙ্গে অনুপ্রবেশকারী মুক্ত করে ত্যাগী ও দূদিনের পরীক্ষিত নেতাদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করতে হবে।

১নং ইশানগোপালপুর ইউনিয়নের সাবেক সাধারন সম্পাদক মোঃ জামাল মিয়া বলেন, ইউনিয়ন থেকে জেলার রাজনীতি চলে গিয়েছিলো কিছু অনুপ্রবেশকারী ও লুটেরা হাইব্রীডদের দখলে। যে কারনে আমাদের মতো দূদিনের নেতাদের স্থান হয়নি দলে। এই মূহূর্তে প্রত্যাশা করি ত্যাগী ও দূদিনের পরীক্ষিত নেতাদের সমন্বয়ে দলকে ঢেলে সাজাতে হবে পুনরায়। আর সেটা যদি করা যায় তাহলেই এই ফরিদপুর আওয়ামীলীগ হবে আবার সক্রিয়। একই সাথে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত শক্তিশালী হবে বলে আমি মনে করি।

জেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক এ্যাড. অনিমেষ রায় বলেন, দলের সভানেত্রীর নির্দেশে দল থেকে অনুপ্রবেশকারীদের বের করে দেওয়ার যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তাকে আমি তাকে স্বাগত জানাই। এই চলমান প্রক্রিয়া সামানের দিনেও অব্যাহত থাকবে সেই কামনা করেন তিনি।     

এদিকে তৃনমূলেল চাওয়াকে প্রধান্য দিয়ে ফরিদপুর জেলা আওয়ামীলীগের দলের দূদিনের পরীক্ষিত নেতারা আবারো দলকে গোছানোর কাজে হাত দিয়েছেন। দল ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিগত দশ বছর এই সব নেতারা দল থেকে বিভিন্ন কারনে সড়ে গিয়ে ছিলেন অভিমানে। ঝিমিয়ে পড়া ফরিদপুর আওয়ামীলীগকে দলের হাইকমান্ড গোছানোর কাজে হাত দিলে তারা আবার ফিরে এসে কাজ শুরু করেছেন। করোনা পরিস্থিতির কারনে বড় ধরনের সভা সমাবেশ না করতে পারলেও তারা এরই ভিতর নিজেরা ছোট ছোট করে বসে তাদের নীতি নির্ধারন ঠিক করেছেন।   

আওয়ামীলীগের একটি সূত্র জানায়, জেলার নেতারা ও কেন্দ্রীয় নেতারা নিজ দল আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকা সত্তে¡ও নির্যাতন, হামলা-মামলার স্বীকার হয়েছেন অনেকে। অনেক নেতাকে স্বেচ্ছা নির্বাসনে অবরুদ্ধ করে রাজনীতি করা থেকে বিরত থাকতে বাধ্য করা হয়। অপেক্ষায় ছিলেন একদিন সময় আসবে। সেই পরিবেশ তৈরি হওয়ায় এখন আবার সেই সকল দূদিনের আওয়ামীলীগ নেতারা রাজনীতিতে চাঙ্গা হয়েছেন। তারা এখন দলকে অনুপ্রবেশ মুক্ত করে সামনের দিকে টেনে নিয়ে যেতে চান। বিগত দশ বছরে যে ভুল সেই ভুল তারা না করে দলকে সব কিছুর উর্দ্ধে নিয়ে কাজ করতে তারা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

এবিষয়ে ফরিদপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন বলেন, দলকে অনুপ্রবেশ মুক্ত করে দলের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনা হবে। সেই লক্ষে আমরা কাজ করছি। এরই মাঝে জেলার নেতারা বসে করনীয় নির্ধারনে কাজ শুরু করেছি ছোট্র ছোট্র পরিসরে। তবে করোনা পরিস্থিতির কারনে কোন বড় ধরনের লোক সমাগম আমরা করতে পারছি না। তবে সামনে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে সে ধরনের সম্ভবনা রয়েছে বলেও তিনি জানান।   

জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক নির্বাহী সদস্য বিপুল ঘোষ বলেন, আজ আমাদের প্রানের নেত্রী মানবতার জননী দল থেকে লুটেরা হাইব্রীড অনুপ্রবেশকারীদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিচ্ছেন জেলায়। আমরা এই দিনটির জন্যই এতো দিন অপেক্ষায় ছিলাম। আমি এর জন্য আমাদের প্রানের নেত্রী মানবতার জননী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশ যেমন এগিয়ে যাচ্ছে তেমনি ফরিদপুর আবার জেগে উঠবে তৃনমূলের পরীক্ষিত আওয়ামীলীগ নেতাকর্মিদের গতি ধারায়।

ফরিদপুরের আওয়ামীলীগকে পূর্নগঠন করে চাঙ্গা করার জন্য এবং অনুপ্রবেশকারীদের দল থেকে সরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহন করায় মাঠ পর্যায়ের দলের নেতারা দলের সভানেত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। একই সাথে সুবিধাভোগীরা যাতে দলে আর কোনোদিনও প্রবেশ করতে না পারে সেই ব্যাপারে দলের হাইকমান্ড সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানিয়েছে ফরিদপুরের ত্যাগী ও পরিক্ষিত আওয়ামীলীগের নেতাকর্মিরা।



Post Top Ad

Responsive Ads Here