মেহের আমজাদ,মেহেরপুর
মেহেরপুরে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালন করা হয়েছে বাংলা নববর্ষ। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এ উপলক্ষে গতকাল রোববার সকাল ৭ টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্ত¡র থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়।শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন শেষে ডঃ শহীদ সামসুজ্জোহা পার্কে গিয়ে শেষ হয়। মঙ্গল শোভাযাত্রায় মেহেরপুর জেলা প্রশাসক মোঃ আতাউল গনি, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাাফিজুর রহমানম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ গোলাম রসুল,পৌর মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন,সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাড.ইয়ারুল ইসলাম,পিপি পল্লব ভট্টাচার্য, জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক অ্যাড. মিয়াজান আলী সহ মঙ্গল শোভাযাত্রায় জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,বিভিন্ন সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, সরকারী-বেসরকারি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ অংশ নেয়। এছাড়াও মেহেরপুরে পৃথকভাবে বিভিন্ন রাজনৈতিক,সামজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শোভাযাত্রা,পান্তা উৎসব ও লোকজ সাংস্কৃতিক উৎসবসহ দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বাংলা নববর্ষকে বরণ উপলক্ষে মেহেরপুর পৌরসভার আয়োজনে গতকাল রোববার পৌরসভা প্রঙ্গণে পান্তা উৎসবের আয়োজন করা হয়। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন,জেলা প্রশাসক মোঃ আতাউল গনি, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান,জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম রসুল সহ বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার মানুষ পান্তা উৎসবে অংশ গ্রহন করেন। পৌর মেয়র মাহাফুজুর রহমান রিটন অতিথিদের স্বাগত জানান।
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে মেহেরপুর সরকারী কলেজের আয়োজনে বর্নাঢ্য শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
গতকাল রবিবার সকালে সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসার সফিউল ইসলাম সরদারের নেতৃত্বে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে শোভাযাত্রা বেড় হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে। শোভাযাত্রায় পালকি বর, বধূ, বাউল, কবি সহ গ্রাম বাংলার বিভিন্ন সাজে সাজানো হয়। কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এ শোভাযাত্রায় অংশ গ্রহন করে। পরে কলেজ ক্যাম্পাসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শোভাযাত্রার আগে ক্যাম্পাসে পান্তা উৎসবের আয়োজন করা হয়।
মেহেরপুর জেলা পুলিশ ব্যতিক্রম ও মনমুগ্ধকর আয়োজনে পালন করেছে নববর্ষ। ডিবি পুলিশের ৫ সদস্য বাহারী রং এর পাঞ্জাবি ও সাদা রং এর লুঙ্গি, হাতে একতারা আর ডুগি। এক দারোগা ঘোডাই চড়ে অপেক্ষা এবং পুলিশ সুপার তার স্ত্রী সন্তান নিয়ে গরুর গাড়ি চড়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন।
গতকাল রোববার এটি ছিল ১লা বৈশাখের সকালে পুলিশ লাইনের গেটের সামনের দৃশ্য্য। ভিতরে আদি পল্লী গ্রামের চিত্র তুলে ধরে সেখানে চাটায়ের বেড়ার ঘর গোয়ালে গরু। বাড়ির অঙ্গিণায় সাপুড়ের সাপ খেলা প্রদর্শন। মাঠে ঘুড়ি ওঠানো আর বাংলার লাঠি খেলা। সব মিলিয়ে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বাংলা নববর্ষ বরনের চমৎকার আয়োজন। ১ লা বৈশাখ উপলক্ষে পুলিশ সদস্যরা এভারেই পালন করলো নববর্ষ।
এছাড়াও বাংলা গান আর পান্তা উৎসবতো ছিলই। পুলিশ সুপার থেকে শুরু করে পরিদর্শক পর্যন্ত এক রং এর পাঞ্জাবি, নারী পুলিশরাও এক রং এর বাহারী শাড়ি অনুষ্ঠানকে আরো আকর্ষনীয় করে তোলে। বড় বড় বিষধর সাপ আর গ্রাম বাংলার অপরুপ দৃশ্য দেখে মুদ্ধ হন অতিথিগন। অতিথিদের মধ্যে জন প্রশাসন প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন, মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য সায়েদুজ্জামান খোকন, জেলা প্রশাসক মোঃ আতাউল গনি, পৌর মেয়র মাহাফুজুর রহমান রিটন সহ বিপুল পরিমান মানুষ অনুষ্ঠান দেখে মুদ্ধ হন। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান তাঁর পতœী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম ও তার পতœী অতিথিদের স্বাগত জানান।
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে মেহেরপুর ক্রীড়া সংস্থার উদ্যোগে লাঠি খেলার আয়োজন করা হয়।
গতকাল রবিবার দুপুরের দিকে শহীদ সামসুজ্জোহা নগর উদ্যানে সদর উপজেলার আমদহ গ্রামের লাঠিদল লাঠি খেলা প্রদর্শন করে। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য আনোয়ারুল হক শাহী লাঠি খেলার উদ্বোধন করেন।
মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে প্রীতি ক্রিকেট খেলার আয়োজন করা হয়। জেলা দায়রা জজ আদালত একাদশ ও চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রিট আদালতের মধ্যকার খেলায় জেলা দায়রা জজ আদালত একাদশ জয়লাভ করে।
গতকাল রবিবার মেহেরপুর ষ্টেডিয়াম মাঠে অনুষ্ঠিত খেলায় জেলা দায়রা জজ আদালত একাদশ ২৭ রানে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রিট আদালতকে পরাজিত করে। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে জেলা দায়রা জজ আদালত একাদশ ১২ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮১ রান করে। দলের পক্ষে সাইদুর ৩৩ বলে ১০২ রান করে।
জবাবে খেলতে নেমে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রিট আদালত ১৫৪ রান সংগ্রহ করে। দলের পক্ষে জব্বার ৫১ রান করে। সাইদুর ম্যান অব দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন।
No comments:
Post a Comment