হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার গরুর হাল ! - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

শনিবার, জুলাই ২১, ২০১৮

হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার গরুর হাল !

কৃষি সম্পাদক-
বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। এ দেশে প্রায় ৮০ ভাগ লোক কৃষক। আর কৃষি কাজে তারা কামারের তৈরী এক টুকরো লেহার ফাল ও কাঠ মিস্ত্রির হাতে তৈরী কাঠের লাঙ্গল,জোয়াল,আর বাশেঁর তৈরী মই ব্যবহার করে জমির চাষাবাদ করতেন। 
কৃষি কাজে ব্যবহৃত এ সব সল্প মূল্যের কৃষি উপকরণ এবং গরু দিয়ে হাল চাষ করে তারা যুগের পর যুগ ধরে ফসল ফলিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে  আসছেন। এতে করে একদিকে যেমন পরিবেশে রক্ষা হয় অন্যদিকে কৃষকের অর্থ ব্যায় হয় কম। লাঙ্গল,জোয়াল,আর বাশেঁর মই ছাড়া হাল চাষীরা অতি গুরুত্বপূর্ণ যে দুটি জিনিস ব্যবহার করেন তা হলো- গোমাই আর পান্টি(ঠোনা)। ফসলের পাশের কিংবা ঘাস পূর্ণ জমিতে চাষের সময় গরু যাতে কোন খদ্য খেতে না পারে, সে দিকে লক্ষ রেখে পাট, বেত,বাঁশের কঞ্চি অথবা লতা জাতীয় একধরণের গাছ দিয়ে তৈরী গোমাই গরুর মুখে বেঁধে দেওয়া হয়। আর জোরে হাল চাষের জন্য ব্যবহার করা হয় পান্টি। এটি খুব বেশী দিনের কথা নয় প্রায় ২৫ বছর আগে এসব গরুর হালে লাঙ্গল জোয়াল আর মই গ্রামে গঞ্জের জমিতে হরহামেশাই দেখা যেত।
হাল চাষীদের অনেকে নিজের জমিতে হাল চাষ করার পাশাপাশি অন্যের জমিতে চাষাবাদ করে পারিশ্রমিক হিসেবে কিছু অর্থ উপার্জন করতেন।
তারা হাজারো কর্মব্যস্ততার মাঝে কখনো কখনো ফুরফুরে আনন্দে মনের সুখে রংপুর অঞ্চলের ভাওয়াইয়া গান গেয়ে গেয়ে জমি চাষ চাষ দিত।  ভোর রাত থেকে শুরু করে প্রায় দুপুর পর্যন্ত জমিতে হাল চাষ করতেন তারা। চাষিরা জমিতে হাল নিয়ে আসার পূর্বে চিড়া গুড় অথবা মুড়ি-মুড়কি দিয়ে হালকা জল খাবার খেয়ে নিতেন।
পরে একটানা হট্ হট্ ডাইনে যা, বায়ে যা, বস্ বস্ আর উঠ্ উঠ্ করে হাল চাঁষ দিতেন। যখন ক্লান্তি আসত, তখন সূর্য প্রায় ,মাথার উপর খাড়া হয়ে উঠত। এসময় চাষীরা সকালের নাস্তার জন্য হালচাষ থেকে বিরত রেখে জমির আইলের ওপর বসতেন। তাদের নাস্তার ধরণটাও ছিলো ঐতিহ্যবাহী । একথালা পান্তা ভাতের সাথে কাঁচা অথবা শুকনো মরিচ,সর্ষের খাঁটি তেল আর আলু ভর্তা।
কিন্তু বর্তমান সময়ে আস্তে আস্তে এই হাল চাষের ঐতিয্য ধ্বংষ হয়ে যাচ্ছে।আধুনিকতার সাথে সাথে উন্নতি হয়েছে কৃষি ব্যাবস্থাপনা ও যন্ত্রপাতির।এখন চাষাবাদ করতে ট্রাক্টর বা উন্নত যন্ত্রপাতি ব্যাবহার করা হয়।দেখা যায় না সেই গ্রামেন মনমুগ্ধকর রুপ।কবির সেই কবিতা আজ আর কেউ পড়ে না
“সব সাধকের বড় সাধক আমার দেশের চাঁষা”

Post Top Ad

Responsive Ads Here